হুগলি নদীর তীরে ঐতিহাসিক শহর ডায়মন্ড হারবার

কলকাতার খুব কাছেই মনোরম বেড়ানোর জায়গা ডায়মন্ড হারবার। দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটারের মতো। উইকএন্ডে ঘুরে আসা যায় সহজেই। হুগলি বা গঙ্গা নদী এখান থেকেই দক্ষিণে মোড় নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে এগিয়ে গিয়েছে। নদীর পূর্ব পাড়ে ছোট্ট শহর এই ডায়মন্ড হারবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
হুগলি নদী
নদী গিয়ে মিশেছে দিগন্তে
কয়েকশো বছর আগে এই জায়গার নাম ছিল ‘হাজিপুর’। হজযাত্রীদের জাহাজ এখানে নোঙর করা হত। এক সময়ে পর্তুগিজদের ঘাঁটি ছিল এখানে। পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়। কালক্রমে জায়গার নাম পাল্টে ডায়মন্ড হারবার হয়ে যায়। নদীর ধারে ব্রিটিশরা গড়ে তুলেছিলেন বিশাল দুর্গ। কেল্লার নিরাপত্তার জন্য কামান রাখা হয়েছিল। ছিল বিশাল লাইট হাউজ, ওয়াচ টাওয়ার। চিংড়িখালি দুর্গ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল এটি। স্থানীয় মানুষেরা এটিকে ‘পুরাতন কেল্লা’ বলেই ডাকেন। কারো কারো মতে, এই দুর্গ ব্রিটিশরা নয়, পর্তুগিজরা তৈরি করেছিলেন। যাই হোক, এখন কেল্লার কোনো অস্তিত্ব নই। রয়ে গেছে কিছু স্মৃতি এবং নস্টালজিয়া।
সাগরে চলেছেন মৎস্যজীবীরা
নদীর কিনারা
বৃষ্টির মরসুমে ডায়মন্ড হারবার অপরূপ হয়ে ওঠে। গঙ্গা তখন অনেক বেশি সতেজ এবং সবুজ। বর্ষাকালে ডায়মন্ড হারবারে এসে টাটকা ইলিশ খাওয়ার মজাই আলাদা। পর্যটকরা বাড়ির জন্য তাজা ইলিশ সংগ্রহ করে নেন এখান থেকে। অক্টোবর থেকে মার্চ – এই সময়টায় বন্দর শহরটির অন্যরকম রূপ দেখতে পাবেন। সারা বছরই এখানে ঘুরতে আসা যায়। পিকনিক স্পট হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডায়মন্ড হারবার। নদীর ঢেউ এবং নৌকোর আনাগোনা দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়া যায়। এছাড়া গঙ্গাবিহারের সুযোগ তো আছেই। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মোহময় দৃশ্য চাক্ষুষ করতে ভুলবেন না।
ডায়মন্ড হারবার ভ্রমণ
ডায়মন্ড হারবার থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে ঐতিহাসিক জনপদ ফলতা। যেতে পারেন সেখানেও। সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমেও পারলে ঘুরে আসুন। বকখালির দীর্ঘ বালুকাবেলাতেও চলে যেতে পারেন। দূরত্ব মোটামুটি ৮০ কিলোমিটার। বকখালির পাশেই ফ্রেজারগঞ্জ। রায়দিঘিতে আপনি পাবেন সুন্দরবনের শোভা, এছাড়া প্রত্নতাত্ত্বিক নানা নিদর্শন ছড়িয়ে আছে সেখানে। আর যেতে পারেন গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রমে।
আকাশে রঙের খেলা
মায়াবী প্রকৃতি