No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    শীতে দু-চারদিনের জন্য

    শীতে দু-চারদিনের জন্য

    Story image

    শীতকাল মানেই বেড়াতে যাওয়া। কিন্তু হাতে বেশি সময় নেই। কিন্তু চেনা জায়গায় যেতে চাইছেন না। তবে চলুন একদিন বা দুদিনের জন্য নির্জনে প্রকৃতি পরিবেশের মধ্যে ঘুরে আসি কম খরচে।   

    চুপি (পূর্ব বর্ধমান)
    সারাদিন নৌকায় চড়ে হ্রদের জলে ঘুরে বেড়ানো আর পাখি দেখা। নানারকমের দেশি- বিদেশি পাখির ভিড়। তবে এখানে ঘুরতে হবে নিঃশব্দে কারণ যাতে পাখিদের অসুবিধা না হয়। বর্ধমানের এই অংশে গঙ্গানদীর অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ তৈরি হয়েছে। দুই থেকে তিন কিমি জুড়ে। হ্রদের জল ঘন নীল। নির্জনের স্তব্ধতা ভেঙে খানখান হয়ে যায় পাখির কলকাকলিতে। চুপিতে থাকার ব্যবস্থা নেই। ঘোরার শেষে নতুনগুড়ের মিষ্টি খেয়ে দেখুন। রাতে চলে যেতে পারেন কৃষ্ণনগর অথবা মায়াপুর ও নবদ্বীপ।

    কীভাবে যাবেন: বর্ধমান যাওয়ার মেন লাইনের ট্রেন ধরে পূর্বস্থলী স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে রিকশা করে যেতে হবে চুপি। 

    গাড়ুচিরা (উত্তর বঙ্গ)
    গাড়ুচিরা যাওয়ার জন্য হাতে রাখুন চার-থেকে পাঁচদিন। 
    এখানে পাহাড় এবং জঙ্গল দুটিই উপভোগ করতে পারবেন। একপাড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ভুটান পাহাড়। আর অন্য পাড়ে শাল, সেগুনে মোড়া বান্দপানি জঙ্গল। তবে গাড়ুচিরা বেড়াতে আসার আসল মজা হাতির দেখা পাওয়া। এই পথেই নেপাল থেকে হাতির দল তরাইয়ের জঙ্গলে প্রবেশপথ করে। তাই গাড়ুচিরাকে এলিফ্যান্ট করিডোরও বলা হয়। রাতে ওয়াচারটাওয়ার থেকে হাতির পাল দেখতে বসলে ঘড়ির কাটা যেন ওখানেই থমকে দাঁড়ায়। জঙ্গলের ভিতরে ঘোরার ইচ্ছে থাকলে টুর গাইডের সঙ্গে বেড়িয়ে শখ মিটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা সুপ্তি ও রেতি নদী পরিবেশকে আরও মোহময় করে তুলেছে। গাড়ুচিরা থেকে মাত্র ৮০কিমি দূরে আলিপুরদুয়ার। তাই এখানে একদিন এখানে কাটিয়ে পরদিন আলিপুরদুয়ার থেকেও ঘুরে আসা যেতে পারে।

    কীভাবে যাবেন: কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে দলগাঁও নামতে হবে। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে গাড়ুচিরা। আলিপুরদুয়ার থেকেও গাড়ুচিরার যাওয়া যেতে পারে। অথবা ট্রেনে বা বাসে করে নিউজলপাইগুড়ি নেমে যেতে হবে বীরপাড়া। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে গন্তব্যে।

    থাকার জায়গা: এখানে পশ্চিমবঙ্গ ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের (যোগাযোগ আগেই দেওয়া হয়েছে) দুটি বাংলো রয়েছে। তাদেরই উদ্যোগে এখানে গড়ে উঠেছে ইকো ভিলেজ। জঙ্গলের মধ্যে বাংলোতে দু'টো দিন কাটাতে মন্দ লাগবে না। এখানে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। বর্ষাকালে বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়েই গাড়ুচিরায় ঘুরতে যেতে পারেন।

    ভালকিমাচান(পূর্ব বর্ধমান)
    ভালকির জঙ্গল। নীল আকাশের নীচে শাল, পিয়ালের রাজ্য। শীতে সোনাঝুরি ফুল। জঙ্গলের পেট চিরে এঁকে বেঁকে চলে গেছে ছোট্ট ছোট্ট গ্রামে। নামেই গ্রাম। মানুষ হাতে গোনা। কয়েকটি ঘর নিয়ে গ্রাম। ভীষণ শান্ত। পর্যটক ছাড়া কিন্তু এখানকার সৌন্দর্য দেখার নেই কেউ। সারা দিনে দু-একটা ইঞ্জিন ভ্যানের শব্দ ছাড়া কোলাহলহীন, মনুষ্যবিহীন অন্য জগত।

    কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে বোলপুরগামী প্রায় সব ট্রেনই গুসকরা স্টেশন ছুঁয়ে যায়। গুসকরা থেকে ভালকি মাত্র ২২ কিমি রাস্তা। স্টেশন থেকে ভাড়া গাড়ি। সড়কপথে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বর্ধমানের পারাজ থেকে ডান দিকে অভিরামপুর হয়ে সোজা ভালকি মাচান। পারাজ থেকে মাত্র ১৬ কিমি।

    কোথায় থাকবেন: ভালকির জঙ্গলে থাকার জন্য মাত্র একটিই হোটেল। নাম 'অরণ্যসুন্দরী'। পাকা রাস্তার কাছাকাছি। এ অরণ্যে আর কোনও বাড়িও নেই। জঙ্গলের মধ্যে ১০-১৫টি বাড়ি নিয়ে দূরে দূরে একেকটি গ্রাম। হোটেল থেকে দেখাও যায় না। সূর্য ডুবে গেলে যে যার মতো। ধামসার আওয়াজ ভেসে আসে বহুদূর থেকে। আগে থেকে বলে রাখলে নাচের দলও পাওয়া যায়। হোটেলে বসেই দেখা যায় ভল্লু রাজার দূর্গ। দূর্গের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়া রাত। হোটেল থেকে বেরিয়ে দু'পা এগিয়ে ডানদিকে বড় জলাশয়। বোটিং করা যায়। জলাশয়কে ঘিরে গড়ে উঠেছে সুন্দর উদ্যান।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @