চড়ক ঘোরার আয়োজন হয় চড়ক ডাঙায়

পয়লা বৈশাখ এলো। ওপারে রেখে এলো মাস চৈত্রের আগুন রেখা। সন্ন্যাসীরা ঝাঁপান দিলে চড়ক করে। বাবা তারকনাথের চরণে সেবা লাগে। গাজন মেলা বসে গ্রামে নগরের চৌহুদ্দিতে। আমরা আর মনে রাখিনি যে গা মানে গ্রাম আর জন মানে হল জন মণ্ডলী।

চৈত্র সংক্রান্তিতে নীল পুজোর দিন থেকে বসে গাজনের মেলা। পুরাণে আছে চড়ক পার্বণের কথা। কলকাতার উত্তর পাটে চড়ক ঘোরার আয়োজন হত চড়ক ডাঙায়। ওই অঞ্চলটি এখন জোড়া বাগানের গায়ে। সেখানে চড়ক হয় না কিন্তু চড়ক হয় আজও ছাতু বাবুর বাজার মানে ওই বিডন স্ট্রিট ডাক ঘরের পাশে।

সেখানে মেলাও বসে। আনা হয় চড়ক গাছ। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন পুকুর থেকে সেটি তুলে এনে বসানো হয় চড়ক তলায়। তার পর শুরু হয় ঘোরা।

কিন্তু এমন উৎসবের মধ্যে আছে এক ধরনের বীভৎসতা। গায় বড়শি গেঁথে ঘোরা, বঁটি ঝাঁপ দেওয়া, আগুনে হাঁটা এগুলিই ছিল চড়কের অঙ্গ। ১৮৬৩ তে গোল বাঁধল চড়ক নিয়ে।

স্যার সিসিল বিডন আইন করে বন্ধ করে দিলেন এমন উৎসব। স্বদেশি যুগে বিপ্লবীরা বলতে লাগলেন এমন আইন মানি না। চলবে চড়ক। আসলে আত্মত্যাগ, সাহস, বীভৎসতার আর আঘাত সহ্য করার এক অমোঘ বানী অন্ত্যজ সমাজ থেকে উঠে আসা পুজো রীতিতেই খুঁজে পেয়েছিল সেদিনের অগ্নি যুগের তরুণ সমাজ।

সেই চড়কের মেলা আজ যেখানে বসে তার ওপর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটার নাম সিসিল বিডনের নামে পরিচিত বিডন স্ট্রিট। বলতে গেলে তার ওপরেই রাজ করে চড়কের মেলা আজও।