দূষণ রুখে বাঙালির ভরসা জিতে নিয়েছে অ্যাপভিত্তিক এই সাইকেল পরিষেবা

মনে করুন, আপনি কোনো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। জরুরি দরকারে সেই প্রতিষ্ঠানের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে চান, সেই দূরত্ব অতিক্রম করতে বেশ খানিকটা সময় এবং পরিশ্রম ব্যয় করতে হবে। তখন আপনি হাতের কাছে পেয়ে গেলেন একটি সাইকেল। স্মার্টফোনের এক নির্দিষ্ট অ্যাপের সাহায্যে তাকে আনলক করলেন। তারপর সেটা চড়ে পৌঁছলেন নির্দিষ্ট জায়গায়। সেখান থেকে আরেকজন স্মার্টফোন ব্যবহার করে ওই সাইকেল নিয়ে নিজের গন্তব্যে চলে গেল। সামান্য অর্থের বিনিময়ে যাতায়াতের সাবলীল এক বন্দোবস্ত। কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নয়, শহরের ব্যস্ত পথেও মিলছে এই ধরনের পরিষেবা। এরকমই রাইড শেয়ারিং সিস্টেম গড়ে উঠেছে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে। সেখানে জোবাইক নামের একটি সংস্থার উদ্যোগে পরিবেশ-দূষণ রোধে অনন্য দিশা এনেছে অ্যাপভিত্তিক এই পরিষেবা।
আরও পড়ুন
দু’শো বছর ধরে জমজমাট ঘিওরে নৌকোর হাট
জোবাইকের প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী রেজা। পেশায় তিনি আলিবাবা ই-কমার্স সাইটের কর্মী। কাজের সূত্রে চিনে থাকেন। একবার ঢাকার মতিঝিল এলাকার রাস্তায় প্রবল জ্যামে পড়েন তিনি। তখনই এরকম অ্যাপভিত্তিক সাইকেল পরিষেবার কথা তাঁর মাথায় আসে। ২০১৮ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ‘জোবাইক’ চালু করা হয় কক্সবাজারে। তারপর জাহাঙ্গিরনগর, চট্টগ্রাম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই পরিষেবা সফলভাবে মানুষ গ্রহণ করতে থাকে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তায় মিলছে জোবাইকের সুবিধে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিষেবা দেওয়া শুরু করল বাংলাদেশের প্রথম এই অ্যাপভিত্তিক বাইসাইকেল সিস্টেম।
আরও পড়ুন
বাংলার মাটিতেই রয়েছে আরেক তাজমহল
জোবাইকের সাইকেলগুলো ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই ব্যবহার করতে পারে। এই সাইকেলগুলোতে আছে অত্যাধুনিক লক, সোলার প্যানেল, জিপিএস। যার ফলে স্মার্টফোনেই যে কোনো সাইকেলের অবস্থান জানা সম্ভব হয়। সাইকেল চুরি গেলেও খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। জোবাইকের বাইসাইকেল ব্যবহার করতে গেলে সবার আগে গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিতে হয় জোবাইক অ্যাপ। সেই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে স্ক্যান করতে হবে সাইকেলের সঙ্গে থাকা কিউআর কোড। অ্যাপের মাধ্যমে সাইকেলের লক খুললে রাইডের মূল্য গণনা শুরু হবে। তারপর নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যখন সেই ব্যবহারকারী আবার সাইকেলটা লক করবেন, তখন শেষ হবে রাইড। জোবাইকের অ্যাপ থেকে রিচার্জ করার টাকাতেই রাইডের ভাড়া পরিশোধ করা যায়। বাংলাদেশের এটাই প্রথম অ্যাপভিত্তিক সাইকেল পরিষেবা।
তথ্যসূত্র – কালের কণ্ঠ, ঢাকা টাইমস