No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    সাইকেলে চেপে হিমালয় যাত্রা জ্যোতিষ্কের

    সাইকেলে চেপে হিমালয় যাত্রা জ্যোতিষ্কের

    Story image

    বাংলার রেনেসাঁর আর্বিভাব বাঙালিকে প্রেরণা দিয়েছিল ঘর থেকে বেরিয়ে দুনিয়াটাকে জানা-বোঝার। কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘থাকবো নাকো বদ্ধ করে দেখবো এবার জগত্টাকে।’ কবির এই দুটি লাইন নতুন অভিযানের প্রেরণাকেই তুলে ধরে। এই সময় থেকে বাঙালিরা দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া শুরু করে। শুরু হয় সাইকেলে চেপে রামনাথ বিশ্বাস, বিমল মুখার্জী, বিমল দে-র মতো মানুষদের বিশ্বভ্রমণ যাত্রা। তাঁদের লেখা ভ্রমণবৃত্তান্ত অনুপ্রেরণা জাগায় আরও মানুষের মনে। এই পথেরই পথিক হয়েছেন বাংলার ছেলে জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস। তবে তাঁর যাত্রা শুধুই ভ্রমণ নয়। মানুষের কাছে প্রকৃতিচেতনা ছড়ানোই তাঁর প্রধান লক্ষ্য।

     

    বিশ্ব আজ ক্রমে উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। তার সঙ্গে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে দূষণ। বনাঞ্চল ধ্বংস করে তৈরি হচ্ছে শহর। এরফলে ক্রমে পৃথিবী ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে। এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দরকার মানুষের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা। তাই প্রকৃতিপ্রেমিক জ্যোতিষ্ক প্রকৃতিকে রক্ষা করতে এবং ভারতবর্ষের মানুষকে এর সম্পর্কে সচেতন করতে শুরু করেছেন যাত্রা। এই যাত্রাপথের বাহন সাইকেল। সাইকেল এমন একটি পরিবহন যা পরিবেশকে নষ্ট করে না। তাঁর এই উদ্দেশ্য সফল করতে এগিয়ে এসেছে ‘কলকাতা ভিজ্যুয়াল’ এবং ‘ইমপ্রেশন’-এর মতো প্রতিষ্ঠান। জ্যোতিষ্কের যাত্রা শুরু হবে ভারতের উত্তর-পূর্ব হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল এবং এই অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা হিমালয়ের পর্বতমালার দিকে। এই যাত্রাপথে জ্যোতিষ্ক স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবেন। তাঁদের পরিবেশ গুরুত্ব ও রক্ষা করার প্রয়োজনীতা সম্পর্কে সচেতন করবেন। কীভাবে নতুন গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল বৃদ্ধি করতে হবে সেই সম্পর্কে জানাবেন তিনি।

    জ্যোতিষ্ক প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখেছেন তাঁর বাবা-মার কাছ থেকে। জ্যোতিষ্কের বাবা কর্মসূত্রে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন। জ্যোতিষ্কের ছোটবেলা কেটেছে অরুণাচল প্রদেশের সবুজ মনোরম প্রকৃতির বুকে। তারপর কোচবিহারে। মা তাঁকে সব সময় শিখিয়েছেন, কীভাবে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হয়। কিন্তু তাঁর জীবনের নতুন দিক দর্শন করালেন চন্দন বিশ্বাস, যিনি সাইকেলে করে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন লাদাখ। এর মধ্যে সংবাদে প্রকাশিত হল, ভারতের দূষণের মাত্রা দিনে দিনে বাড়ছে। প্লাস্টিকের সথেচ্ছ ব্যবহার, গাছ কাটার ফলে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাছে। এমন অবস্থায় ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের মাস কমিউনিকেশন ও জার্নালিজমের ছাত্র জ্যোতিষ্ক ঠিক করলেন প্রকৃতিকে রক্ষা করতে তাঁরও এগিয়ে আসা উচিত। এই উদ্দেশ্যে ২০১৭তে তাঁর প্রথম যাত্রা কলকাতা থেকে অরুণাচল প্রদেশ। সাইকেলে করে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মানুষকে বোঝালেন প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে, গাছ না-কাটতে, নতুন গাছ লাগাতে।

    আজ সারা বিশ্বজুড়ে চলছে প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতনামূলক কর্মকাণ্ড। ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পরিবহনের জন্য ব্যবহার করেন সাইকেল। কানাডার প্রধানমন্ত্রীও যাতাযাতের জন্য ব্যবহার করছেন সাইকেল। প্রকৃতির রক্ষার জন্য জ্যোতিষ্কের এই তাগিদ প্রশংসনীয়। তাঁর এই উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন মায়া আর্টপ্রেসের মধুছন্দা সেন, সবুজসাথী বাপী গ্রিন টাক্সি ও বিশিষ্ট ব্যক্তি দেবদত্ত গুপ্ত। জ্যোতিষ্কের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @