অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি ভুলে ফিরে আসছে কলকাতার ‘প্রিয়া’

গত বছর আগস্ট মাসে এক অগ্নিকাণ্ডের পর বন্ধ হয়ে গেছিল দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত প্রেক্ষাগৃহ প্রিয়া সিনেমা। কলকাতার চলচ্চিত্র নির্মাতা-প্রযোজক-অভিনেতা-দর্শক সবার কাছেই প্রায় আঘাতের মতো নেমে এসেছিল এই খবর। তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়ে প্রিয়া সিনেমার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, দর্শকদের জন্য কাল থেকেই ফের খুলে যাচ্ছে প্রিয়া সিনেমার দরজা। একদম নতুন সাজে ফিরে আসছে কলকাতার সিনেপ্রেমীদের বড়ো কাছের ‘প্রিয়া’।
বিগত কয়েক বছরে গোটা রাজ্যেই একে একে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু সিঙ্গল স্ক্রিন। সেখানে, কলকাতার পুরনো সিঙ্গল স্ক্রিনের গৌরবের স্মৃতি বাঁচিয়ে রেখেছিল প্রিয়া, নবীনার মতো প্রেক্ষাগৃহগুলিই। এই দুই প্রেক্ষাগৃহের রেষারেষির গল্প তো প্রায় মিথ। শুধু প্রেক্ষাগৃহ হিসেবে না, বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসেও অন্য নানা কারণেই প্রিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রযোজকের অভাবে যখন থমকে গিয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর শুটিং, তখন এগিয়ে এসেছিল প্রিয়া সিনেমাই। গুগাবাবার পাশাপাশি সত্যজিতের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ চলচ্চিত্রেরও প্রযোজক তাঁরা। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার সন্ধে সাতটায় নতুন কলেবরে প্রিয়ার নতুন ইনিংসের উদ্বোধনও হবে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর বিশেষ প্রদর্শন দিয়েই।
‘প্রিয়া’ সিনেমার ফিরে আসার খবরে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত টলিপাড়া। পুজোর সময়ে প্রিয়া বন্ধ থাকায় বেশ কিছু সিনেমাই সমস্যার মুখে পড়েছিল। প্রায় সাত মাস ঝাঁপ বন্ধ থাকার পর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অরিজিৎ দত্ত-সহ টলিউডের পরিচালক-অভিনেতাদের বিশেষ দল। তারপর, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই ফের খুলে যাচ্ছে বাঙালির নস্টালজিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই প্রেক্ষাগৃহ। শুক্রবার ‘প্রিয়া’-তে মুক্তি পাবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নগরকীর্তন’। ইতিমধ্যে, অগ্নিকাণ্ডের পর নতুন করে সারিয়ে তুলতে হয়েছে প্রেক্ষাগৃহকে। দর্শকাসন ৭০০-৭৫০ থেকে কমে হয়েছে ৫৪৩-টি। আসন কমলেও দর্শক স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে সমস্ত সিটকেই মুড়ে ফেলা হয়েছে লেদারে।
‘প্রিয়া’ ফিরে এসেছে এই সুসংবাদেই আপাতত বুঁদ কলকাতার সিনেমা-প্রেমীরা।