মাংস ছাড়াই জমবে স্বর্গীয় আমিষ কাবাব

কাবাবের নাম শুনলেই মনের ভিতরে কেমন একটা উচাটন করতে থাকে। অনেকটা রাধার পূর্বরাগের অবস্থা যেন। ‘মন উচাটন/ নিঃশ্বাস সঘন’ শুধু কদমকাননের জায়গায় কাবাবের পাত্র। নাহ, রাধা-কৃষ্ণ টেনে মজা করাটা ঠিক হচ্ছে না। তাও আবার কাবাবের সঙ্গে জড়িয়ে। এখন যা চলছে চারপাশে। এইসব পড়ে হয়তো রেগে কাঁই হয়ে গেলেন কেউ কেউ। ধর্ম নিয়ে রসিকতা! দেখাচ্ছি মজা!
তার চেয়ে শুধু কাবাবেই থাকা ভালো। কিন্তু ধর্মের কথা উঠেই যখন গেল, তখন বলি—কাবাব তো এমনিতে বিজাতীয় খাবার। বাংলা ভূখণ্ডে ইনি প্রবেশ করেছেন, জন্মাননি। কিন্তু বাঙালি সংস্কৃতিটাই তো দিনে দিনে নানা আগমন ও সংমিশ্রণের ভিতর দিয়ে জন্মেছে। সৈয়দ আলাওল, দৌলত কাজি বাংলায় প্রেমের কাব্য লিখেছেন। কাবাবও কখন যেন বাংলার হেঁসেলের অঙ্গ হয়ে গেছে।
কিন্তু কাবাব মানেই কিন্তু মাংসের পদ নয়। ইফতারের মরশুমে জাকারিয়াতে গেলে অবশ্য মাছেরও কাবাবের দেখা মেলে। কিন্তু আজ মাছ-মাংস কোনোটাই নয়, বলব ডিম-আলুর কাবাবের রেসিপি। প্রাতঃরাশে খান, সন্ধেয় খান, অতিথিকে দিন। ভেসে যাবেন স্বাদে, গ্যারান্টি।
উপকরণ:
ডিম- ২টো ফেটানো (নুন, গোলমরিচ-সহ)
সিদ্ধ ডিম- ৩টে
বড়ো আলু সিদ্ধ- ১টা
নুন- ১ চামচ
লঙ্কাগুঁড়ো- ১ চামচ
হলুদগুঁড়ো- হাফ চামচ
গরম মশলাগুঁড়ো- হাফ চামচ
জিরেগুঁড়ো- হাফ চামচ
ধনেগুড়ো- হাফ চামচ
কাঁচালঙ্কা কুচি - ২টো
কর্নফ্লাওয়ার- ১ চামচ
ধনেপাতা কুচি- অল্প পরিমাণ বুঝে
সাদাতেল, ব্রেড ক্রামস বা বিস্কুটের গুঁড়ো- (ভাজার জন্য পরিমাণ মতো লাগবে)
প্রণালি-
সিদ্ধ আলু এবং ডিম ছিড়নি দিয়ে একটি পাত্রে কুচিয়ে নিন। এবার তাতে সমস্ত গুঁড়ো মশলাগুলো দিন। সঙ্গে লঙ্কাকুচি ধনেপাতা কুচি ও কর্নফ্লাওয়ার দিন। পুরো মিশ্রণটি ভালো করে মেখে নিন। এবার হাতে তেল মেখে নিয়ে একটু একটু করে ডিম-আলুর মাখাটা নিয়ে প্রথমে গোল করে এবং তারপর হাতের তালুতে চেপে চ্যাপ্টা আকার দিন। ওই টুকরোগুলো একটি পাত্রে তুলে ফ্রিজে রেখে দিন দশ মিনিট। দশ মিনিট পর বার করে প্রথমে টুকরোগুলো ফেটানো ডিমে চুবিয়ে তুলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রেড ক্রামসে দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে তৈরি করে নিন এক এক করে। এরপর কড়াইয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিয়ে ভেজে নিলেই তৈরি ডিম-আলুর কাবাব। পচ্ছন্দমতো সস দিয়ে পাত্রে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ছবি: তর্পিণী ভুঁইঞা