No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    লেপচাজগৎ – নৈঃশব্দের স্বর্গরাজ্য 

    লেপচাজগৎ – নৈঃশব্দের স্বর্গরাজ্য 

    Story image

    মনে করুন, শরতের শেষ কিংবা শীতের এক সকাল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ের স্বাদ নিলেন। তারপর রওনা হলেন পাহাড়ি রাস্তায়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলেন লুকিয়ে থাকা এক রূপকথার রাজ্যে।

    রাজকীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেয় মোহময় রূপে

    লেপচাজগৎ – পাহাড়ে ঘেরা আদিবাসী গ্রাম। পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের নেচার রিসর্ট রয়েছে সেখানে। ঘুম-মিরিক রোড ধরে দার্জিলিং থেকে দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের মতো। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পৌঁছতে ৩ ঘণ্টার কাছাকাছি লাগবে। আপনি সহজেই গাড়ি ভাড়া পেয়ে যাবেন। বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল পেরোলে, পাহাড় যখন প্রথম চোখে পড়বে, উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারবেন না। রাস্তা ওপরের দিকে উঠলে ঘুম পর্যন্ত দার্জিলিংয়ের রাস্তা নিন। মিনারেল ওয়াটার-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

    পাহাড়ি পথ 

    এক মনোরম উপত্যকার শেষ প্রান্তে অবস্থান করছে লেপচাজগৎ। দেবদারু আর ইউক্যালিপটাসের জঙ্গলে ঘেরা। রিসর্টের পথে যখন হাঁটবেন, ঠান্ডা হাওয়া আপনাকে স্পর্শ করে যাবে। নৈঃশব্দ এত গভীর, যা খানিকটা বধিরতার মতো লাগতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের এই অতিথিশালা ব্রিটিশরা তৈরি করেছিলেন উনিশ শতকে। বিশাল প্রশস্ত চত্বর। ঘর এবং সুইটগুলি ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন। আকাশ যদি পরিষ্কার থাকে, রাজকীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা আপনার চোখ এড়াবে না। পাঁচটি শিখরই দেখতে পাবেন স্পষ্ট।

    গভীর নৈঃশব্দের জগৎ 

    গেস্ট হাউজ ছাড়াও আশেপাশে কিছু হোম-স্টে রয়েছে। লেপচাজগতে যাওয়ার সবথেকে উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে এপ্রিল। 

    নাম থেকেই বোঝা যায়, গ্রামটিতে লেপচা জনজাতির বাস। এঁরা সিকিমের আদিনিবাসী উপজাতি। এখন তাঁদের সংখ্যা ৫০ হাজারের কাছাকাছি। লেপচাজগৎ গ্রামের চারদিকে রয়েছ ঘন অরণ্য। তাতে ওক, পাইন, রডোডেনড্রন – কত রকমের গাছ। নির্জন জঙ্গলে হাঁটলে মন ভরে যাবে, সুমধুর অভিজ্ঞতা স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে সারা জীবন। তবে সন্ধে হয়ে গেলে বনের দিকে না যাওয়াই ভালো। 

    লেপচাজগৎ গ্রামের চারদিকে রয়েছ ঘন অরণ্য

    ইচ্ছে করলে পাহাড় বেয়ে নিচে নামতে পারেন, উপভোগ করতে পারেন প্রকৃতির অঢেল সৌন্দর্য। লেপচাজগৎ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ঘুম রক, যার উচ্চতা ৭৯০০ ফুটের মতো। সূর্যোদয়ও দেখা যায় সেখান থেকে। রাতের কালো আকাশ আলোয় ভরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝলমলিয়ে ওঠে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ। সিবিয়া, সানবার্ডের মতো নানা বিদেশি পাখির দেখাও মিলবে লেপচাজগতে। ফটোগ্রাফির দারুণ সুযোগ পাবেন।

    লেপচাজগতের অবস্থান 

    রাত্রিবেলা ফায়ারপ্লেসের ধারে যখন বিশ্রাম নেবেন, একমাত্র ঝিঁঝি পোকার ডাক ছাড়া আর কোনো শব্দ থাকবে না।

    নির্জন জঙ্গলে হাঁটলে মন ভরে যাবে 

    সময়-সুযোগ মতো গাড়ি নিয়ে চলে যান দার্জিলিং। লেপচাজগৎ থেকে চার ঘণ্টার মতো লাগবে সামসিং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ প্রকল্পে যেতে। কালিম্পং-ও ঘুরে আসতে পারেন, নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে পড়বে।
     

    কীভাবে যাবেন
    যতদিন না রেল চলাচল নিয়মিত শুরু হচ্ছে, আকাশপথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে যেতে পারেন। সেখান থেকে গাড়িতে লেপচাজগৎ। সরাসরি কলকাতা থেকেও গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। থাকার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন –
    West Bengal Tourism Development Corporation Ltd
    DG Block, Sector-II, Salt Lake
    Kolkata 700091
    Phone: (033) 2358 5189, Fax: 2359 8292
    Email: visitwestbengal@yahoo.co.in, 
    mdwbtdc@gmail.com, 
    dgmrwbtdc@gmail.com

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @