No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    পুতুল বাড়ির ভূত!  

    পুতুল বাড়ির ভূত!  

    Story image

    ভূত আছে কি নেই, সেই বিতর্ক অনেক পুরোনো। তবে যুক্তি আর বিশ্বাসের ধুন্ধুমার থেকে বেরিয়ে এটুকু বলা যায়, ভূতের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরকালীন। গা ছমছমে ভূতের গল্প উপভোগ করেন না, সেরকম মানুষ বিরল। শুধুমাত্র সাহিত্যে নয়, মানুষ ভূতের গল্প খুঁজে বেড়ায় পোড়ো বাড়িতে, নির্জন রাস্তায়, পুরোনো গাছে এবং আরও নানান জায়গায়। আমাদের মহানগরেই ভূতুড়ে বলে চিহ্নিত রয়েছে বেশ কিছু স্থান। যেমন ধরা যাক রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন। মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে বেশিরভাগ আত্মহত্যা নাকি এখানেই ঘটেছে। হেস্টিংস হাউসেও নাকি দেখা যায় নানান ভৌতিক কার্যকলাপ। তেমনই, রাইটার্স বিল্ডিং, আকাশবাণী ভবন, সাউথ পার্ক গোরস্থান, ন্যাশানাল লাইব্রেরিতেও ভূতের উপস্থিতি নিয়ে গল্প প্রচলিত আছে।

    কলকাতার ভূত নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন,তাঁদের মতে এই শহরের সবথেকে ভূতুড়ে জায়গাদের মধ্যে অন্যতম হল পুতুল বাড়ি। উত্তর কলকাতার আহিরিটোলায় হরচন্দ্র মল্লিক লেনে এই বাড়ির অবস্থান। রোমান শৈলীর এই বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল সম্ভবত ১৮ শতকের শেষে কিংবা ১৯ শতকের শুরুতে। পুরোনো কলকাতায় পণ্য আসত নদীপথে, সেগুলো জমা থাকত ঘাটের আশেপাশে গুদামে। আহিরিটোলা ঘাটের কাছে এই বাড়িটাকে গুদামঘর হিসেবে ব্যবহার করা হত। 

    তখন বাবু সংস্কৃতির যুগ। ১৯ শতকের গোড়ায় ধনী বাবুরা এই বাড়িতে থাকতেন। লোকমুখে শোনা যায়, বাবুরা এখানে মানুষকে অত্যাচার করতেন, এমনকি মেরেও ফেলতেন। অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার প্রতিধ্বনিত হত বাড়ির কোণে-কোণে। এই বাড়ির মালিক এক বাবু জোর করে দাসীদের শ্লীলতাহানি করতেন। কয়েকজন দাসী এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। তাঁদেরকে খুন করে শবদেহ পুঁতে ফেলা হয় বাড়ির পিছনে। 

    এই বাড়িতে খুন হওয়া লোকেদের অতৃপ্ত আত্মা নাকি বাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায় আজও। লোকে বলে, মধ্যরাতে এই বাড়ি থেকে শোনা যায় কান্নার শব্দ। বাড়িতে অশরীরী ছায়ামূর্তির উপস্থিতিও টের পেয়েছেন কেউ কেউ। অবশ্য বহু মানুষই এগুলোকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়ির এখনকার বাসিন্দারাও চান না, ভূতের প্রতি যথা কৌতূহল নিয়ে যে কেউ বাড়িতে ঢুকে পড়ুক। তাই বাড়ির গেটে এক নোটিশ ঝোলানো। সেখানে লেখা, “কঠোরভাবে প্রবেশ নিষেধ”। নোটিশে বলা হয়েছে, এই বাড়ি নিয়ে প্রচলিত ভূত সংক্রান্ত তথ্যগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যে। পুতুল বাড়িতেই ১৯৯২ সালে ‘সিটি অফ জয়’ ছবির শুটিং হয়েছিল। ভগ্নপ্রায় দশা নিয়ে সেই বাড়ি এখনও পুরোনো কলকাতার স্মৃতিকে বহন করে চলেছে।

    তথ্যঋণ – দৈনিক আজাদি, থ্রিলার মাস্টার, এবেলা।  
     

    Tags:

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @