No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    খোদার ঘরের নাম কেন নাখোদা? 

    খোদার ঘরের নাম কেন নাখোদা? 

    Story image

    জাকারিয়া স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলে চিৎপুর এলাকায় রয়েছে কলকাতার প্রধান মসজিদ। নাখোদা মসজিদ তার নাম। মহানগরের সবথেকে বড়ো মসজিদ বলে একে ‘বঢ়ি মসজিদ’ নামেও ডাকা হয়। এই ধর্মস্থানের দোতলা চাতাল এতটাই বড়ো যে ইদের দিন লাখখানেক মানুষ এখানে জমায়েত হতে পারেন। প্রত্যেক জুম্মাবারেও প্রচুর মুসল্লির সমাগম হয় এখানে, প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। দেশভাগের আগে থেকেই এটি খুব জনপ্রিয়। রমজান এলে এই মসজিদের সাজ হয় দেখার মতো। মহরমের সময়ে জমকালো তাজিয়া বের হয়। লাঠি খেলা আর অস্ত্র খেলা দেখতে ভিড় জমান প্রচুর মানুষ। মসজিদকে ঘিরে দোকানপাটের আকর্ষণও কম নয়। কস্তুরীর আতর, মিষ্টি জর্দা, নকশি করা নামাজি টুপি, পাঞ্জাবি, সেরওয়ানি, বোরখা, বাদ্যযন্ত্র – হরেক জিনিসের পসরা সাজানো থাকে। 

    আগে এখানে একটি ছোটো মসজিদ ছিল। এখনকার বড়ো মসজিদটি তৈরি করেছিলেন কুচ্চি মেমন জামাত নামে গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলের সুন্নি মুসলমান সম্প্রদায়ের একটি দল। তাঁদের নেতা ছিলেন আবদুর রহিম ওসমান। এই মসজিদ বানানোর অর্থ তিনিই দান করেছিলেন। নাখোদা মসজিদ তৈরি করতে তখনকার দিনে ১৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়েছিল। আবদুর রহিম ওসমান পেশায় ছিলেন সমুদ্রের একজন বিখ্যাত নাবিক। ফার্সি ভাষায় নাবিকের একটি সমার্থক শব্দ হল ‘নাখোদা’। সেখান থেকেই এই ধর্মস্থানের নাম হয় ‘নাখোদা মসজিদ’। মসজিদের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপিত হয়েছিল ১৯২৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। আর ১৯৪২ সালে নাখোদা মসজিদ বানানোর কাজ শেষ হয়। 

    মসজিদের প্রধান ফটক বানানো হয়েছে ফতেপুর সিক্রির বুলন্দ দরওয়াজার অনুসরণে। এর জন্য টোলপুর থেকে আনা হয়েছিল গ্রানাইট পাথর। এখনকার উত্তরপ্রদেশের আগ্রা জেলায় অবস্থিত ফতেপুর সিক্রি নির্মাণ করা হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের পৃষ্ঠপোষকতায়। সেই ফতেপুর সিক্রি শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার বুলন্দ দরওয়াজা। এছাড়া সিকান্দ্রায় বাদশাহ আকবরের যে সমাধিসৌধ রয়েছে সিকান্দ্রায়, তার প্রভাবও ভালো মতো রয়েছে নাখোদা মসজিদে। লাল বেলেপাথর দিয়ে বানানো ইন্দো-সেরাসেনিক রীতির সুন্দর স্থাপত্য এটি। শ্বেতপাথরে গড়া মসজিদের ভিতর অংশটি তাজমহলের কথা মনে করিয়ে দেবে। মসজিদে রয়েছে একটি গম্বুজ, ২টি বড়ো মিনার, আর ২৫টি ছোটো মিনার। গোটা স্থাপত্য জুড়ে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো অলংকরণ। শুধু ধর্মীয় কারণেই নয়, মসজিদের সৌন্দর্য আর ইতিহাসের টানেও বহু পর্যটকের সমাগম এখানে ঘটে।

    তথ্যসূত্র - banglanews24.com, ourislam24.net. 
     

    Tags:

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @