No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    যে দেশে বাংলার ছেলেরা একবার গেলে আর ঘরে ফেরে না 

    যে দেশে বাংলার ছেলেরা একবার গেলে আর ঘরে ফেরে না 

    Story image

    ভারত তখন ব্রিটিশ শাসনাধীন। ভাগ হয়নি বাংলাও। বাংলার ছেলেরা ব্যবসার তাগিদে তখন পাড়ি দিচ্ছে বার্মা-রেঙ্গুন দেশে। যে-দেশ আজ ‘মায়ানমার’ নামে পরিচিত। এমনকি, কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও পাড়ি দিয়েছিলেন সেখানে। বার্মা-রেঙ্গুন যাওয়ার কথা লিখেছেন উপন্যাসেও। 

    এই রেঙ্গুনকেই বাংলার মা-বোনেরা বলতেন ‘রঙ্গুম’। তাঁদের কাছে রঙ্গুম মানেই হল রহস্যে মোড়া এক রঙিন দেশ। যে দেশে বাংলার ছেলেরা একবার গেলে আর ঘরে ফেরে না। ঘরের ছেলে যাতে ‘রঙ্গুম’ না যায় তাই তাঁরা থানে মানত করতেন আর সঙ্গে ব্রত পালন করতেন। তাঁদের মনে থাকত চাপা ভয়। তাঁরা ভাবতেন, ওই দেশের মেয়েরা জাদু জানে। ঠোঁটের ডগায় ফুল নিয়ে, চোখের ইশারায় বাংলার ছেলেদের ঘায়েল করে। তাই ছেলে আর ঘরে ফেরে না। এই কারণেই মায়ের আকুতি থাকত ছেলের কাছে। ছেলেকে মা বলতেন বা অঙ্গীকার করতেন - ভালো হালের গরু দেবেন, সুন্দরী কন্যার সঙ্গে বিয়ে দেবেন, সব করবেন। কিন্তু ছেলে যেন ‘রঙ্গিলা’-র দেশে না যায়।

    এমন এক পটভূমিতেই তৈরি হয়েছিল রঙ্গুম রঙ্গিলার গান। বাংলার লোকগানের বিস্তৃত তালিকায় এই গান নেই। ভাটিয়ালি, জারি, সারি, বাউল, বিচ্ছেদীর তালিকায় এ গান স্থান পায় না। কিন্তু কেউ কেউ গাইতেন এই দুর্লভ সমাজভিত্তিক গান। তাঁদেরই একজন অনামা মহম্মদ হারুন। যাঁর সাল ঠিকুজি অধরা। তিরিশের দশকে এমন বিষয়ের একটি দুর্লভ গান মহম্মদ হারুনের কণ্ঠে ধরা হয়েছিল এইচ.এম.ভি-র রেকর্ডে। ৭৮ ঘূর্ণনেরই রেকর্ড এটি। কিন্তু আকারে ছোট। আর লেবেলের রং কমলা। রেকর্ডের গানটি এক কথায় সমাজের এক বিশেষ দলিল। বলতে গেলে, মা আর ছেলের বিচ্ছেদ বেদনার আর্তি এই গান।
     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @