No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    এই প্রথম অনলাইনে শান্তিনিকেতনের ‘আমার কুটির’

    এই প্রথম অনলাইনে শান্তিনিকেতনের ‘আমার কুটির’

    Story image

    মরা জানি, শান্তিনিকেতনের দ্রষ্টব্য স্থানগুলির মধ্যে একটি ‘আমার কুটির’, যেখানে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রদর্শন ছাড়াও আপনি বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ঘরানার রঙিন হ্যান্ডলুম পোশাক থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যবহারের সামগ্রী, আসবাপত্র কিনতে পারেন। যাঁরা দূরদূরান্ত থেকে শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান এবং আমার কুটির-এর সামগ্রী সংগ্রহ করেন, তাঁদের জন্য রয়েছে সুখবর। এবার থেকে আর শান্তিনিকেতনে যেতে হবে না, আমার কুটির-এর সামগ্রী পৌঁছে যাবে আপনার দোরগোড়ায়। সৌজন্যে অনলাইন বিপণী ‘দ্য বেঙ্গল স্টোর’

    ডোকরার হাতি, পেঁচা-বাক্স, হ্যাংগার, কাঁথা বা কাঁথাস্টিচ-এর উত্তরীয়, ডাইরি, গয়নার বাক্স, মাদুরকাঠির কোস্টার, ‘আমার কুটির’ খ্যাত বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী এই প্রথম পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। দ্য বেঙ্গল স্টোর-এর পক্ষ থেকে অরিজিৎ সেন বলছিলেন, “এরকম একটা ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের মতো ছোটো অনলাইন বিপণীর নাম জুড়ে যেতে পারে, এটা কখনই ভাবিনি। তবে, সত্যিই খুব ভালো লাগছে, ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মুহূর্তে এহেন উদ্যোগ রবীন্দ্রনাথ বা সুষেণ মুখার্জির গ্রামোন্নয়নের কর্মপদ্ধতির আদর্শকে আগামীতে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এ আশা করাই যায়।”

    প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শ্রীনিকেতনের গ্রামোন্নয়নের কর্মপদ্ধতির আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী সুষেণ মুখার্জি (Sushen Mukherjee) ১৯২৩ সালে গড়ে তুলেছিলেন ‘আমার কুটির’। ১৯৩২ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের (Freedom Fighter) আশ্রয়দানের অপরাধে আমার কুটিরের কাজকর্ম ব্রিটিশ পুলিশের নজরে আসে এবং ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত কারাগারে কাটাতে হয় সুষেন মুখার্জিকে। তার ফলে বেশ কিছুদিনের জন্য আমার কুটিরের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। নানা কারাগারে কাটানোর সময় সুষেণ মুখার্জির সঙ্গে পরিচয় হয় পান্নালাল দাশগুপ্ত, মণি গাঙ্গুলী প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। ১৯৩৮ সালে তদানিন্তন ইংরেজ সরকার নানা কারাগার থেকে বিপ্লবীদের মুক্তি দিতে শুরু করে। সুষেণ মুখার্জির আহ্বানে বাংলার বিপ্লবীদের একাংশ আমার কুটিরে এসে বসবাস শুরু করেন এবং গড়ে তোলা হয় কম্যুন।

    আমার কুটির ও সুষেণ মুখার্জি

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বিপ্লবী আমার কুটির ত্যাগ করেন এবং গ্রামে গিয়ে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে (১৯৪২) কুটিরবাসী প্রাক্তন বিপ্লবীরা অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

    আমার কুটিরে অবস্থানরত দেশপ্রেমিকদের সমাজ গঠন ও জাতি গঠনের এই প্রচেষ্টার কথা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। কুটিরের কাজকর্ম দেখতে আসেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (১৯৩৯) সহ নানা স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব। আমার কুটিরের কাজকর্ম পরিদর্শনে এসেছেন বহু মন্ত্রী, বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, বিচারক, বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষজন।

    স্বাধীনোত্তরকালে আমার কুটির গ্রামোন্নয়ন সংগঠনে পরিণত হয় এবং মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে গ্রামীণ কুটির শিল্পের উন্নতি ও আত্মনির্ভরশীল মানুষ তৈরির মধ্য দিয়ে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখা। প্রাক্তন বিপ্লবী ও সমাজসেবী পান্নালাল দাশগুপ্তের প্রচেষ্টায় ১৯৭৮ সালে ‘আমার কুটির সোসাইটি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ শিরোনামে নথিভুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় পরিণত হয়। তখন থেকে অদ্যাবধি আমার কুটির গ্রামীণ হস্তশিল্প বিকাশে প্রশিক্ষণ, উৎপাদন ও বিক্রয়ে সহায়তা দান করে আসছে। বর্তমানে আমার কুটির সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ এবং সহস্রাধিক হস্তশিল্পীকে বিভিন্ন প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দানের সঙ্গে যুক্ত, বিশেষত মহিলাগোষ্ঠী ও উদ্যোগীদের নানা ভাবে সহায়তা দান করে থাকে।

    ‘দ্য বেঙ্গল স্টোর’ থেকে আমার কুটির-এর সামগ্রী কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @