No Image

   

00:00
00:00
Volume

 0 Songs

    ছায়ানটের ‘শিকড়’ ও ‘নালন্দা’য় গর্বিত বাঙালি

    ছায়ানটের ‘শিকড়’ ও ‘নালন্দা’য় গর্বিত বাঙালি

    Story image

    “ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা”- মাটিকে মাথায় তুলে নেবার আহ্বান, মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা আর শিকড় থেকে একটুও সরে না যাওয়ার আহ্বান; এই সবটা দিয়েই আলো চেনার মন্ত্র শেখাচ্ছেন ছায়ানট। এমনই এক আলো যা মাতিয়ে দিতে পারে চির-শৈশবের জীবন। আগের পর্বে ছায়ানট সংস্থার আলোচনায় ব্যাখ্যা করা গেছে কীভাবে এই প্রয়াস সারা বাংলাদেশ ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অভিনবত্বই বা কী! ছায়ানট সংস্থার অন্যতম প্রধান দুই শাখা হল নালন্দা এবং শিকড়। আজকের কথা তাদের নিয়েই। 

    যা কিছু কঠিন অথবা ধারালো, সব তুচ্ছ হোক - তুচ্ছ হোক - তুচ্ছ হোক...

    নালন্দা একটি সংস্কৃতি-সমন্বিত সাধারণ শিক্ষার বিদ্যালয়। যথার্থ শিক্ষায় সমৃদ্ধ মানুষ দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, নীতি ও মানবতাবোধের সম্মিলন ঘটিয়ে স্বাধীন সত্তা বিকাশে পারঙ্গম হতে পারে। বাংলাদেশে সংস্কৃতি সমৃদ্ধ ও সুশিক্ষাসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলবার ইচ্ছায় এমনই এক শিক্ষা কার্যক্রম করেছে। নালন্দার লক্ষ্য শিশু-মনের সাংস্কৃতিক বিকাশ এবং বিচার বোধ উস্কে দেওয়ার দায়িত্ব পালন। শিশুদের মনে প্রকৃতি ও মানবপ্রেমের আনন্দযোগসহ বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্মিলনের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয় নালন্দা। বিভিন্ন দেশের প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি থেকে প্রতিষ্ঠিত, আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপযুক্ত দিকগুলো পর্যালোচনা এবং বাঙালি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধে সেগুলো জারিত করে নালন্দার পাঠ্যক্রম নির্ধারণ করা হয়েছে। গতানুগতিক সিলেবাসভিত্তিক আর পরীক্ষাকেন্দ্রিক শ্রেণিশিক্ষা ধারার বাইরে গিয়ে অনুসৃত হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা। শিশুর আগ্রহ আনন্দাভিমুখী হোক এই বিবেচনায় সৃজিত হয়েছে উপযোগী এক শিক্ষা-দর্শন। আঁকা, গল্প, কবিতা, নাটক, নৃত্য, সঙ্গীত, খেলা, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতাসঞ্চয় ও যুক্তি-তর্ক-গল্পের সমন্বয়ে আবর্তিত এর পাঠ ও অনুশীলন। শিশুদের নিয়ে কাজ করছে এমন দর্শনে সমস্ত পূর্ব-ধারণাকে প্রশ্ন করতে সক্ষম এক কর্মীবাহিনী। নিরন্তর প্রশিক্ষণ, অধ্যয়ন ও চর্চায় প্রাণিত করে যোগ্য কর্মী গড়ে তোলার কাজ করে চলেছে নালন্দা। ২০০৩ সালে তিনটি শ্রেণি নিয়ে শুরু হয় নালন্দার যাত্রা। ২০১২ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পাঠ দেওয়া হচ্ছে। 

    এ মাটির টান বড় অদ্ভুত, হাজারে হাজারে পাখি উড়ে আসে শুধু...

    সাধারণভাবে প্রচলিত স্কুলশিক্ষার সীমাবদ্ধতা এবং গণ্ডিবদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থার ঘাটতি পূরণ করার দায়িত্ব নিয়েই চলছে শিকড়। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিশুর সামনে তার মন ও মননের প্রয়োজনীয় রসদ উপস্থিত করার লক্ষ্য। দেশে মানবিক মূল্যবোধের সাম্প্রতিক অবক্ষয় এবং বিপর্যস্ত আবহের মধ্যে শিশুদের সচেতন ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। শিশু-কিশোরদের সামূহিক বিকাশ ঘটাতে ‘শিকড়’ এক বিকল্প শিক্ষাকর্ষণ। দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ কিংবা দেশমাতৃকার সৌন্দর্য ও মাহাত্ম্য হৃদয়ে ধারণ করে শিশুরা যেন কৃতি ‘বিশ্বমানব’ হয়ে ওঠার সন্ধান পায়। সেই লক্ষ্যে কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ছড়া, আবৃত্তি, ব্রতচারী, গল্প বলা, অভিনয়, লিখন-পঠন আর ভ্রমণ। পাঠ ও চর্চার অন্তর্ভুক্ত –দেশ, ঐতিহ্য, প্রকৃতি-পরিবেশ, উৎসব-পার্বণ, আলোকচিত্র-চলচ্চিত্র, মনীষী-কথা, বাঙালির খাদ্যরুচি ইত্যাদি। কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা ৬ থেকে ১৩ বছর।

     

    বঙ্গদর্শনের সপ্তাহের বাছাই করা ফিচার আপনার ইনবক্সে পেতে

    @