শুধু একটা হোয়াটসঅ্যাপ, সুষম খাবারের হোম ডেলিভারি করবে রাজ্য

নিজস্ব খামারে তৈরি জিনিস দিয়ে সমস্ত খাবার, পুষ্টিগুণেও কম নয়, আবার সুস্বাদুও। যাঁদের হাতে সময়ের অভাব, যাঁদের বয়স হয়েছে অথবা যাঁরা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন তাঁদের জন্য সুখবর। করোনা সংক্রমণের জন্য তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর। রোগীদের পাতে সুষম পথ্য পৌঁছে দিতে এই দপ্তরের অধীন ওয়েস্ট বেঙ্গল কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (ডব্লুবিসিএডিসি) এবার নিয়ে আসছে এই সুবিধা। ৯ জানুয়ারি থেকেই যা চালু হতে চলেছে। রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা সেল্ফ হেল্প গ্রুপের (এসএইচজি) সদস্যদের। দুপুর এবং রাত, দুই সময়েরই খাবার পরিবেশন করা হবে। পাওয়া যাবে সপ্তাহের প্রতিদিনই।
ডব্লুবিসিএডিসি'র একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রথমবার লকডাউনের সময় কলকাতায় বিভিন্ন আবাসনের সামনে দপ্তরের উদ্যোগে বিক্রি করা হয়েছিল বিভিন্ন শাকসবজি ও অন্যান্য খাবার জিনিস। এখনও দপ্তরের নিজস্ব কাউন্টার থেকে মাছ, মাংস ও শাকসবজি বিক্রি করা হচ্ছে এবং সমস্ত পণ্যই দপ্তরের নিজস্ব খামার বা কৃষিজমিতে উৎপাদন করা হয়। এবছর যেহেতু ওমিক্রনের প্রভাবে সংক্রমণ দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে তাই দেখা যাচ্ছে একই পরিবারের অনেকেই একসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে বহু লোকই ছোট পরিবার নিয়ে বাস করেন। ফলে যখনই একই পরিবারের অধিকাংশ আক্রান্ত হচ্ছেন তখন তাঁদের পক্ষে রান্নাবান্না করা এবং বিশেষ করে রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রয়োজনে সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই সমস্ত পরিবারগুলি যাতে সুষম পথ্য পায় তাই তাঁদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।কী কী থাকছে এই বিশেষ খাবারের মেনুতে? দপ্তরের ওই সূত্রটি জানিয়েছে, সাবেকি বাঙালি খাবার যেমন রাখা হয়েছে, পাশাপাশি কন্টিনেন্টাল খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাত, কলাইয়ের ডাল, একটা ভাজা, আলু, পেঁপে দিয়ে মুরগির পাতলা ঝোল, চাটনি এবং ফলের এই বাঙালি প্লেটটির মূল্য ২০০ টাকা। অন্যদিকে কন্টিনেন্টাল মেনুতে আছে গ্রীলড চিকেন, গ্রীলড ভেজিটেবলস, ব্রাউন বা হোয়াইট রাইস এবং ফল। এই প্লেটটির দাম ১৫০ টাকা। ভেজিটেবলসের মধ্যে রাখা হচ্ছে বেলপেপার, ক্যাপসিকাম, লেটুসের মতো পুষ্টিকর সবজি। ফলের মধ্যে থাকছে স্ট্রবেরি বা কিউই-র মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল। সমস্ত কিছুই দপ্তরের নিজস্ব খামার বা কৃষিজমিতে তৈরি।
দপ্তরের যেই ফোন নম্বরে এর অর্ডার দেওয়া যাবে সেগুলি হল 8170887794, 8250257354। আরও একটি নম্বর যোগ করা হবে বলে জানা গেছে। ক্যাশ অন ডেলিভারি বা ইচ্ছা করলে কেউ অনলাইনেও পেমেন্ট করতে পারেন। লাঞ্চের খাবার আগের দিন রাত ১০টার মধ্যে অর্ডার করতে হবে। ডিনারের জন্য সেইদিন দুপুর বারোটার মধ্যে অর্ডার করতে হবে। লাঞ্চ বেলা বারোটা থেকে দু'টোর মধ্যে এবং ডিনার সন্ধে সাতটা থেকে ন'টার মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। আপাতত কলকাতায় এই ব্যবস্থা চালু হলেও পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনে শহরতলির ক্ষেত্রেও ভাবনা চিন্তা করা হবে বলে দপ্তরের ওই সূত্রটি জানিয়েছে।