No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    জহুরা মন্দিরে মূর্তির নিচে ধনরত্ন লুকিয়ে রাখত ডাকাতরা

    জহুরা মন্দিরে মূর্তির নিচে ধনরত্ন লুকিয়ে রাখত ডাকাতরা

    Story image

    মালদা জেলার ইংরেজবাজার থানা এলাকায় রয়েছে এক প্রাচীন কালীমন্দির। সারা বছর এখানে পুজো চললেও বৈশাখ মাসের মঙ্গল ও শনিবার থাকে বিশেষ পুজোর আয়োজন। তখন ভক্তদের আনাগোনা অনেক বেশি হয়। গ্রামীণ এই মন্দিরে পুজোর সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হন। বৈশাখ মাসে খুব বড়ো মেলা বসে এখানে। অন্যান্য কালীমন্দিরের মতো রাত্রিবেলা কোনো পুজো এখানে হয় না। সব পুজোই হয় দিনের আলো থাকাকালীন। কেবলমাত্র শনি আর মঙ্গলবারেই হয় পুজো। এই মন্দিরের নাম জহুরা বা জহরা কালীমন্দির। কালীর এক রূপ দেবী চণ্ডী। তাঁরই আরাধনা হয় এখানে।

    জহরা কালীর পুজো এখানে কীভাবে শুরু হল? এই নিয়ে রয়েছে অনেক মত। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, সেন যুগের রাজা বল্লাল সেন এই অঞ্চলে অনেকগুলি মন্দির স্থাপন করেছিলেন। সেগুলির মধ্যে একটি হল এই মন্দির। আবার মন্দিরের গায়ে যে পাথরের ফলক আছে, তা থেকে অনুমান করা যায়, মোটামুটি ৩০০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের এক সাধক এখানে গড়ের ওপর দেবী জহরা চণ্ডীর বেদি স্থাপন করেছিলেন। তিনি নাকি এই কাজ করেছিলেন স্বপ্নাদেশ পেয়ে। পরবর্তীকালে হীরারাম তিওয়ারি নামের এক সাধক দিব্যদর্শনে দেবীর রূপ প্রত্যক্ষ করেন।

    সেই অনুযায়ী তিনি মূর্তির রূপলেখা তৈরি করেন বৈশাখ মাসে। তা কিন্তু প্রচলিত মূর্তিগুলির মতো নয়। লাল রঙের ঢিবির ওপর রয়েছে এক মুখোশ। ঢিবির দু’পাশে আরও দু’টি মুখোশ দেখা যায়। এছাড়া গর্ভগৃহে আছে শিব আর গণেশের মূর্তি। বৈশাখ মাসে দেবী জহরার পুজো এভাবেই প্রচলিত হয়। তিওয়ারিরাই বংশানুক্রমে এখনও দেবীর সেবায়েত।

    অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন, অনেক আগে দেবী জহরার পূর্ণাবয়ব বিগ্রহ ছিল এখানে। বিধর্মীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পুরোহিতরা সেই মূর্তিকে মাটি চাপা দিয়ে দিয়েছিলেন। অনেক অনেক বছর আগে খুব ঘন জঙ্গল ছিল এই অঞ্চলে। বহু মানুষ বিশ্বাস করেন, এই দেবী এক সময়ে ছিলেন ডাকাতদের আরাধ্যা। এখানে দেবী চণ্ডীর পুজো করে ডাকাতরা যেত ডাকাতি করতে। ডাকাতি করে প্রচুর ধনরত্ন আনত তারা, তারপর সেগুলোকে এখানেই মাটির তলায় রাখত। সেই ধনরত্নের ওপরই দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধনরত্নকে হিন্দিতে বলে ‘জওহর’। দেবীমূর্তির নিচে প্রচুর ধনরত্ন রাখা থাকত বলেই এখানে দেবী চণ্ডী ‘জহরা’ বা ‘জহুরা’ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছেন।  

    তথ্যঋণ – আজ বাংলা, নিউজবিডি, কলকাতা 24x7, নিউজ ফ্রন্ট। 
    ছবিসূত্র – ফেসবুক 

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @