শীতের সকাল-দুপুর মাতিয়ে দিক পালং শাকের বড়া

কালকেতুর মা নিদয়া সাধভক্ষণের আগে ‘হংসডিমের বড়া’ খেতে চেয়েছিল। বড়া বাঙালির বড়ো প্রিয় খাদ্য। মধ্যযুগের কাব্য হাতড়ালে বড়ার কথা বারবার মিলবে। নানা জাতের বড়া। আমিষ কিংবা নিরামিষ। সামান্য জিনিস, ভেজে নিলেই অনেকটা গ্রাস দিব্বি চেটেপুটে খেয়ে নেওয়া যায়। আর, বড়া ভাজার মতো উপকরণ বাংলায় কম নেই। হাজার রকমের শাক, পাতা, বেসন, বকফুল ও আরো কত কী। শুনে মনে হয়, সামান্য পদ। কিন্তু এত সামান্যের ভিতর কীভাবে অসামান্য বুনে দিতে হয়, তা বাংলার হেঁশেল ভালোই জানে।
আজো তেমনই এক বড়ার পদ। পালং শাকের বড়া। কেউ কেউ অবশ্য বলেন পালং শাকের পকোরা। আমার যদিও বড়া বলতেই বেশি ভালো লাগে। শীত জমিয়ে পড়েছে। বাজারে সবুজ সব্জিরও আকাল নেই। ডালের সঙ্গে, এমনকি সকালে প্রাতঃরাশের সময় চায়ের সঙ্গেও দিব্বি সঙ্গ দেবে এই বড়া। সঙ্গ দেবে না শুধু, বলা ভালো মাতিয়ে দেবে। তাছাড়া, বাংলার কতযুগের স্বাদ এই পদে গাঁথা হয়ে আছে। শীতের সকালে বা সন্ধেয় চায়ের সঙ্গে মুখরোচক বড়া কিন্তু মন্দ জুড়ি নয়। তাছাড়া গরম ভাতের সঙ্গে বড়ার কম্বিনেশন তো রাজযোটক।
উপকরণ:
পালং শাক- ১ আঁটি
ধনেপাতা কুচি- ১/৪ কাপ
বেসন- ১ কাপ
হলুদ গুঁড়ো- ১/৪ চামচ
জিরে গুঁড়ো- হাফ চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো- হাফ চামচ
লঙ্কাকুচি- ২টো
রসুনকুচি- ২ চামচ
পোস্ত, নুন, সরষের তেল প্রয়োজনমতো।
আরো পড়ুন
শীতের আবহে খুল যা ‘ধনে-শিম’
প্রণালি:
পালং শাক ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিয়ে শাকের পাতাগুলো মাঝারি আকারে কেটে নিতে হবে। তারপরে বেসনটা একটা শুকনো কড়াইয়ে অল্প আঁচে তিন মিনিট ভেজে নিন। একটা পাত্রে বেসন, সমস্ত গুঁড়ো মশলা, ধনেপাতা কুচি, লঙ্কা কুচি নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার কেটে রাখা পালং শাক মিশ্রনের মধ্যে দিয়ে হাত দিয়ে ভালো করে মাখুন, দেখবেন শাকের থেকেই বেশ খানিকটা জল বেরোবে তাতেই পুরোটা মাখা হয়ে যাবে। যদি খুব শুকনো মনে হয় তালে সামান্য জলের ছিটে দিয়ে নেবেন। সবটা মেখে তৈরি করে নিয়ে একদম শেষে পোস্ত ছড়িয়ে দিন। এবার কড়াইয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিয়ে ভালো করে গরম করে নিন এবং ছোটো ছোটো মণ্ড করে ভেজে তুলে নিন।