No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ক্যামেরাবন্দি হর্নবিল

    ক্যামেরাবন্দি হর্নবিল

    Story image

    দু’দিনের অপেক্ষা। তারপর দেখা মিলল তাদের। শক্ত মোটা ঠোঁট, বাদামি রংয়ের মাথা, কালচে নীল রং, ডানার শেষের দিকের পালক সাদা। পাখিটির নাম গ্রেট হর্নবিল। শিলিগুড়ির মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারির কাছে লাটপানচারের জঙ্গলের ছবি। কাছে থেকে নেস্টের ছবি তোলা নিষিদ্ধ। তাই দূর থেকেই স্বাদ মেটালাম। সকাল সন্ধ্যা ক্যামেরা জুম করে একের পর এক ক্লিক। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

    বাংলার ধনেশ পাখিরই ইংরেজি নাম হর্নবিল। এরা Bucerotidae পরিবারভুক্ত। বাহারি রং, খাদ্যপ্রণালী, জীবনযাপন, বাসা বাঁধা, সামাজিকতার জন্য পাখি প্রেমিকদের বিশেষ আকর্ষণ। এই নেশায় পাড়ি দিলাম শিলিগুড়িতে। সেখান থেকে লাটপানচার জঙ্গলে। ভারতে নয় ধরনের হর্নবিল পাওয়া গেলেও আমার ক্যামেরা বন্দি হল দুইজন- গ্রেট হর্নবিল ও রফাস-নেকড্‌ হর্নবিল। ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস এদের ব্রিডিং সিজন। আমার যাত্রার সময় এপ্রিল হওয়ার জন্য দেখা পেলাম না স্ত্রী হর্নবিলের। সে তখন গাছের কোটরে আর পুরুষটি খাবার সংগ্রহ করছে। ডিম পাড়ার জন্য ওরা লম্বা গাছের কোটরে গাছের বাকল, কাদা, মাটি এবং নিজেদের বিষ্ঠা দিয়ে তৈরি করে বাসা। এই সময় খাবারের জন্য পুরুষ পাখিটি পাড়ি দেয় মাইলের পর মাইল।

    এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে ভালোবাসে। ডিম ফুটে বাচ্চা যতক্ষণ না বেরিয়ে আসে মেয়ে পাখিটি বাসার বাইরে আসে না। এমন চলে তিনমাস। স্ত্রী পাখিটি খাওয়ার জন্য ছোট গর্তের ভেতর থেকে ঠোঁট বের করে শব্দ করে। এই সময় এরা খায় চেরিফল অথবা ছোট ছোট পোকামাকড়। জোড়াটি ছাড়া অন্য পুরুষের কাছ থেকে এরা খাবার খায় না। অনেক সময় পুরুষটি যদি খাবার সংগ্রহ করে ফিরে না আসে খাবারের অভাবে স্ত্রীপাখিটি মারা যায়। বাচ্চা নিয়ে যখন স্ত্রীপাখিটি বাসা থেকে বের হয়ে আসে তখন উপস্থিত থাকে অনেকগুলি পুরুষ পাখি। টানা তিন মাস গাছের কোটরে থাকার জন্য মেয়ে পাখিটির গায়ের পালক পড়ে যায়।

    এশিয়ার মালয়েশিয়া, বার্মা, পশ্চিমঘাট অঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গের মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি তে এই পাখির দেখা মেলে। এদের ঠোঁটে থাকা দাগ থেকেই পাখিটির বয়স বোঝা যায়।

     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @