No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    দূরন্ত আদা কিংবা হোক চিনি শূন্য, হরিদার চা ধন্য ধন্য 

    দূরন্ত আদা কিংবা হোক চিনি শূন্য, হরিদার চা ধন্য ধন্য 

    Story image

    বাঙালির চা প্রীতি কে না জানে! বিশেষত এই শীতকালের দিনগুলোয় দুধ, চিনি, এলাচ, আদা সহযোগে ভাঁড়ে চা... আহা! তুলনাহীন। তেমনই কলকাতার আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসের পাশে ধন্য ধন্য হরির চা। এখন আমরা চা দিবস পালন করি ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু এই দোকানের সামনে গেলেই বুঝতে পারবেন শুধুমাত্র একটা দিনে জাস্ট কিচ্ছু এসে যায় না। সারাবছর তাই চা দিবস এবং চা পান। হরিদা আমাদের স্বজন। হরিদা নাট্যবন্ধু। সবাই তাঁকে হরি নামে চিনলেও, তাঁর ভালো নাম রঞ্জিত বারিক। ১৯৫৭ সালে এমনই এক শীতের দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। এবার আপনারা ভাবতেই পারেন ‘এমনই এক শীতের দিনে’ কেন বললাম? কারণ জন্ম তারিখ হরিদা নিজেই জানেন না। অনেক আগে তালপাতায় কুষ্ঠি দেখার রীতি ছিল, তাই পরবর্তীতে সেই কুষ্ঠি নষ্ট হয়ে যেত। হরিদারও হয়তো তাই হয়েছে।

    মাত্র সাত বছর বয়সে হরিদা তাঁর গ্রাম থেকে কলকাতা শহরে পালিয়ে আসেন ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দার সঙ্গে। সেই বয়সে রাসবিহারীর ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। উপার্জনের তাগিদ সেই ছোটো থেকেই। মাত্র কয়েকদিন সেই দোকানে কাজ করার পর হরিদা রবীন্দ্রসদন এলাকায় চলে আসেন। গাড়ি মোছা থেকে লেবু-জল বিক্রি করার পর পরিকল্পনা করলেন চায়ের দোকান দেবেন। তাই আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসের পাশে ওই একফালি জায়গাটি বেছে নিলেন। খুললেন একটি চায়ের দোকান। তাঁর ডাকনাম অনুসারে সেই দোকানের নামও হয়ে গেল হরির চা। 


    এই সেই দোকান। এখনও রমরমিয়ে ব্যবসা করেন প্রতিদিন। নাট্যস্বজন থেকে সিনেপ্রেমী, বইপড়ুয়া থেকে কবি-লেখক, পরিচালক থেকে উঠতি অভিনেতা সক্কলের মুখে মুখে ফেরে হরিদার নাম। সামনের বিশাল ডাস্টবিন উপচে পড়ে মাটির ভাঁড়ে। 

    রবীন্দ্রসদন-নন্দন চত্বর মানে ভিড় থাকবেই। বিশেষত প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধে মানুষের ভিড়ের বন্যা এখানকার প্রাণ। যদিও বর্তমান পরিস্থিতি সুখকর নয়। ফলে ভিড়ও নেই আগের মতো। এটি কলকাতার এমন একটি চত্বর, যেখানে সারাবছর কিছু না কিছু অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। তাই হরিদার ব্যবসায় ভাঁটা পড়েনি কোনোদিন। হরিদা এখন কলকাতার কুঁদঘাটের বাসিন্দা।

    রবীন্দ্রসদন-আকাদেমি চত্বরকে বলা হয় থিয়েটার পাড়া। বছরের পর বছর এই মানুষটার নাম প্রতিটি থিয়েটার কর্মীর মুখে মুখে লেগে থাকে। আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসের কোনো এক্সজিবিশন বা থিয়েটারে ঢুকতে যাওয়ার আগে একবার তো হরিদার চায়ের দোকানের সামনে থমকে যেতেই হয়। এই থমকানো কি শুধু আমার? নাকি আপনাদেরও? হ্যাঁ, আসলে সবাইকেই একবার থমকাতেই হয়। কারণ এক্ষেত্রে তা অমোঘ। অমোঘ বলেই তো তাঁরা আমার আপনার জীবনে জুড়ে বসে যান। ধন্য ধন্য হরিদার চা-কে স্যালুট।

    তথ্যঋণ- থিয়েটার ক্যাফে

    Tags:

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @