No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ক্ষতিপূরণ বিল পাশ হয়ে গেল

    সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ক্ষতিপূরণ বিল পাশ হয়ে গেল

    https://www.youtube.com/embed/XSvgE0q8JNk

    সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে সরকার আন্দোলনকারীদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করবে। এই আইন পাস হয়ে গেল বিধানসভায়। বিরোধীদের আশংকা এই বিল তাদের বিরুদ্ধ ব্যবহার করা হবে। ফলে বিধানসভায় কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বিক্ষোভ দেখালেন। এক বিধায়ক স্পিকারের মেজ (mace) কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেন। এই মেজের বাংলা কী? কেউ লেখেন গদা। কেউ লেখেন মানদণ্ড, টিভিতে শুনলাম বলা হচ্ছে ন্যায়দণ্ড। ইংল্যান্ডে হাউস অফ কমনস-এ রাজা বা রানির প্রতিক হিসেবে এই মেজ রাখা হত। সেই পরম্পরা চলছে। বহু দেশেই। মেজ শব্দের উৎস খুঁজতে গেলে মনে হবে, যে ক’টা বাংলা প্রতিশব্দ আমরা লিখছি বা বলছি, সবগুলোই বেঠিক। তার মধ্যে গদা তাও কিছুটা কাছাকাছি। আমরা যদি কম্পিউটর, ল্যাপটপ, মোবাইল, ব্যাটারি, ডাউনলোড, সেভ, ডিলিট, ফেসবুক, কমেন্ট, প্রোফাইল-পিকচার বা স্টিয়ারিং, ব্রেক, ক্লাচ, সিটবেল্ট, উইন্ডস্ক্রিন, টায়ার বা রেল স্টেশন, লাইন, স্লিপার, টিকিট, চেন, ট্রেন, ইঞ্জিন বলতে পারি, মেজ নিয়ে এই গদা যুদ্ধ কেন?

    একদিন নিউজরুমে একটি অল্পবয়সী সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা টুইটারের বাংলা হয়? বললাম হয় না। ওটা টুইটার-ই লেখ। সিপিএমের দু’একজন নেতাকে দেখেছিলাম, ফেসবুকের বাংলা করেছিলেন ‘বদনবহি’। তখন মনে পড়েছিল, টেবলটেনিসের সেই ঠাট্টা হিন্দি, ‘কাঠ পাটাতনকে উপর লে ঠকাঠক দে ঠকাঠক। স্কুলে যতই উদজান, অম্লজান শেখানো হোক না কেন, পথে ঘাটে লোকে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড-ই বলে। ডিএম জেলাশাসক হয়েছেন। খুব ভালো। কিন্তু এসপি যে পুলিস সুপার থেকে গেল সেটাকেও ভালো বলা আমাদের শিখতে হবে। যে সব শব্দ স্বাভাবিক ভাবে বাংলা হয়ে যাচ্ছে, তা মেনে নেওয়া হোক। কিন্তু যা হচ্ছে না, তার উপর জোর খাটালে শব্দের প্রাণ-সংশয় হয়। একটি খবরের কাগজ যতই সেলফিকে নিজস্বি লিখুক, মুখের কথায় তা চালু করা যায়নি। সংসদ থাকুক, অধক্ষ থাকুক, আবার বাজেট, জিরো আওয়ারও থাকুক। খাতা, ডটপেন, কলম, ইশকুল, হেডস্যার, টিফিন, ক্লাস, পিরিয়ড, রুটিন, চক, ডাস্টার এবং প্রাইভেট টিউশন, সব মিলে মিশেই মাধ্যমিক, হায়ার সেকেন্ডারি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া করুক আমাদের ছেলেমেয়েরা।

    মিল্কিওয়ের বাংলা যিনি দুধেলপথ না করে ছায়াপথ করেছিলেন (বিদ্যাসাগর না রবিঠাকুর?), তেমন অনুবাদ ক্ষমতা সবার থাকে না। সব সময় হয়ও না। তখন দুধেল পথে পা পিছলে যায় আমাদের। ইংরেজি ভাষা সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা থেকে গ্রহণ করেই ধনী হয়েছে। কথার বাংলা আর লেখার বাংলার মধ্যে দূরত্ব বাড়বে। এটা মেনে নিতে হবে। কথার বাংলায় যত বেশি বাইরের শব্দ ঢোকে ততই ভালো। লেখার বাংলা, সাহিত্যের বাংলায় নিশ্চয়ই অন্য চর্চা চলবে।

    যাঁরা আরাম কেদারায় বসে পেয়ালা পিরিচে চা খেতে চান খান, তা নিয়ে আমরা চায়ের পেয়ালায় তুফান তুললেও, চা আমরা কাপেই খাব। চা পান আমরা করি না। এই সব ভুলই হল ভাষার প্রাণ।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @