বিদ্যাসাগরের ঐতিহাসিক কর্মকাণ্ডের খোঁজ মিলল সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্দুকে

বিধবা বিবাহ শুরু করার জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আমরা সবাই জানি। এবার সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো সিন্দুক থেকে উদ্ধার হওয়া ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ থেকে জানা গেল, বিধবা ভাতাও চালু করেছিলেন বিদ্যাসাগর।
সম্প্রতি সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে আসে পুরোনো দু’টি সিন্দুক। চার ঘণ্টার চেষ্টায় একটি সিন্দুকের তালা ভাঙা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে মুক্তকেশী দেবীর বিধবা ফান্ড নামের নথি, তিনটি মেডেল, সিল করা সাতটি খাম এবং আরও কিছু পুরোনো কাগজপত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, সিন্দুক থেকে উদ্ধার করা কাগজপত্রে বিধবা মহিলাদের নাম উল্লেখ করা আছে, কাকে কত টাকা দিতে হবে, সেটাও বলা আছে। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত প্রতি মাসে ২ টাকা করে দেওয়া হয়েছে আট জনকে। দু’জন মহিলা সই করে এবং বাকি ছয় জন টিপ সই দিয়ে অর্থ নিতেন। উল্লেখ করা হয়েছে বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের দু’টি গ্রামের নামও।
সিন্দুকে যে তিনটি রুপোর মেডেল ছিল, সেগুলো একেবারে নতুনের মতোই ঝকঝকে। দু’টি মেডেল সংস্কৃত এবং এবং একটি ইংরেজির জন্য। জানা গেছে, একটি মেডেল ১৯১৯ এবং আরেকটি ১৯৩১ সালের। প্রাপকরা কোনো কারণে মেডেলগুলি নেয়নি, তাই সেগুলি সিন্দুকে রয়ে গেছে।
আরেকটি সিন্দুকে পাওয়া গেছে ৮৫টি ডাকঘরের পাসবই, ক্যাশবাক্স, খুচরো টাকা রাখার পাত্র এবং আরও কিছু জিনিসপত্র ও কাগজ। তখন ডাকঘর থেকে মেধা বৃত্তির টাকা দেওয়া হত।
সিন্দুক দু’টি এবং সেগুলির থেকে পাওয়া নথিপত্র ও অন্যান্য জিনিসগুলি সংরক্ষণ করবে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরে সারা পশ্চিমবঙ্গে জুড়ে ধুমধাম করে বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মজয়ন্তী পালিত হচ্ছে। এই ব্যাপারে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় কিছু বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, কারণ, বিদ্যাসাগর ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। রাজ্য সরকার এখানে গড়ে দিচ্ছে বিদ্যাসাগরের নামে গবেষণাকেন্দ্র। বিদ্যাসাগরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, তাঁর সময়কার নথিপত্র ইত্যাদি নিয়ে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হচ্ছে মিউজিয়াম। সেখানেই রাখা হতে পারে সিন্দুক দু’টি থেকে উদ্ধার করা যাবতীয় সামগ্রী।