নেতাজির ১২৫ বছর, অভিনব উদ্যোগ নিল জার্মানির ‘সম্প্রীতি’

আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের তোড়জোড় করছে ভারত। এবং সম্পূর্ণ যথাযথভাবেই ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরও একইসঙ্গে উদযাপিত হতে চলেছে। সেই ভারতবর্ষ, যার স্বাধীনতা ছিল নেতাজির জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য। গত কয়েক বছরে নেতাজি সংক্রান্ত বহু গোপন ফাইল প্রকাশ্যে এসেছে, যা থেকে আমরা পেয়েছি একাধিক তথ্য, যেমন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ওপর নেতাজির প্রভাব সম্পর্কে ক্লেমেন্ট অ্যাটলির মতামত। যতবার এই ধরনের তথ্য সামনে এসেছে, ততবার আমরা নেতাজির জীবন এবং উত্তরাধিকার নিয়ে নতুন করে গভীরভাবে ভাবার সুযোগ পেয়েছি। বিশ্বের যুব জনসংখ্যার তালিকায় উচ্চ স্থানাধিকারী ভারতে যখন বেড়ে উঠছেন ভবিষ্যতের বহু অগ্রগণ্য চিন্তাবিদ, তখন নেতাজির ভাবনাচিন্তা আমাদের নতুন করে দেশ গড়ার পথ দেখায়।
সংস্থা হিসেবে সম্প্রীতি এই ঐতিহাসিক মাইলফলকের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত। বিশেষ করে যেখানে তাঁদের এই প্রয়াস নেতাজির অন্তর এবং বাহির, উভয় জগতের সঙ্গেই জড়িত। তাঁর ‘কর্মভূমি’ হিসেবে যেমন নেতাজির জীবনে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে জার্মানি, তেমনই এদেশেই তিনি বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন এমিলি শেঙ্কেল-এর সঙ্গে। ভারত থেকে বিশাল যাত্রাপথ পেরিয়ে এসে রেডিও বার্লিনে তাঁর প্রথম ভাষণ, হামবুর্গে প্রথমবার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, এইসবের মাধ্যমেই ১৯৪০-এর দশকের গোড়ায় বিদেশের মাটিতে বসে স্বাধীন ভারতের বীজ বপন করছিলেন নেতাজি। অন্যদিকে, তাঁর এবং এমিলির কন্যা অনিতা বসু পাফ-এর মাধ্যমে এই বিদেশের মাটিতেই আজ বসবাস করছে বসু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম।
জার্মানির বাঙালি সংস্থা সম্প্রীতি তাঁর উত্তরাধিকারকে শ্রদ্ধা জানানোর, এবং সে সম্পর্কে জার্মানি তথা বৃহত্তর ইউরোপকে সচেতন করে তোলার সামান্য প্রচেষ্টা করছে মাত্র। এই উদ্যোগে স্বয়ং ডাঃ অনিতা বসু পাফ এবং তাঁর জীবনসঙ্গী ডাঃ মার্টিন পাফ-কে পাশে পেয়ে তাঁরা সম্মানিত বোধ করছেন।
আগামী এক বছর ধরে নেতাজীর জীবন, দর্শন, এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত একাধিক আলোচনার আয়োজন করেছেন তাঁরা। ডাঃ অনিতা বসু পাফ-এর চিন্তাধারা অনুসরণে রচিত এই আলোচনাগুলির শীর্ষক হল ‘দ্য অনিতা ডায়ালগস’, এবং প্রতি মাসেই নেতাজির জীবনের বিশেষ কিছু দিনকে কেন্দ্র করে এই সংস্থা পরিবেশন করবে একটি করে পর্ব। কখনও কখনও আলোচনায় যোগ দেবেন কিছু বিশেষ অতিথি, তাঁরা পরিবারের আত্মীয়ও হতে পারেন, অথবা হতে পারেন কোনও উৎসাহী গবেষক। সম্প্রীতির প্রতিষ্ঠাতা তথা বর্তমান সভাপতি হিসেবে শৈবাল গিরি থাকবেন সঞ্চালকের ভূমিকায়।
সম্প্রীতি এই সিরিজের প্রথম পর্ব সম্প্রচার করে ৭ ফেব্রুয়ারি, তাদের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে। সম্প্রীতির সকল সদস্যের কাছেই আলোচনায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ ই-মেল মারফত পৌঁছে যাবে যথাসময়ে। পরবর্তী মাসিক আলোচনার তারিখ নির্ধারিত হবে সেই মাসের গোড়াতেই, এবং দ্বাদশ তথা অন্তিম আলোচনা সম্প্রচারিত হবে ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, যেদিন নেতাজির জন্মের ১২৫ বছর পূর্ণ হবে।
বঙ্গদর্শনের পেজে আপনারা দেখতে পাবেন আলোচনার নির্বাচিত অংশের প্রতিলিপি, সঙ্গে ভিডিও ক্লিপ।