কলকাতার বুকে একটুকরো বাংলাদেশ, রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে বাংলা বই
“দুয়ারে খিল টান দিয়ে তাই খুলে দিলাম জানলা
ওপারে যে বাংলাদেশ এপারেও সেই বাংলা”
সুভাষ মুখোপাধ্যায় এই কথাগুলিই লিখেছিলেন একসময়। সময় গড়িয়েছে। কিন্তু কথাগুলো মিথ্যে হয়ে যায়নি। ঘড়ির কাঁটার থেকেও দ্রুত গতিতে আমরা এগিয়ে চলেছি। কিন্তু ভিতটা তো সেই এক। দুই বাংলা। দুই বাংলার মানুষ। দুই বাংলার সংস্কৃতি। দুই বাংলার সাহিত্য। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে বাংলা সাহিত্য। সেই ভাষায় ভাটা পড়েনি কোনওদিন। রক্তের বীজ খুঁজে পাওয়া যাবে এই দুই জায়গায়। ভৌগোলিক দূরত্ব কি কখনও নাড়ির টানকে অস্বীকার করতে পারে?
নবম বছরে পা দিল বাংলাদেশ বইমেলা। স্থান প্রতিবছরের মতো এবারেও মোহরকুঞ্জ, কলকাতা। আয়োজনে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। আসলে বাংলা কেবলমাত্র বাংলাদেশের মানুষের ভাষাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ভাষাও বাংলা। তাই বাংলাদেশের লেখকদের বইয়ের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই বাংলাদেশ বইমেলা সেই আগ্রহ পূরণের কাজটি করে থাকে।
বই বাঙালির কাছের বিষয়। তা বাংলাদেশের বাঙালি হোক বা পশ্চিমবঙ্গের। বইয়ের প্রতি সকলেরই প্রবল আগ্রহ থাকে। তবে এখানে যেমন আলাদাভাবে বাংলাদেশ বইমেলা বা কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বড়ো আকারে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ান করা হয়, ওদেশে সেই সুবিধাটা নেই। একুশে বইমেলায় শুধুমাত্র বাংলাদেশের বই-ই পাওয়া যায়। আলাদাভাবে পশ্চিমবঙ্গের কোনো স্টল হয় না। কিন্তু গিল্ডের পক্ষ থেকে ভাবা হচ্ছে ওদেশেও যেন একটি বড়ো আকারে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের বই বিক্রেতাদের নিয়ে মেলা করা যায়। বঙ্গদর্শন পৌঁছে গিয়েছিল এই মেলায়। পাঠক, প্রকাশক ও কর্তৃপক্ষদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনটি প্রশ্ন – কলকাতার এই মেলায় আপনাদের বই বিক্রির হার কীরকম?, কোন ধরনের বইয়ের বিক্রি সবচেয়ে বেশি? এবং দুই বাংলার মধ্যে বইয়ের আদানপ্রদানের জন্য আরও কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? (ভিডিওতে দেখা যাবে)
বাংলাদেশ বইমেলা মেলা চলবে প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত ৮টা, ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। শনিবার ও রবিবার মেলা খোলা থাকবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। মেলার পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা। এতে অংশগ্রহণ করবেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা। মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের ৮০টি প্রকাশনা সংস্থা।