পার্বত্য চট্টগ্রামের সুপ্রাচীন জনগোষ্ঠী ম্রো-দের জীবনচর্চা আসমা বীথির ফটোগ্রাফিতে

বাংলাদেশ চট্টগ্রামের সুপ্রাচীন আদিবাসী গোষ্ঠী ম্রো। ম্রো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সর্বপ্রাচীন জাতি এবং বান্দরবান জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি। তাঁদের আদি নিবাস মায়নামারের আরাকান রাজ্য। ‘ম্রো’ শব্দের অর্থ মানুষ। ম্রো ভাষায় ‘ম্রো’রা নিজেদের ‘মারুচা’ বলে থাকেন। মুরুং বা ম্রো সম্প্রদায় সাধারণত প্রকৃতি পূজারী। ইহকালকেই স্বর্বস্ব জ্ঞান করেন। তাঁদের মতে পরকাল বলে কিছু নেই। ধর্মীয় বিধিনিষেধ সংবলিত বিশেষ কোনো ধর্মগ্রন্থ নেই। এঁদের ধর্মবিশ্বাসে আকীর্ণ প্রধান উৎসবের নাম “চিয়া-ছট-প্লাই” অর্থাৎ গো-হত্যা উৎসব। ম্রো জনগোষ্ঠী এখনও তাঁদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে অনেকখানি। যা পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য অধিবাসীদের মধ্যে তেমন দেখা যায় না।
এই ম্রো-দের সুখ-দুঃখের কাহিনি বুনেছেন আলোকচিত্রী আসমা বীথি। পেশায় তিনি সাংবাদিক। পাশাপাশি ২০১১ সাল থেকে যুক্ত রয়েছেন ফটোগ্রাফি মাধ্যমের সঙ্গে। কথায় কথায় আসমা বলেন, শেষ পর্যন্ত মানুষের অনুভূতিতে ‘স্মৃতি’ বেঁচে থাকার কথা। বলেন, “প্রতিমুহূর্ত বদলে যাওয়ার মধ্যে আমরা নতুন জগতে প্রবেশ করছি। সবসময় হয়তো সেটা বুঝতেও পারি না। নিদারুণ এই ব্যাপারটা ভাবায়। স্মৃতি সংরক্ষণের একটা ইচ্ছে থেকেই সম্ভবত ফটোগ্রাফি আমায় টানে।”
ছবির দর্শককে আলাদাভাবে কিছু দিতে চাওয়া নিয়ে ভাবেন না। যেভাবে যা-কিছু নিজের চোখে ভালো লাগছে, তা-ই তুলে ধরার চেষ্টা করে যান। আসমা মনে করেন, কবিতা হয়ে ওঠার মতো ছবিও হয়ে ওঠার একটা ব্যাপার আছে। তিনি বলেন, “দৈনন্দিন জীবন বা আকস্মিক যা কিছু সবই গুরুত্ব পায় আমার ছবিতে। তবে অন্তর্লোক, আবেগ এসব আবিষ্কার করতে পারলে মন্দ লাগে না।”
আজকের ছবিমহলে বাংলাদেশ। সেখানকার রূঢ় প্রকৃতির কোলে এত এত বছর ধরে মিলেমিশে আছে আদিম ম্রো জনগোষ্ঠী। আসমা বীথির এই ফটোগ্রাফগুলি তাই নিয়েই।
আলোকচিত্রীঃ আসমা বীথি