বিবেকানন্দ নামের এক বটগাছের কথা

রামকৃষ্ণ চেয়েছিলেন তাঁর নরেন হয়ে উঠবে বটগাছের মতো। বহু মানুষকে আশ্রয় দেবে যে গাছের ছায়া। আজ ১২ জানুয়ারি সেই স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। বিবেকানন্দের শিক্ষা ছিল, সব দেবতাকে ভুলে গিয়ে ভারতবাসীর উচিত দেশের মানুষের পুজো করা। তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী পঞ্চাশৎবর্ষ ধরিয়া তোমরা কেবলমাত্র স্বর্গাদপী গরীয়সী জননী জন্মভূমির আরাধনা কর; অন্যান্য অকেজো দেবতাগণকে এই কয় বর্ষ ভুলিলেও কোনও ক্ষতি নাই। অন্যান্য দেবতারা নিদ্রিত। একমাত্র দেবতা তোমার স্বজাতি....তোমরা কোন নিষ্ফলা দেবতার অন্বেষণে ধাবিত হইতেছ, আর তোমার সম্মুখে, তোমার চতুর্দিকে যে দেবতাকে দেখিতেছ, সেই বিরাটের উপাসনা করিতে পারিতেছ না? এই সব মানুষ, এই সব পশু, ইহারাই তোমার ঈশ্বর; আর তোমার স্বদেশবাসীগণই তোমার প্রথম উপাস্য’।
কিছুদিন আগে জেএনইউ-এ বিবেকানন্দ মূর্তি উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন স্বামীজির স্বপ্নের রূপায়ণ। এখানেই প্রশ্ন। হিন্দুত্বাদীরা যে বিবেকানন্দকে দেশবাসীর সমনে তুলে ধরতে চাইছেন, আর বাস্তবের বিবেকানন্দ কি এক?
মাননীয় নরেন্দ্র মোদির বিবেকানন্দ, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের বিবেকানন্দ, আর আমাদের, মানে মানুষের বিবেকানন্দ এক নয়। রাম মন্দিরের শিলান্যাসের পর যোগী আদিত্যনাথকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, যখন অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি হবে তখন তাঁকে ডাকলে তিনি কি আসবেন? যোগীর জবাব ছিল, না। নরেন্দ্র মোদি তো বলেইছেন, আন্দোলনকারীদের পোশাক দেখে চিনতে। আর বিবেকানন্দ কী বলেছিলেন শুনুন। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘আমি মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছি, এই বিবাদ বিশৃঙ্খলা ভেদ করে ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ ভারত বৈদান্তিক মস্তিষ্ক ও ইসলামীয় দেহ নিয়ে মহামহিমায় অপরাজেয় শক্তিতে জেগে উঠছে’। অথচ সিএএ আইন পাশ করানোর পর হিন্দুত্ববাদী সরকার ভারতকে ধর্মের ভিত্তিতে কার্যত দু’ভাগ করে ফেলেছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের পোশাক দেখে চেনার কথা। প্রথমবার বিদেশ থেকে বিবেকানন্দ এসে বললেন ‘We are not going to accept the tyranny of the minority over majority’। অর্থাৎ গুটি কয় সাহেব দেশ চালাবে আর, ভারতবাসী মাথা নিচু করে থাকবে তা মেনে নেওয়া যায় না। এই ছিল বিবেকানন্দের মত এবং বিশ্বাস। ভয় পেলো সাহেবরা। ১৯০১ সালে ঢাকায় যুবকদের বললেন, ‘যে লুঠেররা তোদের মাকে অত্যাচার করছে তাদের দেশ থেকে তাড়া। ব্রিটিশ পুলিশ গুলি চালাক, দেশে রক্ত গঙ্গা বয়ে যাক, আর তার প্রথম বুলেটটা এসে লাগুক আমার বুকে।’ ভয় বাড়ল সাহেবদের। সিডিশন কমিটির রিপোর্ট, মানে পুলিশ রিপোর্টে, বলা হল, শিক্ষা ব্যবস্থায় বিবেকানন্দ পড়ানো যাবে না।
বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘আমি মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছি, এই বিবাদ বিশৃঙ্খলা ভেদ করে ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ ভারত বৈদান্তিক মস্তিষ্ক ও ইসলামীয় দেহ নিয়ে মহামহিমায় অপরাজেয় শক্তিতে জেগে উঠছে’।
প্রায় সেই এক সিডিশন আইনে আজ, নরেন্দ্র মোদির ভারতে ভিন্ন মত প্রকাশ করার জন্য বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে দেশের প্রথম সারির বুদ্ধিজীবীদের জেলে আটকে রাখা হয়েছে। তার মধ্যে আছেন, অধ্যাপক, লেখক, আইজীবী, ৮৩ বছরের পারকিনসনস রোগাক্রান্ত বৃদ্ধ সমাজসেবী স্ট্যান স্বামী, স্মৃতিভ্রংশ হয়ে যাওয়া কবি ভারভারা রাও।
বিবেকানন্দের জন্মের পর দেড়শো বছরেরও বেশি পার হয়ে গিয়েছে। বিবেকানন্দ নিয়ে আলোচনা ফুরোয়নি। হিন্দুত্ববাদীরা বাঙালির নরেনকে সম্পূর্ণ ভুলভাবে তুলে ধরে তার দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হল বিবেকানন্দের মতো একজন সেকুলার, সমাজতান্ত্রিক ভাবনার মানুষকে কি আমরা কতিপয় হিন্দু মৌলবাদীর হাতে ছেড়ে দেব? না কি আমরা নতুন করে বিবেকানন্দ পড়তে শুরু করব!
সরলাদেবী সম্পাদিত বৈশাখ সংখ্যা ভারতী পত্রিকায় ১৯০৯ সালে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘অল্পদিন পূর্বে বাংলাদেশে যে মহাত্মার মৃত্যু হইয়াছে সেই বিবেকানন্দ পূর্ব ও পশ্চিমকে দক্ষিণে ও বামে রাখিয়া মাঝখানে দাঁড়াইতে পারিয়াছিলেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে পাশ্চাত্যকে অস্বীকার করিয়া সংকীর্ণ সংস্কারের মধ্যে ভারতবর্ষকে সীমাবদ্ধ করা তাঁহার জীবনের শিক্ষা নহে। গ্রহণ করিবার সৃজন করিবার মিলন করিবার অপূর্ব প্রতিভা তাঁহার ছিল। তিনি ভারতের সাধনাকে পশ্চিমে, পশ্চিমের সাধনাকে ভারতে দিবার ও লইবার পথ রচনা করিতে গিয়া নিজের জীবনকে উৎসর্গ করিয়াছিলেন। ’
একটা কথা প্রথমেই বলে নেওয়া জরুরি। বিবেকানন্দের কর্মজীবন বছরের হিসেবে খুব ছোটো। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তাঁর লেখার সঙ্গে তাঁকে বোঝার জন্য আমাদের আশ্রয় নিতে হয় তাঁর অসংখ্য চিঠি, বক্তৃতা ইত্যাদির। এবং যে কোনও সুস্থ মানুষের মতোই তাঁর লেখায়ও কখনও কখনও এমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায়, যা দেখে মনে হতে পারে, তিনি তো আগে এই নিয়ে অন্যরকম বলেছিলেন! একজন অতি প্রতিভাধর মানুষের কম বয়সে মৃত্যুর জন্য এমন হতেই পারে। সেখানে দেখা উচিত, তাঁর মূল বক্তব্যের ঝোঁক কোন দিকে!
বিবেকানন্দের জন্মের পর দেড়শো বছরেরও বেশি পার হয়ে গিয়েছে। বিবেকানন্দ নিয়ে আলোচনা ফুরোয়নি। হিন্দুত্ববাদীরা বাঙালির নরেনকে সম্পূর্ণ ভুলভাবে তুলে ধরে তার দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হল বিবেকানন্দের মতো একজন সেকুলার, সমাজতান্ত্রিক ভাবনার মানুষকে কি আমরা কতিপয় হিন্দু মৌলবাদীর হাতে ছেড়ে দেব?
