No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    বাতিল জিনিস দিয়ে মিনিয়েচার আর্ট – জাদু দেখাচ্ছে বিষ্ণুপুরের কিশোর   

    বাতিল জিনিস দিয়ে মিনিয়েচার আর্ট – জাদু দেখাচ্ছে বিষ্ণুপুরের কিশোর   

    Story image

    শিল্পীর কাছে কোনো কিছুই ফেলনা নয়। যা কিছু অন্য মানুষের নজর এড়িয়ে যায়, তার মধ্যেই শিল্পী খুঁজে পেতে পারেন নান্দনিকতার সম্ভাবনা। সেগুলি দিয়েই গড়ে তুলতে পারেন অসাধারণ কোনো শিল্পকর্ম। গৃহস্থ বাড়িতে প্রচুর বাতিল জিনিস থাকে। বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র তন্ময় চন্দ্র সেগুলিকে ফেলে না দিয়ে কাজে লাগায়। পুরোনো জিনিস থেকে নিজের হাতে বানিয়ে তোলে অবাক করা নানান সামগ্রী।

    বাড়ির বর্জ্য জিনিসপত্র দিয়ে তন্ময় মিনিয়েচার আর্ট গড়ে তোলে 

    বিষ্ণুপুরের বড়ো কালীতলার বাসিন্দা তন্ময়। প্রথাগত শিক্ষাজীবন শুরু করেছিল স্থানীয় নরেন্দ্রনাথ বিদ্যা মন্দির থেকে। ২০০৯ সালে যখন তার ১১ বছর বয়স, ছবি আঁকা শিখতে বিষ্ণুপুরের কুসুমতলায় ‘শিল্পচেতনা’ নামের এক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিল। তখন থেকেই সৃজনের অদম্য তাকে পেয়ে বসতে থাকে। সেখানকার প্রশিক্ষক সোমনাথ চন্দ্রের কাছে ছবি আঁকা ছাড়াও বিভিন্ন রকম হস্তশিল্পের তালিম নেওয়া শুরু করে। সোমনাথবাবু হয়ে ওঠেন তার ফ্রেন্ড-ফিলোজফার-গাইড। এভাবেই তন্ময়ের শিল্পচর্চায় হাতেখড়ি। ৯ বছর সেই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করেছে সে। সোমনাথবাবুর সঙ্গে শিক্ষক-ছাত্রের সম্পর্ক চিরকালই থাকবে বলে তন্ময় মনে করে। 

    পড়াশোনার ফাঁকে যখনই সময় পায়, মনোনিবেশ করে শিল্পসৃজনে

    পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার জন্য তন্ময় ভর্তি হয় বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে কর্মশিক্ষার ক্লাস নেন ভক্ত দাস নন্দী। তন্ময়দেরও বেশ কিছু হাতের কাজ শিখিয়েছেন। সেই ছোট্ট বালকের ভিতর লুকিয়ে থাকা শিল্পসৃষ্টির খিদে আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। তাঁকে দেখে তন্ময় অনুপ্রেরণা পেত। নিজের হাতের কাজ স্যারকে দেখাত। ভক্তবাবুও তাকে উৎসাহ দিতেন। 

    বাবা, মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রতিবেশী – সবাই তাকে শিল্পকর্মের উৎসাহ দেন

    এখন তন্ময় একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বয়স ১৫ বছর। পড়াশোনার ফাঁকে যখনই সময় পায়, মনোনিবেশ করে শিল্পসৃজনে। এখন সারা পৃথিবীতেই মিনিয়েচার আর্ট বেশ জনপ্রিয়। বাড়ির বর্জ্য জিনিসপত্র দিয়ে মিনিয়েচার আর্ট গড়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে তন্ময়। পেন্সিল কেটে বানিয়েছে জগন্নাথের মূর্তি, দুর্গার মূর্তি, কাঠবোর্ড দিয়ে বানিয়েছে গ্ল্যাডিয়েটর, মাটি দিয়ে ছোট্ট বাউল, কাঠের টুকরো দিয়ে ভারতমাতার মূর্তি – এরকম কত কী! করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইনে ক্লাস করে যতটা অবসর মেলে, তাকে সৃজনের কাজে লাগায় বিজ্ঞানের ছাত্র তন্ময়। বেশির ভাগ হাতের কাজের আইডিয়া নিজের মাথা খাটিয়ে বের করে। কোনো কোনো ব্যাপারে সাহায্য নেয় ইন্টারনেটের। বাবা, মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রতিবেশী – সবাই তাকে শিল্পকর্মের উৎসাহ দেন।

    করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অবসর সময়ে সৃজনে মগ্ন থাকে তন্ময় 

    তন্ময় আমাদের জানাল, “আমি মনে করি শিল্প সুন্দরের সাধনা , শিল্প না শুধু মানুষের প্রাণে আনন্দ দান করে, পাশাপাশি মানুষের জীবনে নিজস্ব এক প্রভাব বিস্তার করে। শিল্প গড়তে বিস্তর অর্থ ও সামর্থের প্রয়োজন নেই, আপনার সৃজনশীল মনই শিল্পের কাঁচামাল, শুধু দরকার সেই সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো।”
     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @