No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ভাইসরয়কে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়েছিলেন বসন্ত বিশ্বাস

    ভাইসরয়কে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়েছিলেন বসন্ত বিশ্বাস

    Story image

    বসন্ত বিশ্বাস। অগ্নিযুগের এই বিপ্লবীর জন্ম ৬ই ফেব্রুয়ারি ১৮৯৫ সালে, পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত পোড়াগাছাতে। বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাসের ঠাকুরদা বাবা দিগম্বর বিশ্বাস ছিলেন নামী জমিদার। নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এবং প্রতিবাদ করেছিলেন দিগম্বর। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

    বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাস যুগান্তর দলের সদস্য ছিলেন। এই দলের নেতা রাসবিহারী বসুর কাছে থেকে সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে দীক্ষা নেন তিনি। দিল্লিতে বোমা বিস্ফোরণের জন্য বসন্ত বিশ্বাসকে নিয়ে রাসবিহারী বসু চন্দননগর থেকে প্রথমে দেরাদুনে উঠেছিলেন।  তাঁরা বেশ কিছুদিন ছিলেন দেরাদুনে। সেখানে বসন্ত বিশ্বাসকে বোমা ছোঁড়া কলাকৌশল ও প্রশিক্ষণ রপ্ত করিয়েছিলেন রাসবিহারী।

    ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ঘটে গেল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিপ্লবী অভিযান। দিল্লির চাঁদনি চকে শোভাযাত্রা করছেন তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। ভিড়ের মধ্যে এক পাউন্ড এগারো আউন্সের বোমা হাতে নিয়ে অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন দুই দুঃসাহসিক বাঙালি - ২৬ বছরের যুবক রাসবিহারী বসু ও ১৬ বছরের কিশোর বসন্ত বিশ্বাস। স্ত্রীলোকের পোশাকে ‘লীলাবতী নাম নিয়ে দিল্লিতে উপস্থিত ছিলেন বসন্ত। আচমকা লর্ড হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্যে করে বোমা ছুঁড়লেন বসন্ত বিশ্বাস। না, হার্ডিঞ্জ নিহত হননি এ-আক্রমণে। কিন্তু এমন চেষ্টায় ব্রিটিশ সরকারের ঘুম ছুটে গেল।

    রাসবিহারী বসু-কে শত চেষ্টা করেও ব্রিটিশ পুলিশ ধরতে পারেনি। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ এই সময়ে আততায়ীদের ধরার জন্য এক লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। প্রায় চোদ্দ মাস পর, ১৯১৪ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি পিতার শেষকৃত্য করার সময় ভাই-এর বিশ্বাসঘাতকতায় কৃষ্ণনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বসন্ত বিশ্বাসকে। ১৯১৪ সালের ২৩ মে দিল্লি-লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি শুরু হলে ৫ই অক্টোবর বসন্ত বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

    সরকার তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিতেই বেশি আগ্রহী ছিল। তাই লাহোর হাইকোর্টে একটি আপীল দাখিল করা হয় এবং বিচারের নামে একটি প্রহসন অনুষ্ঠিত হয়। আম্বালা জেলে বসন্ত বিশ্বাসের ফাইলে কারচুপি করা হয়। ফাইলে তার বয়স দুবছর বাড়িয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে, তিনি তার কৃত অপরাধের তীব্রতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত ছিলেন। এখন পর্যন্ত জেলের ফাইলে এ ভুলের সংশোধন করা হয়নি। বসন্ত বিশ্বাসকে ফাঁসি দ্বারা মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। 

    ১৯১৫ সালে ১১ মে পাঞ্জাবের আম্বালার জেলে মাত্র ২০ বছর বয়সে ফাঁসি হয় বসন্ত বিশ্বাসের।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @