চা বাগানে ঘেরা হ্রদের শহর মিরিক

দার্জিলিং জেলার মায়াবী পাহাড়ি শহর মিরিক। এই নাম এসেছে লেপচা শব্দ ‘মির-ইয়ক’ থেকে, যার অর্থ ‘আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়গা’। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মিরিকের উচ্চতা প্রায় ১৭৬৭ মিটার। মনোরম আবহাওয়া আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জায়গাটিকে ভ্রমণার্থীদের কাছে প্রিয় করে তুলেছে। এখানে পৌঁছনোও খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়।
দিগন্ত বিস্তৃত চা বাগান
হ্রদের ওপর ইন্দ্রেনি পুল
মিরিকের প্রধান আকর্ষণ সুমেন্দু লেক। গভীরতা কোথাও ৩ ফুট, কোথাও বা ২৬ ফুট। হ্রদটির এক দিকে ধুপি আর পাইন গাছের জঙ্গল। আর অন্য দিকে বিশাল বাগান। দুই দিককে যুক্ত করেছে ইন্দ্রেনি পুল নামের ৮০ ফুট দীর্ঘ সাঁকো। হ্রদ ঘিরে আছে লম্বা এক রাস্তা, যেটা দিয়ে হেঁটে চারদিকের মোহময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন আপনি। গোটা লেক বৃত্তাকারে প্রদক্ষিণ করা যায়, পুরোটা সাড়ে ৩ কিলোমিটারের মতো পড়বে। ইচ্ছে করলে ঘোড়ায় চড়েও ঘুরতে পারেন। পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় এখান থেকে। আর হ্রদে নৌকোভ্রমণের মজা তো আছেই। কৃত্রিম এই হ্রদটি তৈরি করিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
ইন্দ্রেনি পুল
ঘন জঙ্গল
চারপাশে আরও কয়েকটি দেখার জায়গা আছে। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে মিশতে চাইলে মিরিক মার্কেটে চলে যান। লেকের উত্তর দিকে এটির অবস্থান। শহরের কাছে একটি ভিউ পয়েন্ট রামিতে দারা। এখান থেকে পাহাড়-সহ নিসর্গ দৃশ্য চোখে পড়ে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম রূপ এখানে পাবেন। যেতে পারেন বোকার গুম্ফায়, যা মিরিকের উচ্চতম জায়গা। এটি মিরিক মঠ নামেও পরিচিত। এই বৌদ্ধ ধর্মস্থান থেকে মিরিক এবং সুমেন্দু লেক দেখতে আসাধারণ সুন্দর লাগে। পিকনিক করতে যেতে পারেন রাই ধাপে।
হ্রদের দৃশ্য
সুমেন্দু হ্রদ
কাছাকাছি বেশ কয়েকটি চা বাগান রয়েছে। টিংলিং ভিউপয়েন্ট থেকে চা বাগানগুলির সেরা ভিউ পাবেন। উন্নত কমলালেবুর জন্য মিরিক বিখ্যাত। ঘুরে দেখতে পারেন কমলালেবুর বাগান। হ্রদের পশ্চিম দিকে জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে ‘দেবীস্থান’ নামের মন্দির। প্রচুর লোক যান সেখানে। অনেকে নেপাল সীমান্তের পশুপতিনাথ মার্কেট ঘুরে আসেন। ঘরোয়া জিনিসপত্র, ইলেকট্রনিক্সের সামগ্রী, জামাকাপড় ইত্যাদি কিনতে পারেন সেখান থেকে। এছাড়া দেখতে পারেন ডন বসকো গির্জা।
মিরিকের অবস্থান
মেঘবালিকা ট্যুরিজম প্রপার্টির অবস্থান