No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা যাওয়ার পথ শশী লজের সুরঙ্গে 

    ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা যাওয়ার পথ শশী লজের সুরঙ্গে 

    Story image

    মুক্তাগাছার জমিদার কাশীকান্ত আচার্য চৌধুরী প্রয়াত হয়েছিলেন নিঃসন্তান অবস্থায়। তাঁর গিন্নি লক্ষ্মীদেবী একটি শিশুকে দত্তক নিয়েছিলেন। নাম রাখলেন চন্দ্রকান্ত। কিন্তু এই ছেলেটিও মারা যায় বড়ো অল্প বয়সে। আবার পূর্ণচন্দ্র মজুমদার নামের একটি ছেলেকে দত্তক নিলেন লক্ষ্মীদেবী। ছেলেটির নাম পাল্টে রাখা হল সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী। পরবর্তীকালে এই সূর্যকান্ত হয়েছিলেন মুক্তাগাছার জমিদার। একচল্লিশ বছর ধরে সেই পদে থাকাকালীন তিনি তৈরি করেছিলেন একের পর এক স্থাপত্য। এর আগে ‘বঙ্গদর্শন’-এ তাঁর আমলে বানানো আলেকজান্ডার ক্যাসেলের গল্প ছিল। আজ থাকছে শশী লজের কথা। সূর্যকান্তের দত্তক নেওয়া ছেলের নাম ছিল শশীকান্ত। ছেলের নামে তিনি ময়মনসিংহ শহরের মাঝখানে ৯ একর জমির ওপর তৈরি করলেন আসাধারণ সুন্দর একটি বাড়ি। সেটি শশী লজ। স্থানীয়ভাবে অবশ্য ময়মনসিংহের রাজবাড়িও একে বলা হয়।

    বাড়িটির মূল ফটকে ১৬টি গম্বুজ রয়েছে। শোবার ঘর, স্নানঘর, নাচঘর, বিশ্রামঘর, হলঘর – সব নিয়ে মোট ঘর রয়েছে ২৪টি। দোতলা বাড়ির সিঁড়িতে ছিল বিশেষ রকমের এক বাজনা। সিঁড়ি দিয়ে মানুষ চলাচল করলেই বেজে উঠত সেটি। স্নানঘরে একটা সুড়ঙ্গ আছে, লোকে মনে করে এই সুড়ঙ্গ দিয়ে ময়মনসিংহ শহর থেকে সোজা মুক্তাগাছা চলে যাওয়া যেত। ছাদ থেকে ঝুলন্ত খানিকটা একই রকমের ঝাড়বাতি রয়েছে প্রত্যেকটা ঘরে। সামনের বাগানের ঠিক মাঝখানে একটা শ্বেতপাথরের ফোয়ারা বসানো, ফোয়ারার ঠিক কেন্দ্রস্থলে গ্রিক দেবী ভেনাসের একটি শ্বেতপাথরের মূর্তি। ভেতরে বারান্দার পর সিঁড়ি পেরোলেই রঙ্গশালা। তার পাশে পরপর বিশ্রামঘর, হলঘর আর জলফোয়ারা। ফোয়ারার ওপর ঝাড়বাতি।  একটা দোতলা স্নানঘর আছে মূল ভবনের ঠিক পেছনে। উঠোন আর জলাশয়ও রয়েছে। 

    মহারাজা সূর্যকান্ত ১৯ শতকের শেষ দিকে একটি অট্টালিকা বানিয়েছিলেন ‘ক্রিস্টাল প্যালেস’ নামে। লোকে সেটাকে ‘রংমহল’ বলেও ডাকত। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাড়িটি ভেঙে পড়ে। বিশ শতকের শুরুতে মহারাজা সূর্যকান্ত একই জায়গায় শশী লজ বানানোর কাজ শুরু করান, তবে প্রাসাদ পুরোপুরি তৈরি হবার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর আমলে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয় ১৯০৫ সালে। মহারাজা সূর্যকান্ত এখানে একটা দোতলা প্রাসাদ তৈরি করিয়েছিলেন। পরে আরও কিছু ভবন যোগ করেন মহারাজা শশীকান্ত। শশী লজে যেতে হলে ঢাকা থেকে বাস ধরে যেতে হবে ময়মনসিংহ শহরে। সেখান থেকে রিক্সা কিংবা অটো বা ইজি বাইকে করে পৌঁছবেন শশী লজ বা ময়মনসিংহের রাজবাড়িতে। ট্রেনে করেও ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাওয়া যায়।

    তথ্যসূত্র – আদার ব্যাপারী, সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন, priyo.com
     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @