৯ বছরেই কলেজের পাঠ নিচ্ছে বাঙালি বংশোদ্ভূত বিস্ময় বালক

স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষকের মধ্যাকর্ষণ সম্বন্ধে জ্ঞান কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বাচ্চা ছেলেটি। যার ফলে সে শিক্ষকদের রোষে পড়ে গেল। আইকিউ টেস্টে বসানো হল তাকে। কিন্তু ফলাফল দেখে শিক্ষক থেকে অভিভাবক সবাই তাজ্জব। ছেলেটির গড় আইকিউ ৯৯.৯৯%। আবেগজিত বুদ্ধিমত্তাও যে কোনো মানুষের থেকে বেশি তার। সেই ছেলে অবশ্য আইকিউ টেস্টের ফলাফলে খুশিই হল। সে বুঝতে পেরেছিল, আগে যারা থেকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনত না, এবার থেকে তাকে সমীহ করে চলবে তারা। ঘটেছিলও তাই। মাত্র ৯ বছর বয়সে স্কুলের ফোর্থ গ্রেড থেকে সরাসরি তাকে ভর্তি করা হল লাস পজিটাস কলেজে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের গণিত ও রসায়ন নিয়ে সেখানে পড়াশোনা করছে সে।
এই বিস্ময় বালকটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। নাম কাইরান কাজি। জন্মসূত্রে বাঙালি বংশোদ্ভূত সে। তার মায়ের নাম জুলিয়া চৌধুরী কাজি এবং বাবার নাম মোস্তাহিদ কাজি। কাইরনের পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা। মাত্র ৩ বছর বয়সে ক্লাসরুমে শিক্ষকদের ভুল শুধরে দিত সে। মার্কিন মুলুকে যেখানে শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হওয়ার গড় বয়স ১৭ থেকে ১৯, সেখানে মাত্র ৯ বছর বয়সে কলেজের ক্লাস শুরু করায় কাইরানের এই আশ্চর্য ক্ষমতাকে হাফিংটন পোস্ট সবার প্রথমে জনসমক্ষে তুলে ধরে। হাফিংটন পোস্ট কাইরানকে নিয়ে খবর করার পর সমস্ত আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে এই বিস্ময় বালকের নাম। তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় আমেরিকার জনপ্রিয় টিভি শো গুড মর্নিং আমেরিকাতে। ইতিমধ্যেই ডেভিডসন ইন্সটিটিউট ইয়ং স্কলারের তালিয়ায় নাম উঠেছে তার।
এত কম বয়সে কলেজে ভর্তি হয়ে কাইরান অবশ্য সহপাঠী এবং শিক্ষকদের থেকে আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধে প্রত্যাশা করেনি। প্রথম দিন কলেজে যাওয়ার আগে শিক্ষকদের সে ই-মেল করে দিয়েছিল, ক্লাসরুমে তাকে দেখে যেন তাঁরা বিভ্রান্ত না হন। সে নিজে গিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে। এখন পড়াশোনার ব্যাপারে তার থেকেই পরামর্শ নেয় বয়সে অনেক বড়ো সহপাঠীরা। কলেজের লেখাপড়া তো আছেই, তার পাশাপাশি এখন সে বাংলা আর ম্যান্ডারিন ভাষা শিখছে। কম্পিউটার আর মেশিং লার্নিং-এ মাত্র ৭ বছর বয়সেই দক্ষতা অর্জন করেছিল কাইরান। রাজনীতির প্রতিও আকর্ষণ তার রয়েছে। টিভিতে নিয়মিত রাজনৈতিক বিতর্ক শোনে। সিরিয়ার বাশার-আল-আসাদের রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে কথা বলে তাক লাগিয়ে দিতে পারে সবাইকে। যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা সুযোগের অভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না, তাদের জন্য কিছু করতে চায় সে। তবে সারাদিন বইয়ে মুখ গুঁজে বসে থাকার ছেলে কাইরান নয়। ওই বয়সের আর ৫টা ছেলের মতোই সে দুরন্ত আর ছটফটে।