কাঁচা আম আর মৌরলার জিভে-জল আনা জুটি

মাছের টকে বাঙালি সেই কবে থেকে বুঁদ। শীত পেরিয়ে বসন্ত একটু ঘন হতে না হতেই টকের পাব্বন শুরু। এপার-ওপর দুই বাংলার এ বিষয়ে কোনো প্রভেদ নেই। একে মাছ, তার ওপর টক। সাবেক বাংলা কাব্য, মধ্যযুগের শেষপাতের নানা লোকগানে উঁকিঝুঁকি দিন। সেখানেও মাছের টকের কথা ঢুকে পড়েছে অনায়াসে। ঢুকে পড়েছে সঙের গানেও। এককালে নাকি সঙের দল গেয়ে বেড়াত--“পকেট ভরা পয়সা নাচে ঠোকা ঠকা-ঠক/ রাঁড়ের বাড়ি পাত পেতেছে পুঁটি মাছের টক।”
গানের ভিতরের ইঙ্গিতটিকে অনায়াসে অগ্রাহ্য করতে পারেন। সঙের গান তো! এমন গূহ্য ইঙ্গিতের ঠোকাঠুকি সেখানে থাকতই। আমাদের তো মাছের টক নিয়ে কথা। আজ একটা মাছের টকের রেসিপিই থাকল। তবে পুঁটি নয়, মৌরলা। বাংলার এইসব পুঁচকে পুঁচকে মাছদের স্বাদ তো এমনিতেই স্বর্গীয়। এবার যদি কাঁচা আম দিয়ে যদি জম্পেশ টক রাঁধা যায়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। বাজারে কাঁচা আম চলেও এসেছে। তাপমাত্রা বা রোদ খুব একটা বাড়ুক না বাড়ুক, টক রেঁধে ফেলুন জলদি। আর যে তর সয় না।
উপকরণ:
মৌরলা মাছ- ১৫০ গ্রাম
মৌরি- ১ চামচ
পাঁচফোড়ন- হাফ চা-চামচ
শুকনো লঙ্কা গোটা- ৭টা
কাঁচা আম- ১টা মাঝারি সাইজের (ছোটো হলে ২টো)
হলুদ গুঁড়ো- ১চা চামচ
জিরে গুঁড়ো- সামান্য
নুন, সর্ষের তেল পরিমাণমতো
প্রণালি:
কাঁচা আম সিদ্ধ করতে বসিয়ে দিন। মৌরলা মাছগুলোকে নুন, হলুদ মাখিয়ে ভেজে একটি পাত্রে তুলে নিন। আম সিদ্ধ হলে কচলে শাঁস বের করে আঁটি ফেলে দিন। এবার একটি কড়াইয়ে পাঁচফোড়ন আর মৌরি ভেজে বেটে নিন। পাঁচটা শুকনো লঙ্কা ভেজে বেটে নিন।
এরপর কড়াইয়ে সর্ষের তেল দিন। তেল গরম হলে পাঁচফোড়ন আর দুটো শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। আমের শাঁস দিয়ে দিন। এরপর তিন-চার সেকেন্ড মতো নেড়ে জল দিন প্রয়োজনমতো। হলুদ, জিরে গুঁড়ো, নুন দিন। জল ফুটলেই মাছগুলো দিয়ে দিন। তিন-চার সেকেন্ড পর ভাজা মশলাগুলো দিয়ে মিনিট দশ ঢাকা-চাপা দিয়ে রাখুন। দশ মিনিট পর ঢাকা তুলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ঝোল চেখে দেখে নেবেন, টক বেশি মনে হলে সামান্য চিনি বা গুড় মিশিয়ে নিতে হবে।