ওভেন ছাড়াই বানান জিভে জল আনা খাঁটি নিরামিষ কেক

শীতের মরসুমে নলেন গুড়ের মিষ্টি, পিঠে, জয়নগরের মোয়ার পাশাপাশি কেকও আমাদের চাই-ই চাই। সাহেবরা দীর্ঘদিনের শোষণের পরে যা-যা ভালো কিছু রেখে গেছিল, তার এক্কেবারে ওপরে থাকবে এই কেক। বড়োদিন আসতে না আসতেই কলকাতার ছোটো-বড়ো বেকারির ভিতর থেকে উজিয়ে আসে কেকের পাগল করা গন্ধ। ভিড় বাড়ে কেকের দোকানে। সেই ভিড় বড়োদিন কাটলেও কমে না। গোটা শীতকালই আসলে আমাদের কেকের মরসুম। চাইলে এই কেক কিন্তু বানিয়ে ফেলা যায় বাড়িতেই। আর, তা বানাতে গেলে মাইক্রো ওভেন থাকতেই হবে—এমনটাও নয় মোটেই। কয়েকটা ছোটোখাটো জিনিস কিনতে হবে অবশ্য-- কাচের বোল, সিলিকোন স্প্যাচুলা, অ্যালমোনিয়ামের ফোয়েল বা কেকের মোল, পার্চমেন্ট পেপার ইত্যাদি। বাকিটা বাড়ির রান্নাঘরেই অনায়াসে করে ফেলা সম্ভব।
আজ তেমনই এক কেকের রেসিপি। ছোটো-বড়ো-বুড়ো সব্বার কথা ভেবে নিরামিষ কেকের কথাই থাকল প্রথমে। নিরামিষ মানে ডিম ছাড়া। এবং, আদতে এটি ফ্রুটকেক। কারণ, এই কেকের প্রধান উপকরণ কলা। সঙ্গে মিশবে চকোচিপস। ফলে, চলুন এর নাম দেওয়া যাক—চকোচিপস ব্যানানা কেক। যাদের কলা পছন্দ নয়, গ্যরান্টি দিয়ে বলছি, তারাও মজে যাবেন এই কেকের প্রেমে। স্বাদের কথা ছেড়েই দিন, খাদ্যগুণেও কমতি নয় এই কেক। বাড়িতে কড়াই বা প্রেশার কুকার আছে নিশ্চিত! ব্যাস, তাহলেই তৈরি করে ফেলুন এই জিভে জল আনা কেক। আর হ্যাঁ, চাইলে এতে জুড়তে পারেন পেস্তা, কিসমিসও। কিন্তু আমার মতে, কলা আর চকোচিপসের যুগলবন্দির সঙ্গে সেগুলো খানিক বাড়তি আর বেমানান লাগে। যাহোক, আর কথা না বাড়িয়ে নজর দেওয়া যাক রেসিপিতে।
উপকরণ:
কলা- ৩টে
মেল্টেট বাটার- ৫০গ্রাম
সাদাতেল- হাফ কাপ
দুধ- ৩ চামচ
চিনি- ১ কাপ (গুঁড়ো/আস্ত)
ময়দা- ১২০ গ্রাম
বেকিং পাউডার- ১ চামচ
বেকিং সোডা- হাফ চা-চামচ
ভ্যানিলা এসেন্স- ১ চামচ
চকোচিপস- ৬-৭ চামচ (নিজের ইচ্ছেমতো কম বেশি করা যায়)
এছাড়াও প্রয়োজন কাচের বোল, সিলিকোন স্প্যাচুলা, অ্যালমোনিয়ামের ফোয়েল বা কেকের মোল, পার্চমেন্ট পেপার, কুকার বা কড়াই।
আরও পড়ুন
বাংলার হেঁসেলের গুপ্তধন: মুলোর পাতুরি
প্রণালি:
প্রথমে যে পাত্রে কেক বানাবেন তার গায়ে ভালো করে সাদা তেল বা মাখন লাগিয়ে পাত্রের মাপ মতো পার্চমেন্ট পেপার কেটে বসিয়ে দিন। তারপর, অল্প ময়দা দিয়ে পাত্রটিকে আলাদা করে সরিয়ে রাখুন। কুকার বা কড়াই-- যাতেই করবেন, তার তলায় নুন দিয়ে মাঝারি আঁচে প্রি-হিট করে নিতে হবে মিনিট পনেরো। আর, কুকারের উপরের সিটির ঢাকনাটি অবশ্যই খুলে নেবেন। এবার, একটি কাচের বোলে কলাগুলোকে ভালো করে কাঁটা চামচ দিয়ে একবারে মিহি করে নিতে হবে। এরপর চিনি, মেল্টেট বাটার, দুধ, তেল, ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে কেক বিটার অথবা উইস্কের সাহায্যে ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে। অন্য একটি পাত্রে সরু জালির ছাকনির সাহায্য ময়দা, বেকিং পাউডার ও সোডা ছেঁকে মিশিয়ে রাখতে হবে।
এরপর, এই লিকুইড মিশ্রণটিতে অল্প অল্প করে শুকনো ময়দার মিশ্রণটি আর চকোচিপস দিয়ে স্প্যাটুলার সাহায্যে ফোল্ড করে করে ব্যাটারটি তৈরি করে নিতে হবে। এতে খানিক সময় লাগতে পারে, ফলে ধৈর্য প্রয়োজন। ব্যাটার তৈরি হলে কেক বানানোর পাত্রে ঢেলে নিন ও উপর দিয়ে কিছু চকো চিপস ছড়িয়ে দিন। এরপর, ১৫ মিনিট মাঝারি আঁচে প্রি-হিট করা কুকার অথবা কড়াইয়ে কেকের পাত্রটি বসিয়ে দিন। মিনিট ৩০-৩৫ পর ঢাকনা খুলে কেকের মধ্যে টুথপিক দিয়ে দেখে নিন। যদি টুথপিক মসৃণভাবে বেরিয়ে আসে এবং তার গায়ে কিছু না লেগে থাকে তাহলেই বুঝবেন আপনার কেক তৈরি। পাত্রটি বার করে ঠান্ডা করে নিন এবং তারপর পরিবেশন করুন সুস্বাদু চকোচিপস ব্যানানা কেক।