অভিনব কুলিং জ্যাকেট তৈরি করল বাংলার রূপম

বিট দ্য হিট কুলিং জ্যাকেট। নাম শুনেই চমকে উঠছেন? তাহলে আরও বাকি আছে চমকের। এমন অভিনব জ্যাকেট তৈরি করেছে এক বঙ্গসন্তান। খাস হুগলিতে বাড়ি তার। রূপম ঘোষ। বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে তার এই কাজ।
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রে জলের উচ্চতা যেভাবে বাড়ছে তাতে ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর বহু জনপদ জলের তলায় চলে যেতে পারে, যেভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে বড় আবিষ্কার করে ফেলল রূপম ঘোষ। এই আবিষ্কারের জন্য জাতীয় স্বীকৃতি আগেই পেয়েছে সে। এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। রাষ্ট্রপুঞ্জের ডাকে সে ২৫ জুলাই যাচ্ছে গ্লোবাল স্টেম সামিটে। এই সামিটে যোগ দিচ্ছেন ১৮০ জন বিজ্ঞানী।
আরও পড়ুন
মঙ্গলে লক্ষ্মীছাপ রাখতে চান এই তরুণী
১৮ হাজার নবীন-প্রবীণ বিজ্ঞানী তাঁদের আবিষ্কার রেখেছিলেন বিচারকদের সামনে। যে ১৮০ জনকে শেষপর্যন্ত বেছে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে বাঙালি কিশোর। ভারতের আরও দুজন যাচ্ছে এই সামিটে। রূপম উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র। এরই মধ্যে সে গবেষণা শুরু করেছে উচ্চশিক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং জৈব প্রযুক্তির অধ্যাপক মহুয়া হোম চৌধুরীর কাছে।
খুব ছোটবেলা থেকেই রূপম স্কুলে বিজ্ঞানের মডেল বানাত। তারপর মাথায় এল কুলিং জ্যাকেট তৈরির ভাবনা। সানস্ট্রোকে মৃত্যু হয় পুলিশকর্মীদের, কৃষক মারা যান মাঠে কাজ করতে গিয়ে, শ্রমিকের মৃত্যু হয় চড়া রোদে, এসব কথা শুনতে শুনতে ভাবনা আসে মাথায়। চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ের রূপম তখনও জানতেন না, বিশ্বের বাজারে কুলিং জ্যাকেট পাওয়া যায়। তারপর খোঁজ নিয়ে দেখলেন, যেগুলো পাওয়া যায়, তার দাম আমজনতার নাগালে নয়। এরপর শুরু হল গবেষণা। জাতীয় স্বীকৃতির পর আমেরিকার একাডেমি অফ সায়েন্সেস সদস্যপদ দেয় তাকে। এরপর মানকুণ্ডুর আলতারা গ্রামে বসে শুরু হয় নিরলস কাজ। সে কাজের স্বীকৃতি পেয়েছে ক্ষুদে বিজ্ঞানী। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতির আগে তার তৈরি কুলিং জ্যাকেট আরও আধুনিক হয়েছে। যে জ্যাকেটে পরা হবে তা ঠান্ডা রাখবে দেহ। যে টুপি পরা হবে তাতে থাকবে সোলার প্যানেল, সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করবে এই প্যানেল। তার সাহায্যে ব্যাটারি চার্জ হবে। জলের বুদবুদকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে রুপমের এই কুলিং জ্যাকেট। ছোটছোট পাখা থাকবে। তার সাহায্যে হাওয়া পাওয়া যাবে। নোংরা হলে জলে এই জ্যাকেট পরিষ্কার করা যাবে। আমজনতার জন্য বাজারে আসছে এই অত্যাধুনিক জ্যাকেট। রুপম এর পেটেন্ট পেয়েছে। দাম করা হচ্ছে দু থেকে আড়াই হাজারের মধ্যে।