No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    দিল্লির বাংলা- হেঁটে যাচ্ছে ক্রোধে উন্মত্ত আরশোলা

    দিল্লির বাংলা- হেঁটে যাচ্ছে ক্রোধে উন্মত্ত আরশোলা

    Story image

    ক্রোধে উন্মত্ত আরশোলা খাবারের উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে রোগ ছড়িয়ে দেয়। বা বন্ধুর কাকার বাথরুমে পা পিছলে জলপ্রপাত হতে পারে। বা, ফ্লু থেকে বাঁচার জন্য দরকার প্রচুর মদ্যপান এবং জলয়োজন। শব্দগুলো তো বাংলা। কিন্তু ভাষাটা কি বাংলা বলে চেনা যাচ্ছে? এই ভাবেই বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথের বাংলা ভাষায় কালি লেপে দিল নরেন্দ্র মোদীর স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রকাশিত ‘সুস্থ ভারত উদ্যোগ’ পত্রিকায় এই ভাষাতে সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদের স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে। দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ব্যুরো প্রকাশিত এই বইয়ের কয়েক হাজার কপি। কিন্তু সে বই দেখে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অফিসাররা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। বাংলা ভাষার নামে আর কী কী মণি মুক্তা দিল্লির স্বাস্থ্য কর্তারা এই পত্রিকায় ছড়িয়েছেন, তা এক বার দেখে নেওয়া যাক।

    ‘একটি প্রমিত প্রশাসনের অংশস্বরূপ এক বা একাধিক বিরোধী ক্যানসার ওষুধের সঙ্গে চিকিৎসা আছে। অধিকাংস ক্যান্সার কোষের একটি সমালোচনামূলক সম্পত্তি বাঁধন ডিভাইড প্রাণনাশ দ্বারা কাজ!’ – কেমোথেরাপির সংজ্ঞা এটি। যা পড়ে চক্ষু চড়কগাছ বাংলার ডাক্তারদের। ‘পুওর ওরাল হাইজিন’এর বঙ্গানুবাদ হয়েছে ‘দরিদ্র ওরাল স্বাস্থ্যবিধি’, ‘আউট অব পকেট এক্সপেন্স’-এর অনুবাদ ‘পকেট ব্যয়ের বাইরে’।

    যেমন ধরা যাক ‘কিডনি কী’-এর উত্তর। ‘কিডনি দুই শিম আকৃতির প্রত্যঙ্গ প্রতিটি পাশ দিয়ে এক, একটি পাঁজর অধীনে ফিরে দিকে অবস্থিত, শরীরে প্রস্রাব মাধ্যমে এবং বাড়তি তরল, সোডিয়াম ও পটাশিয়াম নাদা করতে সাহায্য করছে!’

    রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই বই সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিলে মানুষ আমাদের তুলোধনা করবেন।’

    এমন অসংখ্য নমুনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বইটিতে। বাংলা ভাষার এই বিকৃতিতে হতবাক ও ক্ষুব্ধ সকলেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস জগদীশ প্রসাদ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন, ‘মানুষের সুবিধের কথা ভেবে ১৫টি ভাষায় বইটি অনূদিত হয়েছিল। আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে অনুবাদ হয়েছে। কিন্তু তারা যে বাংলার এই অবস্থা করবে, ভাবা যায়নি’। তিনি জানিয়েছেন, পুরোনো পত্রিকা বাতিল করে নতুন করে এই প্রত্রিকা ছাপা হবে, এবং বাংলা ভাষার বিকৃতি ঠেকাতে রাজ্য সরকারের সহায়তা নেওয়া হবে।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @