ঘরছাড়া হিন্দু বৃদ্ধাকে আশ্রয় দিল কাঁথির মুসলিম পরিবার

১৩ সন্তানের জননী হয়েও ছেলেদের সংসারে জায়গা পাননি ৯৫ বছরের বৃদ্ধা বেলা রানি দেবী। সাকিনার বিবির ঝুপড়িতে তিনি নতুন করে পরিবার খুঁজে পেয়েছেন।
বেলা রানি দেবী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির খড়কি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামীর মৃত্যু হলে তাঁর ছেলেমেয়েদের মধ্যে জমির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। তারই ফলশ্রুতিতে বছর চারেক আগে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বৃদ্ধাকে। মেয়ে শোভা রানি দেবীকে নিয়ে এক ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। শোভা দেবী ঘরে ঘরে পরিচারিকার কাজ করতেন। এতেই দু’জনের পেট কায়ক্লেশে চলে যেত।
এরই মধ্যে কঠোর পরিশ্রমের জেরে শোভার শরীর ভাঙতে শুরু করে। স্নায়ুর রোগ দেখা দেয় তাঁর। এক রাস্তা দুর্ঘটনায় বেলা রানি গুরুতর আহত হলে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে ওঠে। রোজগার বন্ধ হয়ে যায় পুরোপুরি। ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ি থেকে তাঁদের বের করে দেন বাড়িওয়ালা। এরকমই বিপদের সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান সাকিনা বিবি। কাঁথির উত্তর দারিয়ায় নিজের ঝুপড়িতে যত্ন করে নিয়ে যান মা-মেয়েকে।
সাকিনা নানা জায়গায় পরিচারিকার কাজ করে, চারাগাছ বিক্রি করে খুবই কষ্টে সংসার চালান। তবুও অসহায় মা-মেয়েকে আশ্রয় দিতে তিনি দ্বিধা করেননি। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বেলা রানি সাকিনার স্বামীর পূর্বপরিচিত।
বেলার ছেলে-বৌ-নাতি-নাতনিরা অবশ্য বলছেন, বেলা রানি দেবীকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। নিজের ইচ্ছেতেই বৃদ্ধা ঘর ছেড়েছেন মেয়েকে নিয়ে। বারবার তাঁকে বাড়ি ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি ফেরেননি। তবে বেলা রানি এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।