No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    করোনা মোকাবিলায় ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে দার্জিলিং-এর মংপু  

    করোনা মোকাবিলায় ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে দার্জিলিং-এর মংপু  

    Story image

    দার্জিলিং জেলায় হিমালয়ের পাদদেশে ছবির মতো সুন্দর শহর মংপু। এখানকার রবীন্দ্র ভবন ভ্রমণার্থীদের প্রধান আকর্ষণ। মৈত্রেয়ী দেবীর নিমন্ত্রণে বারবার এই বাড়িতে এসে থেকেছেন রবীন্দ্রনাথ। এখানে বেশ কিছু কবিতাও লিখেছেন। সিঙ্কোনা চাষের জন্যও মংপু বিখ্যাত। অদূর ভবিষ্যতে এই জায়গার সিঙ্কোনা হয়ে উঠতে পারে করোনা যুদ্ধের ‘গেম চেঞ্জার’। 

    করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করে ইতিবাচক ফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি হয় কুইনাইন থেকে। আর সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে পাওয়া যায় কুইনাইন। দার্জিলিং-এর সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশন কর্তৃপক্ষের অধিকর্তা ডঃ স্যামুয়েল রাই মংপুতে সিঙ্কোনা চাষে নতুন গতি আসার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা আশাবাদী যে সরকার সিঙ্কোনার উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেবে। করোনা প্রতিরোধে এটিকে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে পরীক্ষা করা যেতে পারে। সিঙ্কোনার উৎপাদন বাড়লে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ঘাটতিও কমবে”। এর আগে ডঃ রাই সেই স্কটিশ ডাক্তারের পরিবারকে খোঁজার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যিনি ব্রিটিশ আমলে বাংলায় প্রথম সিঙ্কোনার চাষ শুরু করেন। 

    ডঃ স্যামুয়েল রাই জানিয়েছেন, “এখন লকডাউনের ফলে আমাদের কারখানাগুলো বন্ধ। লকডাউন শেষ হলে আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব। অনুসন্ধান করে দেখব, করোনার রোগীদের ম্যালেরিয়ার যে ওষুধ দেওয়া হয়, সিঙ্কোনা গাছের ছাল তার প্রাকৃতিক বিকল্প হয়ে উঠতে পারে কিনা”।

    ব্রিটিশরা ১৮৫০-এর দশকের শেষে ভারতে এই ভেষজ উদ্ভিদ চাষের সূত্রপাত ঘটান। প্রথমে উটাকামুন্ড (বর্তমানে উটি), তারপর দার্জিলিং, সিকিম, সিলোন (এখনকার শ্রীলঙ্কা) এবং অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলে এর চাষ হতে থাকে। শুরুর দিকে সিঙ্কোনা উৎপাদন খুব কষ্টসাধ্য ছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পদ্ধতিরও উন্নতি হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১০ জন সৈনিকের মধ্যে ৮ জনই থাকত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত। তখন সৈনিকদের জীবন বাঁচাতে সিঙ্কোনা থেকে তৈরি কুইনাইনের ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। 

    মংপুতে সিঙ্কোনা চাষ শুরু করেছিলেন ডঃ থমাস অ্যান্ডারসন নামের এক স্কটিশ ডাক্তার। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নানা পরীক্ষানিরীক্ষা এখানে চালু আছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি সিঙ্কোনা গাছ কাটা হয়। কাণ্ড থেকে শুরু করে ডালপালা – পুরো গাছের ছাল ছাড়ানো হয় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে। এটা খুবই পুরোনো পদ্ধতি। দার্জিলিং কেভিকে-র সুব্রত মান্না তাঁর টিম নিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে যন্ত্রের সাহায্যে সিঙ্কোনার ছাল বের করা সম্ভব হয়। তাহলে, মানুষের পরিশ্রম অনেক কমবে এবং সিঙ্কোনার উৎপাদনও বাড়বে। 

    ডঃ স্যামুয়েল রাই জানিয়েছেন, “এখন লকডাউনের ফলে আমাদের কারখানাগুলো বন্ধ। লকডাউন শেষ হলে আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব। অনুসন্ধান করে দেখব, করোনার রোগীদের ম্যালেরিয়ার যে ওষুধ দেওয়া হয়, সিঙ্কোনা গাছের ছাল তার প্রাকৃতিক বিকল্প হয়ে উঠতে পারে কিনা”। 


     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @