৫২ বছর বয়সে উচ্চমাধ্যমিক, রেজাল্ট আসার পর চওড়া হাসি রহড়ার এই গৃহবধূর

৫২ বছর বয়সী প্রতিমা চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা। আর পাঁচজন গৃহবধূর মতোই ঘর-সংসার করে কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু জীবন তাঁর কাছে অনেক বিস্তৃত। তাই নাতনির মতো মেয়েদের সঙ্গে বসে পাশাপাশি ক্লাস করেছেন। এ বছর উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিলেন। ২৫৯ নম্বর পেয়ে পাশ করায় তিনি স্বভাবতই খুশি।
অনেক বছর আগের কথা। মাধ্যমিকে পরীক্ষা দিতে দিতেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল প্রতিমাদেবীর। বিয়ের পর মাধ্যমিকের ফল বেরোলে দেখা যায় অকৃতকার্য হয়েছেন তিনি। সেই থেকে লেখাপড়ায় ইতি। কিন্তু, কলেজে না যেতে পারার আক্ষেপ তাঁকে চিরকাল ভাবিয়েছে। বড়ো ছেলে তাঁকে বলেছিলেন, তিনি বড়ো হয়ে পড়াবেন।
২০১৭ সালে একটি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে মাকে মাধ্যমিকের কোর্সে ভরতি করিয়েছিলেন বড়ো ছেলে। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের জন্যও ভর্তি করিয়েছিলেন। রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক দেওয়া নির্বিঘ্নে হলেও সমস্যা হয় একাদশ শ্রেণিতে স্কুল পেতে গিয়ে। ৫২ বছরের মহিলাকে রেগুলার ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে স্কুলে ভর্তি করার কথা শুনে চমকে যায় স্কুলের কর্তৃপক্ষ। প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয় সর্বত্র। উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট আসার পর দেখা যায় পরিবেশবিদ্যা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রত্যাশার থেকে কম নম্বর এসেছে। তাই এই দু’টি বিষয় রিভিউ করতে দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি কলেজে ভর্তি হওয়ার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। প্রতিমাদেবী এবং তাঁর মতো অসংখ্য মহিলা, যাঁরা জীবনযুদ্ধে থেমে না থেকে লড়াইকে গ্রহণ করেছেন হাসিমুখে, বঙ্গদর্শন তাঁদের কুর্নিশ জানায়।
ছবি সৌজন্যেঃ সংবাদ প্রতিদিন