ঢাক – বাদ্যযন্ত্রীদের নিজের কথা বলার মাধ্যম

শিল্পীদের কদরেই তো শিল্প বেঁচে থাকে। কোভিড-১৯ এবং লকডাউনের পর স্বাধীন শিল্পীদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তাঁদের খবর কে রাখবে? শিল্পের টানে আর মিউজিকের নেশায় শ’য়ে শ’য়ে শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিলেন চিত্রশিল্পী এবং গায়ক রণিক গাঙ্গুলি। তাঁর নিজস্ব এই মঞ্চের নাম ‘ঢাক’। যেখানে বাদ্যযন্ত্রীরা পাবেন যথোপযুক্ত সম্মান এবং নিজেদের কাজ দেখানোর সঠিক প্ল্যাটফর্ম। যে কোনো মিউজিক্যাল কনসার্টে একজন সংগীতশিল্পী যতটা ফ্রন্ট-লাইনে থাকার সুযোগ পান, পিছনে ঢাকা পড়ে থাকা বাদ্যযন্ত্রীরা সত্যিই কি ততটা সম্মান পান? অথচ গানের রেশ বা মাধুর্যের ঘোর মজিয়ে রাখতে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। ঠিক এমন একটি ভাবনাকে মাথায় রেখেই রণিক ওরফে গিলি’র এই ভার্চুয়াল মঞ্চ ‘ঢাক’।
এই মঞ্চে ভারতের অসংখ্য পার্কিউশনিস্টরা তাল-বাদ্যের অনুষ্ঠান করছেন একেবারে ঘরোয়াভাবে। মূলত ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে। গত সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে ‘ঢাক’-এর। উদ্যোক্তা রণিক গাঙ্গুলি জানাচ্ছেন, “শিল্পীকে প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। তাকে থেমে থাকলে চলে না। এই লড়াই-এ যদি আমার মতো আরও কিছু শিল্পীকে পাশে পাই এবং আমি সাধ্যমতো কিছু সাম্মানিক যদি দিতে পারি, এতে শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। আমি একাই এই যাত্রা শুরু করেছিলাম। এখন অনেকেই এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। অনেক শিল্পী নিজেরাই যোগাযোগ করছেন। তবে এটা আমার একার কাজ নয়। মাধ্যমকে আরও বড়ো পরিসরে নিয়ে যেতে রাজ্যের প্রত্যেক তালবাদকদের কাছেও অনুরোধ রইল, তাঁরাও যেন এগিয়ে আসেন।”
‘ঢাক’-কে বড়ো করতে প্রয়োজন আগ্রহী মানুষ এবং কিছু অর্থনৈতিক সাহায্য। রণিক জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কোনো অফিশিয়াল পেজ চাইলে এই ভাবনার অংশীদার হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দিচ্ছে ঢাক। পরিচিত এবং অপরিচিত তালবাদকদের পারিশ্রমিক দিয়ে অনুষ্ঠান করানো হচ্ছে। মিডিয়া গ্রাফ মিউজিক পেজ থেকে এই অনুষ্ঠানের লাইভ কভারেজ শুরু হলেও এখন নেমস ফটোগ্রাফিক প্রোডাকশন পেজটির মাধ্যমে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘ঢাক’-এর লাইভ অনুষ্ঠান। প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে।
‘ঢাক’-এর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, “বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কলকাতা-সহ পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় সংগীত তথা বাদ্যযন্ত্রীদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে এই অনুষ্ঠান। আমরা জানি, এমতাবস্থায় আমাদের একে অপরের সঙ্গে বসে গান-বাজনা করার সুযোগ কমে আসছে। তাই সেই জ্ঞান এবং চর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্ত হন আমাদের সঙ্গে। ...যতদিন পর্যন্ত না এই অবস্থার উন্নতি ঘটছে, আমরা এই ভাবনাকে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”