জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা দেহভস্ম কি নেতাজি সুভাষের?

আজ থেকে ৭৪ বছর আগে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইওয়ানের তাইহোকুতে ঘটেছিল এক তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনা। হয়তো বা বিশ্বের সবথেকে রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনা সেটি। আদৌ কি সেই বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছিল? সেই দুর্ঘটনায় কি মারা গিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু? এই নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক আজও থামেনি।
ভারত সরকারের নিয়োগ করা জিডি খোসলা কমিশন জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার পর ১৮ আগস্টই তাইহোকু সেনা হাসপাতালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়। নেতাজির দেহভস্ম অন্তিম সংস্কারের জন্য জাপানের টোকিও শহরের রেনকোজি মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হলে মন্দিরের প্রধান মোচিজুকি মন্দিরের তত্ত্বাবধানে ওই দেহভস্ম রাখতে রাজি হন। নেতাজির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ১৯৪৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। তাইহোকু বিমানবন্দরে নেতাজির সঙ্গে প্লেনে উঠেছিলেন তাঁর এডিসি কর্নেল হাবিবুর রহমান। তিনি দাবি করেছিলেন যে নেতাজির একটি সোনায় বাঁধানো দাঁত ছিল, যে দাঁত মৃতদেহের সঙ্গে জ্বলে যায়নি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের দুই অফিসার জানিয়েছিলেন, ২০০২ সালে তাঁরা রেনকোজি মন্দিরে নেতাজির দেহভস্মের সঙ্গে দেখতে পেয়েছিলেন সেই দাঁত।
নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মৃত্যুরহস্য ভেদ করতে ১৯৫৬ সালে ভারত সরকার শাহানওয়াজ কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল বিমান দুর্ঘটনাতেই। ১৯৭০ সালে গঠন করা বিচারপতি জিডি খোসলা কমিশনও সেই মতকে সমর্থন করে। অন্যদিকে ১৯৯৯ সালে গঠিত বিচারপতি মনোজ কুমার মুখার্জির নেতৃত্বে মুখার্জি কমিশন সিদ্ধান্তে পৌছয় যে তাইপে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি এবং রেনকোজি মন্দিরে রাখা সেই দেহভস্ম নেতাজির নয়। তবে নেতাজির মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল বা নেতাজি এখনও বেঁচে আছেন কিনা সেই ব্যাপারে মুখার্জি কমিশন কোনো আলোকপাত করতে পারেনি।
এখনও বহু মানুষ বিশ্বাস করেন যে নেতাজির মৃত্যু হয়নি সেই বিমান দুর্ঘটনায়। কেউ মনে করেন, নেতাজি রাশিয়া চলে গেছেন। কেউ দাবি করেন, নেতাজি গোপনে ফিরে এসেছেন এই ভারতেই। আবার এরকমও বেশ কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মৃত্যু হয়েছিল বলেই মেনে নিয়েছেন।