সিপিএমের তাত্ত্বিক নেতা ইএমএস নাম্বুদিরিপাদ পার্টির খবরের কাগজ ‘দেশাভিমানী’-তে ধারাবাহিক ভাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লিখেছিলেন, পরে সেটা বই হয়ে প্রকাশিত হয় বিভিন্ন ভাষায়। সেখানে নাম্বুদিরিপাদ লিখেছেন, ‘বিবেকানন্দের ভাষণে, চিঠিপত্রে থাকত – কিছুটা স্পষ্টাস্পষ্টিভাবেই – এমন সব মন্তব্য, যা আধুনিক বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী আন্দোলন গড়ে তোলার পথে পরম সহায়ক। এমন সব কথাও তাঁর মুখ দিয়ে বেরোত যা বাহ্যত ধর্ম প্রতিষ্ঠান, পুরোহিতদেরই বিরুদ্ধে যেত। যেমন, তাঁর এক শিষ্যের কাছ থেকে শোনা – বিবেকানন্দ একবার এই কথা বলেছিলেন যে , দেশ যখন চরম দারিদ্রে, দুঃখ দুর্দশায় ডুবে আছে, তখন ধর্ম নিয়ে বাগাড়ম্বর করার সময় নয়।... মাঝে মাঝে তাঁর মুখে এমন কথাও প্রকাশ পেয়েছে যে, যারা গরিব, যারা নিঃস্ব, যারা দুর্বল, তারাই তো আসল দেবতা... তিনি যত ভাষণ দিয়েছেন তাদের সবেরই ভিতরে জাতির মুক্তিলাভের দুর্মর কামনা অনুভব করা যেত’।
কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে বিবেকানন্দকে নিয়ে একটি আলোচনাচক্রে যোগ দিয়ে নাম্বুদিরিপাদ বলেছিলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন সেই বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক যিনি শুধু তাঁর চোখে দেখা ভারতীয় সমাজকেই ব্যাখ্যা করেননি, তার পরিবর্তনও চেয়েছিলেন – এই পরিবর্তন বুদ্ধের স্বপ্নে দেখা প্রাচীন ট্রাইবাল সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং তিনি দেখেছিলেন একটি আধুনিক বিজ্ঞান-কেন্দ্রিক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, রাজনৈতিক ভারত গড়ে তুলতে। যে বেদান্ত দর্শনের উপর ভিত্তি করে শঙ্করাচার্য জাত-পাত ভিত্তিক সমাজকে সংহত করতে চেয়েছিলেন, তাকেই বিবেকানন্দ ব্যবহার করলেন জাত-পাত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষকে সমবেত করতে। তিনি শূদ্র-শাসনের তত্ত্ব প্রচার করেছিলেন। ...তার সময়ে কেরালার বল্গাহীন জাত-পাত ভিত্তিক শোষণের চেহারা দেখে তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, এই দেশ প্রকৃতই এক উন্মাদাগার। তিনি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অর্থাৎ সার্বিক সাম্যের আহ্বান জানিয়েছিলেন।’ এই হল নাম্বুদিরিপাদের চোখে বিবেকানন্দ।
বিবেকানন্দকে নিয়ে বাংলার কমিউনিস্ট নেতা বিনয় চৌধুরী বলেছিলেন, বিবেকানন্দের মধ্যে এমন সমস্ত চিন্তাধারা ছিল যা সাম্যবাদীদের সঙ্গে অনেকাংশে মিলে যায়। বিনয় চৌধুরী লিখছেন, ‘তাঁর যে উক্তি আমাকে এখনও শিহরিত করে- তিনি যখন বলেন, অভিজাত মানুষদের উদ্দেশে- “তোমরা শূন্যে বিলীন হও, নতুন ভারত বেরুক, বেরুক চাষার কুটির ভেদ করে, জেলে, মালো, মুচি, মেথরের ঝুপড়ির মধ্যে থেকে”’।
স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন সেই বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক যিনি শুধু তাঁর চোখে দেখা ভারতীয় সমাজকেই ব্যাখ্যা করেননি, তার পরিবর্তনও চেয়েছিলেন
যদিও এটাও ঠিক, বিনয় চৌধুরী ব্যতিক্রম। বিবেকানন্দকে বাংলার কমিউনিস্টরা কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, এড়িয়ে চলেছেন। সেভাবে আলোচনার মধ্যেই আনেননি। তাতে ক্ষতি হয়েছে, বিবেকানন্দের দখল নিয়েছে সঙ্কীর্ণ হিন্দুত্ববাদীরা। আজকের তরুণদের সামনে সমাজতন্ত্রের মডেল হিসেবে উত্তর কোরিয়া বা চিনকে তুলে ধরলে তারা কখনই তাকে আদর্শ সমাজ বলে মানতে চাইবে না। আজকের ইন্টারনেট, ডিজিটাল লাইব্রেরির যুগে চিনের একনায়কতন্ত্রী-সমাজতন্ত্রের অন্ধকারমাখা ছবি আর আড়াল করে রাখা যায় না। ফলে এইসব তথাকথিত সমাজতন্ত্র নতুন যুগের মানুষদের চোখে আর কোনও স্বপ্ন তৈরি করে না। যদিও সাম্যের আদর্শের প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীতা সারা বিশ্বেই বাড়ছে। বামপন্থীদের এবং সমাজতন্ত্রের সংকটের অনেক কারণের মধ্যে এটা অন্যতম। কিন্তু ভারতে বিবেকানন্দের জনপ্রিয়তা ম্লান হয়নি এখনও এত বছর পরেও। বামপন্থীদের এর উত্তর খুঁজতে হবে।
একটা কথা স্পষ্ট করে বলা উচিত। বিবেকানন্দ কেন, পৃথিবীর কারও ভাবনা বা আদর্শই একশো ভাগ অনুসরণযোগ্য হয় না। সেটাই স্বাভাবিক। ধর্মে বা রাজনীতিতে কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাবনাকে ‘ইজম’ ইত্যাদি তকমা দিয়ে, একটা দুটো তথাকথিত পবিত্র কেতাবকে সব অসুখের মহাবটিকা বলে দাবি করা একধরনের মৌলবাদী আচরণ। বিবেকানন্দের মতে ভারত ধর্মপ্রাণ দেশ। তাঁর অদ্বৈত-বেদান্ত নির্ভর মানবসেবার ভাবনা বলে, ‘সর্বভূতে ঈশ্বর বিদ্যমান’। ঈশ্বর কেউ মানতে পারেন, না-ও মানতে পারেন, কিন্তু এই কথার যে মূল অর্থ, তা কিন্তু সাম্যের কথা বলে। সব মানুষ এক। সবাই সমান। বিবেকানন্দ মনে করতেন সব মানুষের মধ্যে রয়েছে অনন্ত সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে রূপ দেওয়ার পথ হল, উন্নতমানের শিক্ষা সবার জন্য। কারণ তাঁর মতে সবার মধ্যে ঈশ্বর বিদ্যমান। অজ্ঞানতার জন্য প্রকাশের কম-বেশি হয়। ফলে, বিবেকানন্দের মতে, যিনি নাস্তিক, ঈশ্বর মানেন না, তাঁর মধ্যেও ঈশ্বর বিদ্যমান। ফলে একজন নাস্তিকের সঙ্গে বিশ্বাসের প্রশ্নে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। ঠিক যেমন রামায়ণে সম্মান পান নাস্তিক জাবালিও।
আরও পড়ুন: কলঙ্কিত হাথরাসে স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি
ঐতিহাসিক অমলেন্দু দে ১৯৮৮ সালে চতুরঙ্গ পত্রিকায় প্রকাশিত স্বামী বিবেকানন্দের ‘সমাজ ভাবনা’ প্রবন্ধে লিখেছিলেন, ‘অদ্বৈত-বেদান্তের সূত্র ধরেই বিবেকানন্দ ভারতে “এক শ্রেণিহীন, বর্ণহীন সমাজ” গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কারা এই নতুন সমাজ গড়বেন? বিবেকানন্দের কথায়, “খাটি চরিত্র”, “সত্যকার জীবন”, “দেবমানব”ই পথ দেখাবেন। “অনন্ত প্রেম ও করুণাকে বুকে নিয়ে শত-শত বুদ্ধের আবির্ভাব প্রয়োজন”’।
বুদ্ধ কেন? কারণ বুদ্ধ মানুষের কষ্টের কারণ জানতে সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন। বিবেকানন্দ যখন বলেন ‘সর্বভূতে ঈশ্বর’ তখন বাবরি মসজিদেও ঈশ্বরের অধিষ্ঠান, তাকে ভাঙা যায় না। এইখানেই হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে বিবেকান্দের হিন্দু ধর্মের ফারাক। বামপন্থীরাও সর্বত্যাগী নেতা-কর্মীদের ত্যাগের মধ্যে দিয়ে সাম্যবাদে পৌঁছতে চান। বিবেকানন্দও শত-শত বুদ্ধের সাধনার মধ্যে দিয়ে শ্রেণিহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন। লক্ষ্য এক, পথ আলাদা। এই হল, যত মত, তত পথের কথা। বিবেকানন্দের থেকে অনেক কিছু নেওয়ার আছে বামপন্থীদের। তা না করে তাঁরা দূর সরে থেকেছেন। আর সঙ্কীর্ণ হিংসা-নির্ভর হিন্দুত্ববাদীরা দখল নিচ্ছে বিবেকানন্দকে। যাদের সঙ্গে বিবেকানন্দের ভাবনার বিন্দুমাত্র মিল নেই।
____
*মতামত লেখকের নিজস্ব