‘আম’-বাঙালির তরে আমের তিন গুপ্ত রেসিপি

‘আম পাকে বৈশাখে’। তবে, সব আম কিন্তু বৈশাখে পাকে না। ফলে বাজার ঘুরলে কাঁচা আমও মেলে যথেষ্টই। সেই আম কিনে সামান্য বিটনুন দিয়ে মেখে খেতে যে কী সুখ! এখন তো চারপাশে রাশি রাশি আমগাছ আর নেই তেমন। বয়সটাও হাতের বাইরে বেরোচ্ছে। ফলে, ঝড় এলে আম কুড়োবার উপায়ও নেই। তাই কেনা আমই ভরসা। কিন্তু, শুধু নুন দিয়ে মেখে না খেয়ে যদি সেই কাঁচা আমেরই নানান ছোটো-খাটো পদ বানিয়ে নেওয়া যায় বাড়িতে, তাহলে কেমন হয়!
যে দেশে আমের এত রমরমা, সেই দেশে আমের নানা গুপ্ত পদও তো থাকবেই। কাঁচা আমের টক, চাটনি বা আমপোড়া সরবতের কথা ছেড়েই দিলাম। তা বাদে আরো নানাভাবে ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা আমকে। একটা নয়, তিন-তিনখানা রেসিপির সন্ধান রইল আজ। আম-বাঙালির জন্য।
আম কোরা:
একে আমের জেলি আচারও বলতে পারেন চাইলে। দুটো কাঁচা আম ছিরনি দিয়ে কুচিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। তাতে পরিমাণ-মতো চিনি দিয়ে পাক দিতে হবে। শেষে ভাজা মশলা (মৌরি, জিরে, ধনে, গোলমরিচ, শুকনো লঙ্কা ভেজে গুঁড়ো করে নেওয়া) দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে কিছু সময় জ্বাল দিলেই তৈরি হয়ে যাবে আম কোরা। খেলে জিভে জল আসবেই, গ্যারান্টি।
কাঁচা আমের লস্যি:
পাকা আমের লস্যি তো অনেক খেয়েছেন। এবারে কাঁচা আমের লস্যিও বানিয়ে ফেলুন বাড়িতে। প্রথমে, আমের আঁটি বাদ দিয়ে বাকি অংশ ছোটো-ছোটো টুকরোয় কেটে নিতে হবে। এবার টুকরোগুলো মিক্সিতে দিয়ে, তাতে চিনি, বিট নুন, পুদিনা পাতা, ভাজা জিরের গুঁড়ো, টক দই দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিলেই তৈরি লস্যি। বরফ দিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন। এ স্বাদের জুড়ি মেলা ভার।
কাঁচা আমের মশলা আমসত্ত্ব:
চারটে মাঝারি আকারের কাঁচা আম ছোটো ছোটো টুকরোয় কেটে নিয়ে আধ কাপ জল দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ আমগুলোর একটা পেস্ট করে, ছাকনি দিয়ে ছেঁকে কড়াইতে দিতে হবে। তাতে পরিমাণ-মতো চিনি দিয়ে পাক দিতে হবে আর একের চারভাগ বিট নুন দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর পাঁচফোড়ন আধাভাঙা গুঁড়ো (হালকা আঁচে ভেজে গুঁড়ো করা) এক চামচ দিতে হবে এবং ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে জ্বাল করে নামিয়ে নিতে হবে। স্টিলের চওড়া থালায় বা কেকপ্যানে সরষের তেল মাখিয়ে তার মধ্যে মিশ্রণটি ঢেলে ভালো করে ছড়িয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে যেমন ইচ্ছে তেমন আকারে কেটে নিলেই তৈরি কাঁচা আমের মজাদার মশলা আমসত্ত্ব।
ছবি: তর্পিণী ভুঁইঞা