No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ভালো চরিত্র নাকি স্টারডম? নন্দনে জমজমাট সিনে-আড্ডা

    ভালো চরিত্র নাকি স্টারডম? নন্দনে জমজমাট সিনে-আড্ডা

    Story image

    হরে শীত পড়তেই জমে উঠেছে নন্দন (Nandan) চত্বর। উপলক্ষ ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (28th KIFF)। গত শনিবার উৎসব প্রাঙ্গনের একতারা মুক্তমঞ্চে ছিল চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম দিনের সিনে-আড্ডা। যার বিষয় – চরিত্র না তারকা! উপচে পড়া ভিড়ের নন্দন চত্বরে জমে উঠল আড্ডা। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চঞ্চল চৌধুরী, রাজ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, বনি সেনগুপ্ত, কৌশানী মুখার্জি, ঈশা সাহা এবং নাফিজা টুসি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সৌরভ দাস।

    মাধ্যম সিনেমা, তাকে ঘিরেই চরিত্র-তারকা তরজা। কে কাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে, তা এক জটিল ধাঁধা। তারকার জন্ম হয় চরিত্রের মধ্যে দিয়েই। মানুষ সেই চরিত্রকে উদযাপন করলে তবেই একজন অভিনেতা তারকা হয়ে ওঠেন। তৈরি হয় স্টারডম। আড্ডার শুরুতেই অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prasenjit Chatterjee) বলেন, “ওই বিরিয়ানি আর ভাতের পার্থক্য। একটি জীবনের অঙ্গ, অন্যটি শখের বিলাস।” তাঁর মতে তারকা ও স্টারডম দুটোই প্রয়োজন। কারণ এক জন তারকাও কিন্তু অভিনয় করতে পারেন।

    মাধ্যম সিনেমা, তাকে ঘিরেই চরিত্র-তারকা তরজা। কে কাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে, তা এক জটিল ধাঁধা। তারকার জন্ম হয় কি চরিত্রের মধ্যে দিয়েই?

    ব্যবসার প্রসঙ্গ টেনে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakravorty) বলেন, “স্টারডমের প্রয়োজন আছে ব্যবসার জন্য, তবে তারকা সৃষ্টি করে চরিত্ররাই।” অন্যদিকে যেমন বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী নিজেকে ‘স্টার’ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “অভিনেতারা শেষ পর্যন্ত অভিনয়ই করতে চান। আমার শেষপর্যন্ত ভালোলাগা অভিনয়, স্টারডম নয়। স্টারডম ভালোলাগে, কিন্তু সবকিছুর আগে অভিনয় জানাটা জরুরি।”

    চমৎকার বলেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। যাঁকে হালআমলে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখতে অভ্যস্ত বাঙালি দর্শক। সর্বোপরি যিনি একজন চরিত্রাভিনেতা থেকেই ‘তারকা’ হয়ে উঠেছেন। অনির্বাণ বলেন, “দর্শকের সঙ্গে অভিনেতার যে বিশ্বাসের সম্পর্ক, তা-ই নক্ষত্র রচনা করে। এ এক অলীক ভালোবাসা। ছোটোবেলায় আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় ‘নমস্কার, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বীরপুরুষ’ এইটুকু বলে বেরিয়ে এসেছিলাম। তার পরেও আজকে যা পেয়েছি আমার কাছে সেটাই যথেষ্ট।’’

    বনি, কৌশানী, ঈশা, বাংলাদেশের নাফিজা টুসি – তুমুল আড্ডা থেকে উঠে আসে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ। একে অপরের বক্তব্য কেউ মেনে নিলেন, কেউ মানতে চাইলেন না। কারোর কারোর বক্তব্য শোনার পর দর্শকদের মধ্যে থেকে উঠে এল হাততালি।

    তারার আলোয় থাকতে হয়তো সকল অভিনেতাই চান। দর্শকরা সেই অভিনেতাকে নিয়ে যেভাবে উদযাপন করেন, তা কি অভিনেতা উপভোগ করেন না! নিশ্চয় করেন। তবে সবার আগে জরুরি অভিনয়টা জেনে আসা। জীবনকে ছাপিয়ে যাওয়া অভিনেতার কাজ। এই আড্ডার শেষে সকলেই একমত হন, আসলে গল্প, চরিত্র, পরিচালক, কলাকুশলী প্রত্যেকেই একাধারে ‘স্টার’। সুযোগ নয়, যোগ্যতা অর্জন – তার মধ্যে দিয়েই একজন প্রকৃত তারকার জন্ম হয়।

    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের তিনদিন পেরিয়ে গিয়েছে। গত তিনদিনে সবথেকে বেশি ভিড় হয়েছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ছবি দেখার জন্য। তাদের মধ্যে অবশ্যই থাকবে লুকাস ধন্তের (Lukas Dhont) ‘ক্লোজ’ (বেলজিয়াম), জাফার পানাহির (Jafar Panahi) ‘নো বেয়ারস’ (ইরান), কিম কি-দুকের (Kim Ki-Duk) ‘কল অফ গড’। এছাড়া বাংলাদেশের বহু প্রশংসিত ছবি মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ দেখার জন্য দর্শকদের উচ্ছ্বাসও ছিল দেখার মতো। চলচ্চিত্র উৎসব চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন একতারা মঞ্চে বসবে সিনেমার আড্ডা।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @