No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    এপারের পাতে ওপার বাংলার আর-মাছের ভুনা 

    এপারের পাতে ওপার বাংলার আর-মাছের ভুনা 

    Story image

    মাছ বাদ দিলে বাঙালির বাঙালিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। যখন বাংলা ভাষাটাও ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি, তার ঢের আগে থেকে বাঙালি মাছ ধরছে আর খাচ্ছে। প্রাচীন আর মধ্যযুগের সাহিত্য খুঁজলে এর ভুরি ভুরি উদাহরণ মিলবে। বরিশালের মানুষ বিজয়গুপ্তর ‘মনসামঙ্গল’-এর কথাই ধরা যাক। “মৎস্য কাটিয়া থুইল ভাগ ভাগ।/ রোহিত মৎস্য দিয়া রান্ধে নলতার আগ।/ মাগুর মৎস্য দিয়া রান্ধে গিমা গাছ,/ ঝাঁজ কটু তৈলে রান্ধে খরসুন মাছ।/ ভিতরে মরিচ গুঁড়ো বাহিরে জুড়ায় সুতা,/ তৈলে পাক করিয়া রান্ধে চিংড়ির মাথা।/ ভাজিল রোহিত আর চিতলের কোল।/ কৈ মৎস্য দিয়া রান্ধে মরিচের ঝোল।”

    এইসব মাছ অবশ্য মিলত বাংলার নদীতে, পুকুরে, ঝিল কিংবা বিলে। বাজার থেকে আর-মাছ কিংবা বোয়াল এলেও অবশ্য দিব্বি শোরগোল পড়ে যায় হেঁসেলে। কত যে জিভে জল আনা অজানা পদ এইসব মাছকে ঘিরেও সম্ভব। আজকে তেমনই এক পদ। আর-মাছের ভুনা। এই পদ বাংলাদেশে অতি বিখ্যাত। তবে আগেও বলেছি, ফের বলছি—বাংলা পদের আর এপার-ওপার কী? এই পদ তাই শুধুই বাংলার পদ। বাড়িতে অতিথি এলে রেঁধে খাওয়ান, মুগ্ধ হবেনই তিনি। গ্যারান্টি।


    উপকরণ:

    আর মাছের টুকরো- ৭টা
    শুকনো লঙ্কা- ৬টা
    রসুন- ৬ কোয়া
    পেঁয়াজ কুচি- ২টো বড়ো
    ধনে গুঁড়ো- ১ চামচ
    ভাজা জিরের গুঁড়ো- ১ চামচ
    হলুদ গুঁড়ো - হাফ চামচ রান্নার জন্য, মাছ ভাজার জন্য পরিমাণমতো।
    গোটা কাঁচালঙ্কা- ৪টে 
    জল- ১ কাপ 
    সরষের তেল, নুন পরিমাণমতো। কেউ চিনি দিতে চাইলে সামান্য দিতে পারেন। 

    প্রণালি:

    শুকনো লঙ্কা ও রসুন গরম জলে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন ও তারপর শিলে বেটে নিন। মাছের টুকরোগুলোয় নুন-হলুদ মাখিয়ে নিন। কড়াইয়ে তেল দিন, তেল খুব ভালোমতো গরম হলে মাছগুলো ভালো করে ভেজে তুলে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন, খুব কড়া যাতে না হয়। এরপর ওই কড়াইতেই প্রয়োজন বুঝে তেল যোগ করুন, তেল গরম হলে পেঁয়াজকুচি দিয়ে দিন। পেঁয়াজে সোনালি রঙ ধরলে তাতে শুকনো লঙ্কা ও রসুন বাটার পেস্টটা দিয়ে কিছু সময় নেড়ে তাতে ধনে গুঁড়ো দিন। নুন, ও মশলা ধোয়া জল দিয়ে ভালোভাবে কষাতে থাকুন।

    মশলা থেকে তেল ছাড়লে মাছগুলো দিয়ে দিন। হালকা হাতে সবটা মিশিয়ে জল দিন এবং কাঁচা লঙ্কা দিন। এরপর ভালো করে কষান। জল শুকিয়ে মাখা মাখা হয়ে এলে ভাজা জিরের গুঁড়ো দিন এবং গ্যাস বন্ধ করে দিন। এতে ভাজা জিরের সুন্দর গন্ধটা থাকবে। যদি কেউ মনে করেন সামান্য গরম মশলাও যোগ করতে পারেন।  

    গরম ভাতের সঙ্গে খান অতুলনীয় স্বাদের আর মাছের ভুনা। 

    ছবি: তর্পিণী ভুঁইঞা
     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @