No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    দারুচিনি দ্বীপের গল্প

    দারুচিনি দ্বীপের গল্প

    Story image

    চারদিকে নীল জলরাশি, আর মাঝখানে ছোট্ট একটা দ্বীপ। সেন্ট মার্টিন’স আইল্যান্ড। যারা সমুদ্র ভালোবাসেন, বাংলাদেশের এই দ্বীপ তাঁদের খুব প্রিয়। জায়গাটা খুব বিখ্যাত মিষ্টি ডাবের জন্য। সংবেদনশীল মানুষেরা অনুভব করেন, দ্বীপের প্রকৃতির সঙ্গে যেন মিলেমিশে একাত্ম হয়ে গিয়েছে জীবনানন্দ দাশের কবিতা। হবে নাই বা কেন? জায়গাটার ডাক নাম যে ‘দারুচিনি দ্বীপ’।

    কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে আর  মায়নামারের সমুদ্র উপকূল থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় রয়েছে এই দারুচিনি দ্বীপ বা সেন্ট মার্টিন’স আইল্যান্ড। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই দ্বীপ প্রথম খুঁজে পেয়েছিলেন আরব বণিকরা। সমুদ্র পথে চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় যাতায়াতের সময় এখানে নেমে খানিকটা বিশ্রাম নিতেন তাঁরা। এই দ্বীপকে তাঁরা ডাকতেন 'জিঞ্জিরা' বলে। আশেপাশের মানুষদের কাছে দ্বীপটা এই নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছিল। ১৯ শতকের শেষে কিছু লোক বসতি স্থাপন করে এখানকার উত্তরাংশে। সবার প্রথমেই ১৩টি পরিবার এখানে থাকা শুরু করেছিল বলে জানা যায়। এখন ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ এই দ্বীপে বাস করেন।

    আগে সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপে নারকেল গাছ খুব একটা ছিল না। এখানে মানুষ থাকা শুরু করলে তারাই প্রচুর নারকেল গাছ লাগানো শুরু করেছিলেন। তারপর একটা সময়ে এত বেশি নারকেল গাছ হয়ে যায় যে দ্বীপটার নাম হয়ে যায় 'নারিকেল জিঞ্জিরা'। পরবর্তীকালে ইংরেজ শাসকরা যখন এই দ্বীপকে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করলেন, এক খ্রিস্টান সাধুর নামে এই দ্বীপের নাম রাখা হল 'সেন্ট মার্টিন’স আইল্যান্ড'। এখন দ্বীপের অফিসিয়াল নাম এটাই। তাহলে ‘দারুচিনি দ্বীপ’ নামটা কোথা থেকে এল? কিছু লোক মনে করেন, অনেকে অনেক বছর আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে দারচিনি বোঝাই করা একটি আরব জাহাজ সমুদ্রের তলায় থাকা পাথরে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে। আর এই জাহাজের দারচিনি ছড়িয়ে পড়ে এই দ্বীপে। সেই থেকে এখানকার আরেকটা নাম হয়ে যায় ‘দারুচিনি দ্বীপ’। হুমায়ুন আহমেদের লেখা আর তৌকির আহমেদের পরিচালনায় ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ছবিটির শুটিং হয়েছিল এখানে। 

    গোটা সেন্ট মার্টিন’স আইল্যান্ডকে ভাগ করা যায় তিনটে অঞ্চলে। উত্তর অংশকে ডাকা হয় নারকেল জিঞ্জিরা বা উত্তর পাড়া নামে। দক্ষিণ অংশকে বলা হয় দক্ষিণ পাড়া। এই দক্ষিণ পাড়া থেকেই একটা লেজের মতো অংশ দক্ষিণ পূর্ব দিকে বেরিয়ে গেছে। এই জায়গাটাকে গলাচিপা বলে ডাকা হয়। সেন্ট মার্টিন’স আইল্যান্ডের দক্ষিণে ১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তনের ছোটো একটা দ্বীপ আছে যা স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছেড়াদিয়া বা সিরাদিয়া  ছেঁড়া দ্বীপ নামে। কোনো মানুষ থাকে না এখানে। ভাটার সময় পায়ে হেঁটেই অনায়াসে সেই দ্বীপে পৌঁছে যাওয়া যায়। তবে জোয়ারের সময় নৌকো ছাড়া গতি নেই। 

    তথ্য সূত্র – আদার ব্যাপারী, প্রিয় ডট কম।  

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @