No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    কলকাত্তাইয়া বিরিয়ানি ও নবাবি হেঁশেল

    কলকাত্তাইয়া বিরিয়ানি ও নবাবি হেঁশেল

    Story image

    বিরিয়ানিতে আলুর প্রবর্তন কবে থেকে হল? ভোজনপ্রেমিকদের অনেকেই এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে হয়তো আমতা-আমতা করবেন। তবে বিরিয়ানিতে আলু ছাড়া ঠিক যেন রসনাতৃপ্তি হয় না। এই ধারার সূত্রপাত হয়েছিল নবাবের হেঁশেলে। স্বয়ং নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ এর প্রবর্তন করেন।

    বিরিয়ানি, এই উর্দু শব্দটি ফারসি ‘বিরিঞ্জ’ থেকে এসেছে। যার অর্থ রোস্ট বা ভেজে নেওয়া ভাত। গন্ধযুক্ত চালকে হালকা সেদ্ধ করে ঘিয়ে ভাজা হয়। তারপর রোস্ট করা মাংস ও ভাতের সহযোগে তৈরি করা হয় সুস্বাদু বিরিয়ানি। কথিত আছে, এই খাবার নাকি যুদ্ধক্ষেত্রের খাবার। মুসলিম সম্রাটরা সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য বিশাল সৈনবাহিনী নিয়ে বের হতেন। সেইসময় একটি বড় হান্ডিতে চাল, মাংস, মসলা মিশিয়ে বালির নিচে ঢুকিয়ে রাখা হত। এর ফলে মাংস আলাদা করে রান্না করার প্রয়োজন হত না এবং উপাদানেরও সাশ্রয় হত। গরমবালির ভাপেই রান্না হত এই বিশেষ খাবার। সারাদিন ক্লান্ত সৈনিকদের এই খাবার একদিকে যেমন শক্তি যোগাত অপরদিকে মশলার গুণে ভালো হত ঘুমও। যা তাদের পরবর্তী দিনের যুদ্ধে শক্তি যোগাত। 
    ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানি তৈরি করা হয়। হায়দ্রাবাদ ও আওধের বিরিয়ানির সঙ্গে কলকাতার বিরিয়ানি তৈরির প্রদ্ধতিতে বেশ পার্থক্য বর্তমান। কলকাতার বিরিয়ানিতে দেওয়া হয় আলু। আবার কখনও ডিমও দেওয়ার প্রচলন আছে। নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ এই ধারার প্রবর্তন করেন। তিনি আলু দিয়ে বিরিয়ানিকে দম পুকতি স্টাইলে রান্না করার প্রচলন করেন।

    চলুন একবার দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে তৈরি করা হয় কলকাত্তাইয়া বিরিয়ানি- 

    উপাদান 
    • পাঁঠার মাংস ৫০০ গ্রাম  
    • বাসমতি চাল ৫০০ গ্রাম 
    • আদা রসুন বাটা ছয় চামচ
    • পেঁয়াজ বাটা দুই চামচ
    • কুচি করে কাটা পেয়াজ দুটো 
    • কাঁচা লঙ্কাবাটা এক চামচ
    • ধনের গুড়ো এক চামচ 
    • লবঙ্গ-১০টি, এলাচ- ১০টি, তেজপাতা একটা, জায়ফল এবং জয়ত্রি গুড়ো বা বাটা এক চামচ
    • টক দই ১০০ গ্রাম    
    • দুধ এক অথবা দুই কাপ
    • জাফরন পেস্ট একচামচ, কেওড়া জল চার চামচ
    • ঘি ২০০গ্রাম
    • নুন স্বাদ অনুযায়ী 

     

     

    পদ্ধতি 
    ১. কড়াই গরম করে ঘি দিতে হবে। গরম ঘি তে ৫টি এলাচ, ৫টি লবঙ্গ, একটি তেজপাতা এবং পরিমাণ অনুযায়ী নুন দিয়ে ভাজা ভাজা করতে হবে।

    ২. আগে থেকে ধোয়া ও জল ঝরিয়ে নেওয়া বাসমতি চালকে এবার কড়াইয়ে দিয়ে ভাজতে হবে।

    ৩. এবার আগে থেকে গরম করে রাখা গরম জল কড়াইয়ে ঢেলে দিতে হবে। হাফ সেদ্ধ করতে হবে চালকে।

    ৪. এবার একটি হান্ডি বা ডেকচি নিতে হবে। মাংসটিকে পেঁয়াজ, রসুনবাটা, আদা বাটা, ধনের গুড়ো, গরমশলা দিয়ে ভেজে রাখতে হবে। 

    ৫. হান্ডিতে বা ডেকচিতে স্তরে স্তরে চাল, মাংস ভাজা, আলু, দিয়ে সাজাতে হবে। সেদ্ধ ডিমও দিতে পারেন। সঙ্গে দিতে হবে জাফরান গোলা জল, কেওড়া জল, দুধ এবং বাজার থেকে কেনা বিরিয়ানির রং। এবার গ্যাসে একটা লোহার তাওয়া বসিয়ে তার উপর হান্ডি বা ডেকচি ভালো করে মুখ আটকে দমে বসিয়ে দিন। অনেকে কাঠকয়লার আগুনেও বসিয়ে রাখে। তারপর গরম গরম পরিবেশন করুন বিরিয়ানি। 

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @