ইচ্ছের দৌড়- পর্ব ৪

“আমার সাইকেলের চাকার সঙ্গে প্রশ্ন ঘুরছে মাথায়। সমাজ আমায় মেনে নেবে তো? মেয়েদের হাতেই আমাকে মার খেতে হবে না তো? বাবা-মা অপমানিত হবে না তো? সাইকেলটা হয়তো ওখানেই থামিয়ে বাড়ি ফিরে আসতাম। কিন্তু মনের জোড়, আর যা হবে দেখা যাবে- এই চিন্তা আমায় সেদিন সাইকেল থামাতে দেয়নি। লড়াই সবসময় একারই থাকে। তারপরেই তো সবাই পায়ে পা মেলায়।”
(দ্বিতীয় পর্বের পর)
গত পর্বে লিখেছিলাম, লড়াই সবসময় একারই থাকে। আর তারপর মানুষ এগিয়ে আসেন, পা মেলান। সোশ্যাল মিডিয়াতে মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হল সেই পোস্ট। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গই নয়, সুদূর কর্ণাটকের মনিপাল থেকে বিনোদ জন নামে একজন ব্যক্তি তাঁর সাধ্যমতো সামান্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। আর তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সুদূর মনিপাল থেকে। ধীরে ধীরে সবাই জানতে শুরু করলেন। সবাই আমাকে একটাই প্রশ্ন করতে থাকেন, বাবা মা আটকায়নি? সত্যি বলতে যেদিন বাড়িতে বললাম এমন কর্মকাণ্ড করেছি, সেদিন ভেবেছিলাম, বাবা মা কি এবার রেগে যাবে? কিন্তু মা শান্ত ভাবে বলল, “খুব ভালো কাজ করেছিস। এটা দরকার ছিল।” বাবাও আমায় আর্থিক সাহায্যের কথা বলেছিল। বলেছিল, “আগে বললে আমি কিছূ টাকা দিতে পারতাম। পরে যেদিন কিনতে যাবি আমায় অবশ্যই বলিস।”
আরও পড়ুন
ইচ্ছের দৌড়- পর্ব ৩
মনের জোর বাড়ল। পড়ার টেবিল আসতে আসতে বন্ধন বাক্সতে পরিণত হল। কলকাতার ৭০টি পে অ্যান্ড ইউজ টয়লেটে এই ব্যবস্থা গড়ে তুলি। এখন বহু মানুষ পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এটাই চেয়েছিলাম আমি। আমি শুধুমাত্র কলকাতার প্যাডম্যান নই, একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসাবে কাজ করতে চাই। এই সমাজের জন্য, সমাজের মানুষগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করতে চাই। সব দায় সরকারের নয়, দেশের মানুষেরও কিছু দায়িত্ব থাকে। আর সেগুলো আমাদের কর্তব্য।
(চলবে...)