No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    তাল পাটালির হাল হকিকত

    তাল পাটালির হাল হকিকত

    Story image

    এখন তাল পাটালির সময়। এই সময় হয়তো বাড়ির সামনে পাবেন তালের রস। সকালে মিলতে পারে, সন্ধেবেলাতেও। তালের রস খাওয়ার আগে মনে রাখবেন, এখন কিন্তু নিপা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। কেরল, গোয়া, মহারাষ্ট্র, হিমাচলপ্রদেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ রাজ্য থেকে যাঁরা কাজ করতে যাচ্ছেন ভিন রাজ্যে বা ভিন রাজ্য থেকে ফিরছেন, নজর রাখা হচ্ছে তাঁদের ওপর। ২০০১ সালে শিলিগুড়িতে ছড়িয়েছিল নিপা ভাইরাস। সংক্রামক রোগ। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, নিপা ভাইরাসের বাহক হল বাদুড় আর চামচিকে, এরা যে ফল খায়, তা খেতে নিষেধ করছেন বিজ্ঞানীরা। তাল রসের কথা বলা হচ্ছে কারণ তাল রস বাদুড় আর চামচিকের সবচেয়ে পছন্দের খাবার।

     

    তাল গাছ কাটার পর পরিশুদ্ধ রস পেতে ঘনঘন গাছে ওঠেন শিউলি। জল দিয়ে নলি ধুইয়ে দিতে হয়। বেশিক্ষণ রস ভাঁড়ে রাখা যায় না। নামিয়ে নিতে হয়। কিন্তু রাতের বেলা? সারারাত যে রস ভাঁড়ে থাকে তা আপনি খান সকালে। আর রাত মানেই বাদুড়, চামচিকের রাজত্ব। ফলে তার লালা আপনার পেটে যাচ্ছে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। আপনার মনে হতেই পারে, তাহলে পাটালি খেতে অসুবিধা কোথায়?  গুড় করলে যে তাপমাত্রায় ফুটবে তাতে আর জীবাণু না থাকারই সম্ভাবনা। 

    শিউলিরা বলছেন, তাল পাটালি তৈরি বড় কঠিন কাজ। রাতের  বেলা যে রস হয়, তা ভোরে গুড় করা যায় না। দুপুর, বিকেলের রসে ভালো পাটালি হয়, আবার ভালো গুড়ও তৈরি হয়। যে পাটালি যত সাদা হবে তা তত স্বাদের হবে, আবার ঠিক ততটাই নরম হবে, হাত দিলে ভেঙে যাবে। 

    পাটালি সাদা করার জন্য ফিটকিরি মিশিয়ে দেন শিউলিরা। ফিটকিরি দিলে সাদা হবে, কড়াইয়ের গায়ে গুড় ঘষতে হয় কম, শ্রম ও সময় বাঁচে শিউলির। কিন্তু ফিটকিরি মেশানো গুড় শক্ত হবে। আমরা এখন সবাই জানি, ফিটকিরি জীবাণুনাশক বলেই বিষাক্ত। তাল গুড়ের সেরা জায়গা বীরভূম আর মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম ও খড়গ্রামে। খাঁটি গুড় পাওয়া যায়। মুর্শিদাবাদের গুড় বলে যা বিক্রি হয় তা বেশির ভাগই দক্ষিণ ২৪ পরগণার। সুতরাং দেখে কিনবেন, তাহলে ঠকবেন না।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @