আম ফুরোবার আগেই বাড়িতে বানান আমের কুলফি

আইসক্রিম তো সাহেবদের আমদানি, সে আর কদ্দিনই বা এসেছে বাংলায়! কিন্তু, তার আগে কি এদেশের মানুষ ঠান্ডা কিছু খেত না? যাকে বলে আইসক্রিমের ভারতীয় সংস্করণ! খেত খেত। আচ্ছা, আইসক্রিমের ভারতীয় সংস্করণ বললেই প্রথমে কী মনে পড়ে বলুন তো? ঠিক বলেছেন, কুলফি। সাহেবদের আসার ঢের আগে থেকেই ঘন দুধে তৈরি এই আইসক্রিমে মজে ভারতীয়রা। এই দেশে কুলফির জন্ম খুব সম্ভবত ষোড়শ শতাব্দীতে, মোগল আমলে। তারপর, একসময় সে ঢুকে পড়ল বাংলাতেও। কুলফির এমনই স্বাদ যে তাতে বুঁদ না হয়ে উপায় নেই। আজ তো কুলফি মোটেই আর মোগলাই খানা নয়। মাথায় ঝুড়ি চাপিয়ে যে ফেরিওয়ালারা কুলফি বিক্রি করেন, তাদের সঙ্গে মোগল রক্তের সম্পর্ক খুঁজতে বসলে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হবে। কুলফি এখন সর্বজনীন খাদ্য। গ্রীষ্মপোড়া দেশে চাতকদের জুড়িয়ে দেওয়াই তার একমাত্র ধর্ম।
ফারসিতে ‘কুলফি’ মানে ছিল ঢাকা দেওয়া পাত্র। মুখ বন্ধ করা পাত্রের ভিতর জমিয়েই এই বিশেষ খাবারটি তৈরি হত বলে এর নামও হয়ে গেল কুলফি। এখন তো আমাদের ফ্রিজ আছে, বরফ জমানোর ব্যবস্থা আছে। ভাবুন তো, আগে এসব কিচ্ছু ছিল না। তারপরেও ঠান্ডা কুলফি জমানো হত। ভাবলেই অবাক লাগে।
যাহোক ফ্রিজ যখন আছেই, তখন বাড়িতেই কুলফি বানিয়ে ফেলুন চটপট। এখনো বাজারে আম ফুরোয়নি। অতএব, শুধু কুলফি নয়, বানিয়ে ফেলুন আম-কুলফি। এমন স্বর্গীয় স্বাদ এর যে বাড়িতে অতিথিরা এলে মুগ্ধ হবেনই।
উপকরণ :
আরো পড়ুন
একদিন শেষপাতে হোক স্বর্গীয় শির খুরমা
পাকা আম- ১টা বড়ো
ফ্রেশ ক্রিম- ২০০গ্রাম
মিল্কমেইড- ৩ চামচ
গুঁড়ো দুধ- ৩ চামচ
নুন- ১/৪ চামচ
কুলফি বসানোর জন্য মুখবন্ধ করা কোন বা কাগজের কাপ
আমের মিষ্টি বুঝে মিষ্টির পরিমাণটা বাড়ানো-কমানো যেতে পারে।
প্রণালি:
প্রথমে আমটা ছোটো ছোটো টুকরোয় কেটে নিয়ে মিক্সিতে আমের পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর, মিক্সিতেই আমে নুন মিশিয়ে ফের কয়েক সেকেন্ড ঘুরিয়ে নিতে হবে। এরপর, একটি পাত্রে আমের পেস্টটা ঢেলে তাতে ক্রিম, মিল্কমেইড, গুঁড়ো দুধ দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে। ফেটানো মিশ্রণটি কুলফি বসানোর পাত্রে ঢেলে মুখের ঢাকনা আটকে দিতে হবে। কাগজের কাপ হলে অ্যালমোনিয়ামের ফোয়েল দিয়ে ভালো করে ঢেকে ফ্রিজারে ১০-১২ ঘন্টার জন্য জমতে দিতে হবে। ব্যাস কুলফি তৈরি।
এরপর ইচ্ছেমতো পরিবেশন করার পালা।
ছবি: তর্পিণী ভুঁইঞা