একুশে বইমেলায় থাকছে ব্রেস্টফিডিং কর্নার

আবার ফেব্রুয়ারি। ভাষা শহিদদের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি। আর ফেব্রুয়ারি মানেই অমর একুশে বইমেলা। ভাষা শহিদের প্রতি এর থেকে বড়ো সম্মান জ্ঞাপন আর কীই বা হতে পারে! সমস্ত মাস জুড়ে সাংস্কৃতিক যাপন। এটা একমাত্র বাঙালিরাই পারে। বাংলাদেশই পারে। যদিও সব বাঙালিই বাংলাদেশি নয়, তবু সংস্কৃতিকে তো আর কাঁটাতাঁর দিয়ে ভাগ করা যায় না। তাই ওপার বাংলা থেকে উৎসবের রোমাঞ্চ আমাদেরও ছুঁয়ে যায়। কলকাতা বইমেলা শেষ হল সবেমাত্র। এখনও তার রেশ ছড়িয়ে আছে আমাদের গভীরে। ওদিকে একুশে বইমেলা এখনও চলছে। শুরু হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আমাদের প্রিয় শঙ্খ ঘোষ। ছিলেন মিশরের প্রখ্যাত লেখক-সাংবাদিক-গবেষক মোহসেন আল-আরিশি।
এবার পরিসরে বেড়েছে বইমেলা। অংশ নিয়েছে ৪৯৯টি প্রকাশনা, আগেরবার ছিল ৪৬৫টি। লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে ১৮০টি পত্রিকাকে স্টল দেওয়া হয়েছে ১৫৫টি। ২৫টি স্টলে রাখা হয়েছে দুটো করে লিটল ম্যাগাজিন। এবারের মেলার থিম ‘বিজয় : বায়ান্ন থেকে একাত্তর (নবপর্যায়)’। তার পাশাপাশি ২০২০ সালে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সূচনা করা হবে এ মেলা থেকে। মেলার পরিকল্পনা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে স্বাধীনতাস্তম্ভ ও তার সামনের জলাধার বইমেলার অংশ হয়ে ওঠে। মেলার দুদিকে পাঁচজন ভাষাশহিদ, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, বাংলা একাডেমি, বইমেলা, স্বাধীনতাস্তম্ভ – এসব বিষয় নিয়ে প্ল্যাকার্ড রাখা হয়েছে। প্রথমবারের মতো ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে একুশে বইমেলায়। সেখানে পাঁচজন করে লেখক প্রতিদিন নিজেদের বই নিয়ে পাঠকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন। প্রত্যেক লেখক সময় পাবেন ২০ মিনিট করে।
প্রতি বারের মতো ‘শিশু চত্বর’ এবারও থাকছে। প্রতি শুক্র ও শনিবারে একটি সময়কে ঘোষণা করা হয়েছে ‘শিশু প্রহর’। খুদে লেখকদের জন্য এবার শিশু চত্বরে ‘তারুণ্যের বই’ নামে একটি নতুন আয়োজন থাকছে, যেখানে খুদে লেখকরা তাদের বইয়ের প্রচার করতে পারবে। শিশু চত্বরে বাংলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় থাকছে ব্রেস্টফিডিং কর্নার। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশের কন্ট্রোল রুমের কাছে আরেকটি ব্রেস্টফিডিং কর্নার থাকছে। ১৯৭৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল একটি বিশাল জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন। উদ্বোধন করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ওই সম্মেলনে সাত-আট জন প্রকাশক বাংলা একাডেমির ভেতরে পুব দিকের দেওয়াল ঘেঁষে বই সাজিয়ে বসে যান। সেটাই ছিল একুশে বইমেলার সলতে পাকানো। ১৯৮৩ সালে বাংলা আকাডেমির উদ্যোগে বইমেলার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও আয়োজন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তারপর অমর একুশে গ্রন্থমেলা আনুষ্ঠানিকভাবে তার পথ চলা শুরু করে ১৯৮৪ সাল থেকে।
ছবিসূত্র – ঢাকা ট্রিবিউন