No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ভবিষ্যতের আকাশ ছোঁবে সুজলাম দ্য স্কাই সিটি

    ভবিষ্যতের আকাশ ছোঁবে সুজলাম দ্য স্কাই সিটি

    Story image

    পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল। কিন্তু এবার বোধ হয় সেই ইতিহাসকেও পিছনে ফেলে দেবে এ রাজ্যের ভবিষ্যৎ। গতানুগতিকতার সীমানা পেরিয়ে আমাদের বাংলা আজ নতুনকে বরণ করার সাহস দেখিয়েছে, আর সেই সাহসেরই নামান্তর বেঙ্গল এরোট্রোপলিস।

    বছর দশেক আগে ২০০৭ সালে যে প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন, সেই বেঙ্গল এরোট্রোপলিস ভারতের সর্বপ্রথম বিমাননগরী সুজলাম দ্য স্কাই সিটি নির্মাণ করার অভিনব পদক্ষেপ নিয়ে এরই মধ্যে গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। প্রায় দু’হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা দুর্গাপুরের সুজলাম দ্য স্কাই সিটি এক অনন্য জনপদ।

    সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এটি এমন একটি অন্যতম সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের উদাহরণ যা সাম্প্রতিক অতীতে একেবারেই অনন্য। চাঙ্গি এয়ারপোর্টের সর্ববৃহৎ একক অংশীদারিত্ব ছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কর্পোরেশন, আইএলএফএস, একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো সংস্থা এবং তিন উদ্যোগপতির ব্যাক্তিগত অংশীদারিত্বে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে এই প্রকল্প।

    আধুনিক শিল্প পরিকাঠামোয় দেখা যায় যে সার্বিক উৎপাদন এবং উদ্যোগ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বিমানবন্দর একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। অতীতে ঠিক যেভাবে আঠেরো শতকে নৌবন্দরগুলি, উনিশ শতকে রেলপথ এবং সর্বোপরি বিশ শতকে সড়ক পথ সার্বিক শিল্পোন্নয়নের সহায়ক হয়ে উঠেছিল, ঠিক সেইভাবে আধুনিক কালে গতিময় তৎপর সংযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

    সুজলাম দ্য স্কাই সিটির হৃৎপিণ্ড হল কাজী নজরুল ইসলাম এয়ারপোর্ট। কাজী নজরুল ইসলাম (কে এন আই) বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই বিমাননগরী এক অত্যাধুনিক নগর ব্যবস্থার প্রতিকৃতি যা অতি অনায়াসে সময় সংবেনদনশীল সরবরাহকারী, নির্মাতা, পরিবেশক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দূরবর্তী গ্রাহক এবং ব্যবসা উপযুক্ত প্রধান শহর গুলিকে যুক্ত করতে সক্ষম।

    এন-এইচ ১৯-এর উপর অবস্থিত সুজলাম দ্য স্কাইসিটির কৌশলগত অবস্থান এখান থেকে কলকাতা ও দিল্লির সুলভ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করে। বাংলার এই অন্যতম প্রকল্পটি রাজ্যকে দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলির সাথে সড়ক, উড়ান ও রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করেছে যা নিঃসন্দেহে এই অঞ্চলকে আবাসন প্রকল্পের বিনিয়োগ অনুকূল করে তুলেছে। প্রায় ১৩০০ একর বিস্তৃত এই নির্মীয়মান বিমান নগরীটি বিশ্বমানের সাধারণ পরিকাঠামোয় সজ্জিত। উন্নতমানের রাস্তা এই প্রকল্পকে প্রধান সড়কের সাথে যুক্ত করেছে। এছাড়া আরও রয়েছে আধুনিক নিকাশি ব্যবস্থা, আপৎকালীন জল নির্গমন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও প্রয়োজনীয় জলসরবরাহ পরিকাঠামো। সুজলাম দ্য স্কাইসিটির এই সার্বিক উপস্থাপনা যে আবাসিক, বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি শিল্পের উপযোগী এক পরিকাঠামো তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

    বিমাননগরীটি নিয়ে এসেছে এক অনন্য ধারণা। এমন এক পরিপূর্ণ জীবনধারণের আভাস যেখানে শুধু কাজের জন্য জীবন নয়, জীবনের জন্য কাজ। যেখানে রয়েছে দূষণমুক্ত নির্মাণশিল্প ও পরিষেবা শিল্পের অনুকূল পরিবেশ, রয়েছে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য প্রায় ২৫০০০ আবাসন পরিকল্পনা। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিকাঠামো প্রদানের উপযোগী প্রতিষ্ঠানগুলির প্রারম্ভিক কর্মযজ্ঞ এই বিমাননগরীটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।

    ইতিমধ্যেই সুজলাম দ্য স্কাই সিটির আবাসিক প্রকল্পে ন’শোর বেশি ব্যাক্তিগত আবাসিক জমি হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। বিখ্যাত আবাসন নির্মাণসংস্থা 'স্রাচী' প্রায় ৩৫ একর জমির উপর গড়ে তুলতে চলেছে বিভিন্ন সামাজিক স্তরের মানুষের জন্য সুবাসস্থান। বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে অর্থনৈতিক ভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল সামাজিক স্তরের কথা মাথায় রেখেই এখানে গড়ে উঠতে চলেছে বিশাল মাপের স্বল্প বিনিয়োগ আবাসন পরিকল্পনা।

    বলাবাহুল্য যে বিমাননগরীটিতে একদিকে যেমন আবাসিক শিল্পের জোয়ার অন্যদিকে তেমনি বিভিন্ন উদ্যোগ তৈরি করেছে আনুষঙ্গিক শিল্পের অনুকূল পরিবেশ।

    বিমাননগরীর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও লজিস্টিকস হাব অতিপরিচিত পার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চলকে এক অসামান্য মাত্রা এনে দিয়েছে। সুজলাম দ্য স্কাইসিটি এখানে এক দূষণমুক্ত ও স্থায়িত্বশীল শিল্পাঞ্চলের স্বপ্ন দেখে যা নিশ্চিতভাবে এ রাজ্যের শিল্পভাবনাকে আমূল বদলে দিতে চলেছে। বাণিজ্যিক সরবরাহ কেন্দ্র হিসাবে আঞ্চলিক সম্ভাবনা এই ভাবনাকে আরও সুদৃঢ় করে।

    ইতিমধ্যেই নবনির্মিত ওয়্যারহাউসগুলি এই অঞ্চলে কাজ শুরু করে দিয়েছে। শুধুতাই নয়, উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে তারা এশিয়ান পেন্টস, টাটা স্টিল এবং মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার মতো বিশ্বখ্যাত সংস্থাগুলিকেও পরিষেবা প্রদান করে চলেছে। এই অঞ্চলের উড়ান, রেলপথ ও সড়ক সংযোগ ব্যবস্থা সরবরাহ পরিষেবা শিল্পকে এক অসামান্য মাত্রার প্রতিশ্রূতি দেয়। অন্যদিকে উৎপাদন শিল্পে ইন্দো–জার্মান সহযোগিতায় নির্মিত আরডিক্সএনডিউরা সংস্থাটি তাদের প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

    উদ্যোগী শিল্পাঞ্চলের তকমা ছাড়াও এই অঞ্চলের শেকড় বিস্তীর্ণ হয়েছে সম্ভাবনাময় স্বাস্থ ও শিক্ষা পরিষেবায়। প্রায় ১০০০০ জন ছাত্রছাত্রীর উপযোগী সার্বিক শিক্ষা পরিকাঠামোর পরিকল্পনা দুর্গাপুরের সমবৈষয়িক ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করে। উদাহরণ হিসাবে তিনটি এরকম প্রচেষ্টার কথা বলা যেতে পারে। রাজবিদ্যা কেন্দ্র এইরকমই একটি আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রয়েছে সিবিএসই অন্তর্ভুক্ত নারায়ণ স্কুল যা নার্সারি থেকে ১২ ক্লাবসহ অবধি পঠনপাঠনের সুবিধা দেয়। অন্যদিকে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইতিমধ্যেই তাদের সেশন শুরু করে দিয়েছে।

    এখানেই শেষ নয়। বিমান নগরীটিতে নির্মিত হতে চলেছে ৩০০ শয্যার একটি বহু সুবিধাযুক্ত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান। আশা করা যায় যে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ সুজলাম দ্য স্কাইসিটির আবাসিকদের কাছে পৌঁছে দেবে এক বিশ্বমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা।

    সত্যিই — ভাবনার, উদ্যোগের, যোগাযোগ ব্যবস্থার এবং পরিমাপ ও পরিকাঠামোর অসামান্যতায় সুজলাম দ্য স্কাইসিটি এ-দেশে তুলনাহীন।

    কাজেই, হয়তো এমনটা ভাবা যেতেই পারে, যে বেঙ্গল এরোট্রোপলিস আদতে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্যাকাশে ভবিষ্যতের সূর্যোদয়ের আগাম বার্তা।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @