পুজো স্পেশাল আলুর দম—এ স্বাদ মোটে চেনা নয়

মনে পড়ে, ছোটোবেলায় মা-কে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, “আচ্ছা আলুর ‘দম’ বলে কেন?” তখনো কোনো কোনো বাড়িতে দম দেওয়া ঘড়ির দেখা মিলত। আমরা স্কুল শেষ হলেই চোঁ চোঁ দৌড় মারতাম, হাঁপিয়ে গেলে দম নিতাম। স্কুলের সামনে আচার-কাকুর গাড়ি দেখলেই পৃথিবীর সমস্ত হ্যাংলাপনা ঘিরে ধরত। “ও কাকু আরেকটু দাও না।’’ তারপর, কাগজ চাটতে চাটতে ফেরা। এরই মাঝে কোনোদিন মা টিফিনবাক্সে ভরে দিত ডুমো ডুমো আলুর দম আর নেতিয়ে পড়া লুচি। টিফিন বাক্স খুলতে না খুলতেই আলুর দম শেষ। মায়ের হাতে ম্যাজিক ছিল। কিন্তু, নামকরণ নিয়ে সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি মা। সত্যিই তো আলুর ‘দম’ কেন?
সে যাহোক, আলুর দমের সঙ্গে বাঙালির প্রজন্মের পর প্রজন্মের নাড়ীর সম্পর্ক। পোলাও হোক বা লুচি, সঙ্গে আলুর দম লাগবেই। কাশ্মীরি আলুর দমের স্বাদ কোনোদিন ফুরোবার নয়। পুজোর সঙ্গেও আলুর দমের সম্পর্ক বেশ গভীর। পুজোর ভোগে আলুর দম যাকে বলে অবিচ্ছেদ্য অংশ। এহেন চিরচেনা আলুর দমকেই নতুন স্বাদে আবিষ্কার করলে কেমন হয়? এবং পুজোর আবহেই! আজ সে হদিশই দেব। পুজো স্পেশাল আলুর দম, এক্কেবারে নতুন স্বাদে।
উপকরণ:
আলু- ৬টা (বড়ো আকারের)
কাজুবাদাম বাটা- ৭৫ গ্রাম
চিকেন মশলা- এক প্যাকেট
গোটা কাঁচালঙ্কা- ৬টা
গরম জল- দেড় কাপ
কিসমিস- ১২/১৪টা
এলাচ- ৪টে
সাদা তেল, ঘি, নুন, চিনি পরিমাণমতো
প্রণালি:
আলুগুলো ডুমো ডুমো করে কেটে প্রেসার কুকারে সামান্য নুন দিয়ে অর্ধেক সিদ্ধ করে নিন। এরপর, কড়াইয়ে প্রয়োজনমতো ঘি এবং সাদা তেল দিন (চাইলে পুরোটাই ঘি দিয়ে করতে পারেন)। খানিকটা চিড়ে নিয়ে চারটে কাঁচালঙ্কা এবং এলাচগুলো ফোড়ন দিন। এরপর কাজুবাদাম বাটা ও বাদাম বাটার পাত্রের ধোয়া জলটা দিয়ে বাদাম বাটা অনবরত নাড়তে থাকুন যাতে লেগে না যায়। বাটা থেকে খানিক তেল ছেড়ে এলে তাতে নুন ও চিনি দিয়ে কিছু সময় নেড়ে আলুগুলো দিয়ে দিন এবং জল দিয়ে ভালো করে নেড়ে ঢাকা-চাপা দিন পাঁচ মিনিট।
পাঁচ মিনিট পর ঢাকা তুলে বাকি কাঁচালঙ্কাগুলো দিন। আলুগুলো পুরোপুরি সিদ্ধ হয়েছে দেখলে ওতে চিকেন মশলা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। অন্য একটি কড়াইয়ে সামান্য ঘি দিয়ে কিসমিসগুলো ভেজে উপর থেকে ছড়িয়ে দিন। অন্যরকম এক অপূর্ব স্বাদের আলুর দম তৈরি। গরম গরম লুচি বা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন।